যেভাবে তৈরি হতো আকবর আলি খানের বইয়ের পাণ্ডুলিপি

২০০৮ সাল থেকে শারীরিকভাবে অসমর্থ ছিলেন আকবর আলি খান। সহায়তা ছাড়া বই লেখা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। বাংলায় তাঁর লেখা শেষ আটটি বইয়ের প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন। প্রতিটি বই–ই শ্রুতলিখনের ভিত্তিতে রচিত। আর এ কাজে সহায়তা করেছেন প্রথম আলোর কর্মী মো. শহিদুল ইসলাম। আকবর আলি খান প্রতিটি বইয়ের ভূমিকায় মো. শহিদুল ইসলামের কথা লিখেছেন, ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার জন্য অনেক কাছ থেকে আকবর আলি খানকে দেখেছেন তিনি। এই লেখা সেই সময়েরই স্মৃতিকথা।

আকবর আলি খান (১৯৪৪—২০২২)
ছবি: জাহিদুল করিম

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের কোনো একদিন আমাদের বিভাগীয় প্রধান আমাকে বললেন, মতি ভাইয়ের নির্দেশ—একজন ভালো মানের কম্পিউটার অপারেটরকে আকবর আলি খানের বাসায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে হবে। তাই আমাকে তিনি আকবর আলি খানের বাসায় পাঠালেন। আমি আর দ্বিমত করলাম না। কারণ, একদিকে মতি ভাইয়ের নির্দেশ, অন্যদিকে একজন ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করার লোভ।

আমি প্রথমার সাবেক কর্মকর্তা জাফর আহমেদ রাশেদ ভাইয়ের কাছ থেকে আকবর আলি খানের বাসার ঠিকানা নিয়ে চলে যাই তাঁর গুলশানের বাসায়। তাঁর বাসায় গিয়ে কলিং বেল চাপতেই একজন দরজা খুলে দিলেন। পরিচয় দেওয়ার পরে আমাকে লাইব্রেরি রুমে বসতে দিয়ে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আকবর আলি খান স্যার এলেন। তিনি আমার পরিচয় জেনে নিলেন। আমার জন্য চা-নাশতার ব্যবস্থা করা হলো। আমি স্যারের সঙ্গেই চা-নাশতা করলাম। স্যার কখনো আমার জন্য আলাদা প্লেটে নাশতা আনতেন না। একই প্লেটে নাশতা আসত। সেখান থেকেই দুজনে নাশতা করতাম। ঠিক তখনই বুঝে গিয়েছিলাম যে তিনি কত বড় হৃদয়বান, মহৎ মানুষ। তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এভাবেই একসঙ্গে চা-নাশতা করেছি।

একদিন স্যার আমার সঙ্গে গল্প করছিলেন। স্যার বললেন, শহিদ আমি যখন রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলাম তখন কোরবানির ঈদে আমার বাসায় বিভিন্ন ব্যক্তি গরুর রান পাঠিয়ে দিত। কিন্তু আমার স্ত্রী এসব পছন্দ করতেন না। তিনি কোনো দিন এসব উপঢৌকন গ্রহণ করেননি। ফিরিয়ে দিতেন। আমার স্ত্রীর জন্যই আজ আমি একজন সৎ মানুষ হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারি।

এরপর আমি সেখানে কীভাবে কাজ করব, কী ধরনের কাজ করব আমাকে বুঝিয়ে দিলেন। বললেন, এখন পর্যন্ত আমার বইয়ের পাণ্ডুলিপি আমি নিজেই তৈরি করেছি। কিন্তু এখন আমি শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছি, কাজ করতে কষ্ট হয়। তাই আপনার সাহায্য নিতে হচ্ছে। আমি বলব, আপনি কম্পিউটারে টাইপ করবেন।

