চিঠিপত্র

তারা টিনের চশমা পরে বসে আছেন!

বাংলাদেশে বোধ হয় জন্মগ্রহণ না করলেই ভালো হতো। চরম বিরক্তি নিয়ে কথাটি বলেছিলেন এক বয়স্ক মুরব্বি। তিনি তাঁর নাতির জন্য জন্মনিবন্ধন করতে এসেছিলেন ইউনিয়ন পরিষদে। প্রায় এক মাস তিনি ইউনিয়ন পরিষদে ঘুরছেন।

কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না! নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি প্রতিবারই মুরব্বিকে বলেন, পরে আসেন। সেই পরে আসা আজ এক মাস ধরে। অন্য এক ব্যক্তি নিবন্ধন ফির সঙ্গে হাজার টাকার নোট দিয়ে পরদিনই তাঁর জন্মনিবন্ধন করিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মুরব্বিকে বলেছিলাম, কিছু চা–পানির খরচ দেন তাদের।

হয়তো আপনার জন্মনিবন্ধন করে দেবে তাড়াতাড়ি। মুরব্বি হেসে বললেন, ‘বাবারে, তুমি আমাকে ঘুষ দিতে বলছ? আমি রাষ্ট্রকে ট্যাক্স দিই আর রাষ্ট্র আমাকে তার বিনিময়ে সামান্য জন্মানোর-বেঁচে থাকার অধিকার দেবে না?’

লোকটির কথা শুনে ভাবনায় এল আসলেই তো, রাষ্ট্র আমাকে যদি এই সামান্য জন্মনিবন্ধন করার সুযোগটাই না দিয়ে থাকে, তাহলে কীভাবে রাষ্ট্রের মানুষজন রাষ্ট্রকে ভালোবাসবে?

এ তো শুধু একটা ইউনিয়ন পরিষদের ঘটনা! এমন হাজারো ঘটনা হরহামেশা ঘটে চলেছে আমাদের দেশের অসংখ্য ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে। এসব ইউনিয়ন পরিষদের দুর্নীতির খবর কি আদৌ সরকারের উচ্চপদস্থ লোকদের কাছে যায় না? নাকি তারা টিনের চশমা পরে বসে আছেন!

অবিলম্বে এসব ইউনিয়ন অফিসের দুর্নীতি দূর করতে হবে। এখন ২০২৪ সাল। পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় সবার। আর এ যুগে এসে যদি দিনের পর দিন সামান্য একটা জন্মনিবন্ধন করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তাহলে দেশ এগোবে কীভাবে? ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ কাজ করে যে আয় করবে, সেটা তখন বন্ধ হয়ে শুধু ইউনিয়ন পরিষদের লাইনের মধ্যেই আটকে থাকবে।

তাই অবিলম্বে ইউনিয়ন পরিষদের এসব ভোগান্তি দূর করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

  • মাহিব মোস্তাকিম
    শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, ঢাকা কলেজ