১৫ ও ১৬ জুন দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত জাসদ ও সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে বিশিষ্ট লেখক ও প্রাবন্ধিক মোরশেদ শফিউল হাসানের দুই পর্বের লেখাটি সময়োপযোগী হয়েছে। সত্য যে গত শতাব্দীর ষাট-সত্তর এ দুই দশকজুড়ে ছাত্র-তরুণদের কাছে, সিরাজুল আলম খান ছিলেন একটি রহস্যঘেরা সম্মোহনী চরিত্র। যাঁর সম্পর্কে চাউর হয়েছে বেশি, জানা গেছে কম।
সম্পদ, পদ ও আত্মপ্রচারে বিমুখ অসাধারণ এ বাঙালি চরিত্রকে ঘিরে জনমানসের বিস্তর কৌতূহল, বেশ দক্ষতায় নিবৃত্ত করতে সচেষ্ট প্রয়াস চালিয়েছেন ‘প্রতিনায়ক-সিরাজুল আলম খান’ (প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত) বইটির লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ।
বলা যায়, বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, পুস্তক, নথি এবং জানা–অজানা তথ্যের যাচাই-বাছাই, বিশ্লেষণ, নিরীক্ষার মাধ্যমে শ্রমসাধ্য নিরলস, নির্মোহ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন লেখক। মোরশেদ সফিউল হাসানের দুই কিস্তির লেখার সঙ্গে মহিউদ্দিন আহমেদ রচিত পুস্তকে পরিবেশিত তথ্যের খুব একটা গরমিল চোখে পড়েনি। চমৎকৃত হয়েছি শেষে এসে এবং প্রশ্নটি মোটেও অগ্রাহ্য করার মতো নয়। গুরু সিরাজুল আলম খানকে দায়মুক্তি দেওয়ার একটা সূক্ষ্ম ও সচেতন প্রয়াস মহিউদ্দিন আহমেদ রচিত পুস্তকে উপস্থিত কি না? একাধিকবার পুস্তকটির আদ্যোপান্ত পাঠক হিসেবে এ প্রশ্ন উঁকি দিয়েছিল আমার মনেও।
তবু অন্ধকারে পড়ে থাকা ইতিহাসের একটি অজানা অধ্যায়কে মহিউদ্দিন আহমেদ আলোয় নিয়ে এসেছেন অসাধারণ সৃষ্টিশীল নৈপুণ্যে। মোরশেদ সফিউল হাসান প্রখর বীক্ষণের ছাঁকনি ফেলে তুলে এনেছেন নির্যাস, শেষে প্রশ্ন। অন্ধকারে আলো জ্বলার পরে ‘পরিচয় ও প্রশ্ন’ থাকলে চেনাজানার গণ্ডি প্রসারিত হবে। দুজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
শাহজাহান কাঞ্চন
বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি
আদাবর, ঢাকা- ১২০৭