এভাবেই শুরু করলাম স্যারের সঙ্গে তাঁর বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরির কাজ। স্যার যখন মুখে বলা শুরু করতেন, তখন আমি টাইপ করে তাঁর সঙ্গে সমন্বয় করতে পারতাম না। তিনি একাধারে চোখ বন্ধ করে বলতে থাকতেন। আমি মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলতাম। তখন স্যারকে বলতাম স্যার আমি তো পেছনে পড়ে গেছি, আপনি আরেকবার বলুন। এতে স্যার কখনো বিরক্ত হতেন না। কোনো দিন কাজের জন্য আমাকে তিনি একটিবারের জন্যও কোনো কটু কথা বলেননি। শুধু আমাকে কেন তাঁর বাসার সহকারী ও গাড়ির ড্রাইভারের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করতে দেখিনি। স্যারের সঙ্গে আমি কাজ করতাম সপ্তাহে তিন দিন। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করে স্যারকে প্রিন্ট করে দিয়ে আসতাম। স্যার রাতের বেলা সেগুলো পড়ে কোথাও কোনো ভুল থাকলে সেটি সংশোধন করে রাখতেন। আমি পরের দিন গিয়ে কারেকশন করে নতুন করে শুরু করতাম। লেখাগুলো পড়ে শোনাতাম। স্যার মনোযোগসহকারে শুনতেন। কোথাও কোনো সংশোধন বা সংযোজন প্রয়োজন হলে তিনি আমাকে বলতেন, অমুক প্যারায় অত নম্বর লাইনে সংশোধন করেন। আমি সংশোধন করে দিতাম। এভাবেই স্যারের সঙ্গে দীর্ঘ সাতটি বছর কাজ করেছি।

কোনো দিন যদি স্যারের বাসার বাইরে কাজ থাকত, তাহলে তিনি আমাকে আগের রাতে জানিয়ে দিতেন যে শহীদ আগামীকাল আমার কাজ আছে আপনার আসার দরকার নেই।

মো. শহিদুল ইসলাম

এভাবেই চলছিল স্যারের জন৵ আমার বই লেখার কাজ। সকাল সাড়ে ৯টা বা ১০টার মধ্যেই আমরা কাজ শুরু করতাম। বেলা ১১টায় ১৫ মিনিটের জন্য চা–বিরতি। চা খেতে খেতে স্যার মাঝেমধ্যে একটু গল্প করতেন। স্যারকে যেকোনো বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি আন্তরিকভাবে উত্তর দিতেন। এভাবেই স্যারের সঙ্গে আমার আন্তরিকতা বাড়তে থাকে।
একদিন স্যার আমার সঙ্গে গল্প করছিলেন। স্যার বললেন, শহিদ আমি যখন রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলাম তখন কোরবানির ঈদে আমার বাসায় বিভিন্ন ব্যক্তি গরুর রান পাঠিয়ে দিত। কিন্তু আমার স্ত্রী এসব পছন্দ করতেন না। তিনি কোনো দিন এসব উপঢৌকন গ্রহণ করেননি। ফিরিয়ে দিতেন। আমার স্ত্রীর জন্যই আজ আমি একজন সৎ মানুষ হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারি।

আরেক দিন চা খেতে খেতে স্যার বলেছিলেন, শহিদ আমি কিন্তু বই টাকার জন্য লিখি না। বই লিখে আমার কিন্তু খুব বেশি আয় হয় না। আমি আগামী প্রজন্মের জন্য কিছু রেখে যেতে চাই। যা আমার মৃত্যুর পর পাঠক আমাকে স্মরণ করবে। এটাই আমার জীবনের পাওয়া।

চা খেতে খেতে একদিন আমি স্যারকে জিজ্ঞেস করি, স্যার আপনি তো মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারে থেকে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। পরে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। অনেক গবেষণা করেছেন, সরকারকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সে হিসেবে তো কোনো সরকারই আপনাকে কোনো জাতীয় পুরস্কার দেয়নি। উত্তরে স্যার বললেন, কোনো সরকার আমাকে যোগ্য মনে করেনি, তাই কোনো পুরস্কার দেয়নি। আর আমার পুরস্কারের কোনো প্রয়োজনও নেই। আমি জীবনে মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। আরও অনেক কথাই হতো স্যারের সঙ্গে, সেগুলো আর বিস্তারিত লিখতে পারলাম না।

স্যার বললেন, ভবিষ্যতে আমি তিনটি বই লিখব। একসঙ্গে দুটি বই লেখা শুরু করব। একটি হলো বাংলাদেশের ইতিহাস, আরেকটি আত্মজীবনী ২য় খণ্ড। আর তৃতীয় বইটি পানিসম্পদ নিয়ে। ২য় খণ্ডে তিনি বিভিন্ন সরকারের সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অবস্থায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির দুর্নীতি নিয়ে লেখার ইচ্ছে ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁর কী ধরনের সমস্যা হয়েছিল, কেন তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করলেন, সে সম্পর্কে লেখার ইচ্ছা ছিল।

