বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাড়াতাড়ি বাজারে আম তোলার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণ করেন।
বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাড়াতাড়ি বাজারে আম তোলার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণ করেন।

আম কিনতে গিয়ে ঝুড়ি ভরে বিষ কিনছেন নাতো!

আমের মৌসুম চলছে। পরিমাণে অল্প হলেও বাজারে উঠতে শুরু করেছে পাকা আম। আর কিছুদিন পর পুরোপুরিভাবে পাকা আমের বাজার লেগে যাবে। ফলের রাজা আম। বাংলাদেশ ও ভারতে যে প্রজাতির আম চাষ হয়, তার বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica

আমের বিভিন্ন জাতের মধ্যে আমরা মূলত ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি/হিমসাগর, আম্রপালি, মল্লিকা, আড়া জাম, কাঁচামিঠা, সুবর্ণরেখা, মিছরিদানা, নীলাম্বরী, কালীভোগ, অরুণা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপুরি, কারাবাউ, কেউই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপুরী, পাহুতান, ত্রিফলা ইত্যাদির দেখা পাই।

পাকা আম দেখলেই আমরা ঝুড়ি ভরে কিনে আনি, যা একদমই বোকামি। কেননা হতে পারে আপনি টাকা দিয়ে বিষ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাড়াতাড়ি বাজারে আম তোলার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণ করেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন পাকা আমের গুণ ধরে রাখতে মেডিসিন ব্যবহার করেন। এ কারণে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আম কেনায় সতর্কতা অবলম্বন করুন।

ভেজাল আম চিনবেন যেভাবে
প্রথমেই একটা বিষয় লক্ষণীয়, যে আমের ওপর মাছি বসে, ধরে নেওয়া হয় এই আমগুলো ফরমালিন মুক্ত। কেননা ফরমালিন দিয়ে পাকানো আমে মাছি বসে না। এ ছাড়া আরও কয়েকভাবে ভেজাল আম শনাক্ত করা যায়।

আমের আকার
ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম্রপালি আমের আকার ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আম আকারে ছোট হয়ে থাকে। দোকানদার যতই বলুক মিষ্টি হবে, তবু নিজে যাচাই করে দেখবেন। যদি আকার খুব ছোট মনে হয়, তবে এটি কেনা থেকে বিরত থাকুন।

আমের রং
আমের হলুদ রং দেখে কখনোই নিশ্চিন্ত হয়ে কিনবেন না। কেনার আগে একটু কেটে নিন। যদি আমের গায়ে সবুজ আভা দেখতে পান, তবে ভুলেও এটি কিনবেন না। এটি হতে পারে কার্বাইডের মতো রাসায়নিক পদার্থ। যা দেহের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

আমের গায়ে চাপ দিয়ে দেখুন
আম শুধু রং দেখে অথবা দোকানদারের ওপর বিশ্বাস করে কেনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আম কেনার আগে আমের গায়ে চাপ দিয়ে দেখুন। যদি নরম হয়, তাহলে বুঝবেন এটি প্রাকৃতিকভাবেই পাকানো হয়েছে।


ভেজাল আম খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব কী
ভেজাল আম খাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে। যেমন নাক–মুখ ও গলায় জ্বালাযন্ত্রণা করা, ডায়রিয়া, শরীর দুর্বল অনুভূত হওয়া, বমি হওয়া, বুক ও পেটে জ্বালাপোড়া করা, এমনকি চোখেরও ক্ষতি হতে পারে।

আমের ভেজাল রোধে অসাধু ব্যবসায়ীদের এবং এ ধরনের কাজে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। আমসহ সব ফলের ভেজালের কুফল সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা সভার মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানানো উচিত।

শিশুদের এই ফরমালিনযুক্ত আম অথবা অন্য যেকোনো ফল খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন। নিজে সতর্কতা অবলম্বন করুন, অন্যকে সতর্ক করুন।

মোহাম্মাদ আশিক
শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়