এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে পরীক্ষার্থীদের কর্মসূচি
এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে পরীক্ষার্থীদের কর্মসূচি

এই এইচএসসি পরীক্ষা শিক্ষিত বেকার আরও বাড়াবে

এইচএসসি বা সমমান একটা শিক্ষার্থীর জীবনের সর্বশেষ বোর্ড পরীক্ষা। একজন শিক্ষার্থী পিইসি, জেএসসি, এসএসসি দেওয়ার পর সর্বশেষ এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এই শেষ পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে তার পরবর্তী শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের নিশ্চয়তা।

কাজেই যথাযথ প্রস্তুতির অভাবে এইচএসসিতে কোনো শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক হবে না। ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী আর জিপিএ ফাইভ পায় ৯৬০০০। বাকি শিক্ষার্থীদের অনেকের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এইচএসসি ২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির ১ম সপ্তাহে। এরপর ২০২৪ এর প্রথম সপ্তাহে হয় টেস্ট পরীক্ষা। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময় পাওয়া ব্যাচ এটি। প্রতিটি পরীক্ষা নিতে কলেজ অন্তত ১ মাস সময় নেয়। ওই সময় নতুন কিছু পড়াও যায় না। প্রতিটা কলেজে অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক, প্রিটেস্ট, টেস্ট এসবের পিছে অনেক সময় চলে যায়। তারপর নিয়মিত প্র্যাক্টিকেল করা, ক্লাস টেস্ট এই সব করে অনেক সময় চলে যায়।

দুঃখের বিষয় সরকারি কলেজগুলোর কোনো জবাবদিহি না থাকার কারণে তারা শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি যাচাই না করে একের পর এক পরীক্ষা নিয়ে চলেছে। এই ছাড়া দুই ঈদ, দুর্গাপূজাসহ নানা ছুটির কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে না কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে করে শিক্ষার্থীদের সময় নষ্ট হয় অনেক। একজন শিক্ষার্থী দুই বছর করোনার কারণে নবম-দশম শ্রেণি থেকে বঞ্চিত হয়। কলেজে উঠে কীভাবে পড়বে, কোন স্যার, কোন বই, এই সব করতেই অনেক সময় চলে যায়।

কলেজের একের পর এক পরীক্ষার কারণে আর গুছানো সম্ভব হয় না। শিক্ষার্থীরা চরম মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। পরীক্ষা অন্তত ১ মাস পেছানো উচিত। তা না হলে শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ ফলাফল করতে পারবে না। পাশাপাশি শিক্ষিত বেকার বাড়বে। এইচএসসি শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো মাথাব্যথা নেই। কোনো বিবৃতি নেই। স্বাধীনতার আগে বা পরে সংবাদমাধ্যম দেশের যে কোনো সমস্যা-সংকটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। সংবাদমাধ্যমগুলো অনুসন্ধান করে দেখুক ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী চায় পরীক্ষা পেছানো হোক। তাদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে দেখুক। ১৮-১৯ বছরের বয়সটা জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়। তাদের প্রতি এমন অবিচার কোনোভাবেই মানা যায় না। আর কোনো দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ রকম উদাসীনতার নজির নেই। প্রয়োজনে ভর্তি পরীক্ষার থেকে ১ মাস সময় কমিয়ে দিক তাও বোর্ড পরীক্ষা পিছিয়ে দিক।

সিয়াম আহমেদ
রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ
ঢাকা