স্যারের জীবনের অনেক গল্প তিনি আমাকে শুনিয়েছেন, যা পরে তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন। আমি কাজ শুরু করি তাঁর লেখা ‘অবাক বাংলাদেশ: বিচিত্র ছলনাজালে রাজনীতি’ বইটি দিয়ে। এই বই লেখার সময় তাঁর জীবনে একটি বড় ধরনের দুঃসময় আসে। একদিন সকালবেলা কাজ করার জন্য স্যারের বাসায় উপস্থিত হই। ভেতরে প্রবেশ করতেই বাড়িতে অনেক লোকজন দেখতে পেলাম। স্যারের ড্রাইভার ফারুক এগিয়ে এসে আমাকে বললেন, শহিদ ভাই আমাদের বড় একটা ক্ষতি হয়ে গেছে। আমি বললাম কী হয়েছে? উত্তরে সে বলল আমাদের আপা (স্যারের একমাত্র মেয়ে) হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। আপনি আজকে চলে যান। স্যার ভেতরের রুমে আছেন। আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। আমি বেরিয়ে এলাম। স্যার কখনো তার মেয়েকে নাম ধরে ডাকেননি। ‘মা’ বলে সম্বোধন করতেন। প্রতিদিন স্যারের মেয়ে ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নিতে যাওয়ার আগে স্যারকে বলে যেতেন। স্যার মেয়েকে খুবই ভালোবাসতেন। তাঁর জীবনে এর চেয়ে ক্ষতি আর কোনোটি হয়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়নি।

কয়েক দিন পর আমি স্যারকে ফোন করলাম। ফোনে স্যারকে সালাম দিয়ে বললাম স্যার আমি সেদিন বাসায় গিয়েছিলাম, আমি সব শুনেছি। স্যার বলল শহিদ এটাই আমার নিয়তি। আপনি দুদিন পরে আসেন। আমি ঠিক দুদিন পরেই স্যারের বাসায় গেলাম। পুনরায় কাজ শুরু করলাম।

২০১৭ সালে স্যারের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর স্যার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কিন্তু তিনি তাঁর বই লেখার মনোবল হারাননি। এভাবেই ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্যারের ‘আত্মজীবন: পুরানো সেই দিনের কথা’ প্রকাশিত হওয়ার পর স্যার আমাকে বললেন, শহিদ আমি বাসা পরিবর্তন করে পরে কাজ শুরু করব। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, স্যার আপনার পরবর্তী বইগুলো কোন বিষয় নিয়ে লিখবেন? স্যার বললেন, ভবিষ্যতে আমি তিনটি বই লিখব। একসঙ্গে দুটি বই লেখা শুরু করব। একটি হলো বাংলাদেশের ইতিহাস, আরেকটি আত্মজীবনী ২য় খণ্ড। আর তৃতীয় বইটি পানিসম্পদ নিয়ে। বাংলাদেশের ইতিহাস প্রকাশিত হওয়ার পর আত্মজীবনী ২য় খণ্ড পাণ্ডুলিপি প্রথমা প্রকাশনের কাছে জমা দেবেন। ২য় খণ্ডে তিনি বিভিন্ন সরকারের সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অবস্থায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির দুর্নীতি নিয়ে লেখার ইচ্ছে ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁর কী ধরনের সমস্যা হয়েছিল, কেন তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করলেন, সে সম্পর্কে লেখার ইচ্ছা ছিল।

পুরানো সেই দিনের কথা– আকবর আলি খান

একদিন আমি আবার বাসায় ছিলাম। মনটা খুব খারাপ। সেদিন আমাদের মিজানুর রহমান খান মারা গেছেন। হঠাৎ দেখি স্যারের ফোন। আমি সালাম দিলাম। স্যার বললেন, শহিদ আপনি আগামীকাল আসবেন না। মিজান মারা যাওয়ায় আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আগামীকাল আমি কাজ করব না।

