বর্ষা মৌসুমে দেশের বৃহত্তম বিল চলনবিলে দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এসব দর্শনার্থী ডিঙি ও শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে চলনবিল ঘুরে বেড়ান। চলনবিলের বিভিন্ন পয়েন্টে দর্শনার্থীরা নৌকা থামিয়ে খাবার খেয়ে থাকেন। খাবার শেষে তাঁরা প্লাস্টিকের ‘ওয়ান টাইম প্লেট ও গ্লাস’ পানিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। এসব বর্জ্য পানিতে ভাসতে ভাসতে একসময় শুকনো স্থানে স্তূপ তৈরি করে।
শুধু তাই নয়, চলনবিলের পানি শুকিয়ে গেলে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য, বিস্কুট-চিপসের প্যাকেট, কোমলপানীয়র বোতল, পলিথিন কৃষিজমিতে জড়ো হয়। আমরা জানি, প্লাস্টিক মাটির সঙ্গে সহজে মিশে না। বর্ষা মৌসুমে নিক্ষেপিত প্লাস্টিক দ্রব্য শুকনো মৌসুমে জমি চাষাবাদে যেমন মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টির করে, তেমনি চলনবিলের পরিবেশকেও প্রবলভাবে নষ্ট করে।
চলনবিলের উদ্ভিদ, মাছ, শামুক, কাঁকড়া, সাপ, পাখিসহ চলন বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় যেসব উপাদান ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তা এই উচ্ছিষ্ট প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ইদানীং। চলনবিলের কৃষি ও পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু যারা পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সচেতন নন, তাদের সচেতন করবে কে?
চলনবিলের সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দর্শনার্থীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। প্লাস্টিক বর্জ্য যাতে যত্রতত্র না ফেলা হয় হয়, নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় ও পরবর্তীতে তা পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হোক। স্থানীয় প্রশাসন পরিবেশবান্ধব হলে, তাদের পক্ষে এটি করা সম্ভব।
মোহাম্মদ অংকন
সরকারি চাকরিজীবী
সিংড়া, নাটোর