টিউশনি করিয়ে জীবনের প্রথম টাকা আয় করলাম। ভাবলাম, আম্মুকে কিছু একটা উপহার দিব। ঢাকায় ভালোমানের ডায়াবেটিস মাপার মেশিন পাওয়া যায়। তাই গত ৮ নভেম্বর বিকেলে আমি ৩৭০০ টাকা দিয়ে একটি ভালো মানের ডায়াবেটিস মাপার মেশিন কিনি এবং সন্ধ্যায় দেশের শীর্ষ একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মোতালেব প্লাজার শাখা থেকে হলুদ পলিব্যাগের মাধ্যমে অত্যন্ত যত্ন সহকারে গাইবান্ধায় আমার আম্মুর কাছে পাঠাই।
পরের দিন ফোন দিয়ে আম্মুর থেকে জানতে পারলাম যে, নতুন সেই মেশিনের প্যাকেট নাকি ছেঁড়া! অতিরিক্ত যে এক বাক্স স্ট্রাইপ দিয়েছিলাম সঙ্গে, ছোট্ট বাক্সটাও নাকি ছেঁড়া ছিল। জীবনের প্রথম আয় দিয়ে একটি ছেঁড়াফাটা জিনিস আম্মুর কাছে চলে গেল!
আমরা যখন প্রিয়জনের নিকট কোনো কিছু পাঠাই, কুরিয়ার সার্ভিসের লোকদের কাছে সেটি পণ্য হতে পারে, কিন্তু আমাদের কাছে সেটি নিছক পণ্য না,অনেক সময় সেটি এক আবেগের নাম। হয়তো আমার পাঠানো এই জিনিসটার দাম কম, কিন্তু এটি ছিল নিজ শ্রমে উপার্জন করা টাকায় কেনা আম্মুর জন্য আমার প্রথম উপহার। এর মূল্য তো আমার কাছে কোনো অংশেই কম না।
নিরাপত্তার খাতিরে যদি চেক করার দরকার হতো, তাহলে তারা কেন আগে চেক করলেন না? আমি তো তাদের সামনেই ব্রান্ড নিউ সেই মেশিনটি হলুদ পলিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম, তখন চেক করলে কী হতো? এ রকম ঘটনা শুধু আমার সঙ্গে নয়, প্রতিনিয়ত অনেকের সঙ্গেই ঘটছে বলে জানতে পেরেছি। অনেকের পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়া ও হারিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ আছে। শুধু তাই নয়, খাবার থাকলে সেগুলোও তারা খেয়ে দেখতে কোনো দ্বিধা বোধ করেন না! এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তাসনীম তালুকদার
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়