৮–৯ মাস পরিশ্রমের পর একটি বই যখন প্রকাশিত হতো তখন স্যার বলতেন, শহিদ শেষ পর্যন্ত বইটি লিখে শেষ করতে পারলাম। স্যারকে তখন বেশ খুশি দেখাত। স্যারের প্রতিটি বইয়ের ভূমিকায় আমার নাম লিখেছেন। বই প্রকাশের পর স্যারের স্বাক্ষরিত একটি বই প্যাকেটে করে আমাকে উপহার দিতেন। সঙ্গে একটি খামে করে কিছু টাকাও দিতেন। বলতেন শহিদ আপনার পরিবারকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য আমার এই উপহার।

স্যারের আত্মজীবনী লেখা চলার সময় আমি হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। চিকিৎসা চলার সময়ে স্যার আমার নিয়মিত খোঁজখবর রাখতেন। আমি যখন সুস্থ হয়ে স্যারের বাসায় পুনরায় কাজ করার জন্য যাই, সেদিন স্যার একটি খামে আমাকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বললেন, শহিদ আপনি এই টাকা দিয়ে ফলমূল কিনে খাবেন। আর বললেন, আমার স্ত্রীর বড় ভাই আমেরিকায় হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ ড. এহসানুল হক এরই মধ্যে বাংলাদেশে আসবেন। তিনি এলে আপনার কাগজপত্র নিয়ে আসবেন, আমি দেখানোর ব্যবস্থা করে দেব। স্যারের মাধ্যমেই ড. এহসানুল হক সাহেব আমার কাগজপত্র দেখেন এবং আমাকে বললেন আপনার হার্টের তেমন কোনো বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। ওষুধ খেয়ে যাবেন নিয়মিত।

মাঝেমধ্যেই কাজের প্রয়োজনে আমি স্যারকে ফোন করতাম। স্যার ফোন ধরে বলতেন, শহিদ আপনার শরীর ভালো আছে? আপনার স্ত্রী-সন্তানেরা কেমন আছে? এরপর অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলতেন।

আগস্ট মাসের ৪ তারিখে স্যারের সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয়। রবীন্দ্রনাথের বইয়ের পুনর্মুদ্রণের জন্য কিছু সংযোজন করেছিলেন। সেদিন স্যার আমাকে বললেন, শহিদ আমি এ সপ্তাহেই নতুন বাসায় উঠব। আগামী মাসের শেষে আমরা আবার কাজ শুরু করব। প্রয়োজনীয় কথা সেরে স্যারের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। গত ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ স্যারের কথা মনে হলো। রাত ৯টা সাড়ে ৯টা হবে। আমি স্যারকে ফোন করি। সালাম জানাতেই ওপ্রান্ত থেকে বলা হলো আমি কবিরউদ্দিন খান (স্যারের ছোট ভাই)। শহিদ আপনার স্যারকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি, একটু কাশি হয়েছে। এটুকু বলেই লাইনটা কেটে দিলেন।

এরপর ৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই। বাসায় পৌঁছাতে রাত প্রায় রাত ৯টা বেজে যায়। আমি ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল সেরে ঘরে বসেছিলাম। রাত ১০টা ২০ মিনিটে আমার মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে। দেখি স্ক্রিনে স্যারের নাম ভেসে উঠেছে। ভাবলাম স্যার হয়তো বলবে শহিদ আমরা আগামী শনিবার থেকে কাজ শুরু করব। আপনি চলে আসবেন। কলটি রিসিভ করে সালাম দিলাম। কিন্তু ও প্রান্ত থেকে বললেন, শহিদ আমি কবিরউদ্দিন খান (স্যারের ছোট ভাই)। আপনার স্যার আর নেই। তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। আপনি আপনার অফিসকে খবরটি পৌঁছে দেন। আমি হতভম্ব হয়ে বসে থাকি। স্যারের জন্য খুবই কষ্ট হচ্ছিল। কান্না পাচ্ছিল। পরে অফিসকে জানালাম। আমার স্যার আর পৃথিবীতে নেই, তিনি ইন্তেকাল করেছেন। আমি যত দিন বেঁচে থাকব স্যারের জন্য দোয়া করব। আল্লাহ যেন তাঁকে বেহেশতবাসী করেন।