রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সিসি ক্যামেরা ভাঙা থাকার কারণে অপরাধী দ্রুত শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে পুলিশ।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সিসি ক্যামেরা ভাঙা থাকার কারণে অপরাধী দ্রুত শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে পুলিশ।

চিঠিপত্র

সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় অপরাধীদের সুযোগ

রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। এটি অপরাধ প্রতিরোধ, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্ঘটনার কারণ শনাক্ত করার একটি কার্যকর উপায়। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে রাস্তার পরিস্থিতি সরাসরি নজরদারি করা সম্ভব, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে। অপরাধী শনাক্ত করা এবং ঘটনার সঠিক প্রমাণ সংগ্রহের জন্য সিসিটিভি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এ ছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরা জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা বোধ সৃষ্টি করে এবং অনেক সময় অপরাধীদের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে প্রভাব ফেলে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রেও এর কার্যকারিতা অনেক। তবে সিসিটিভির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজন সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং ডেটা সুরক্ষা। এটি প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিক নিরাপত্তাব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ছাত্র আন্দোলনের পর বাংলাদেশের রাস্তায় স্থাপন করা অনেক সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে পড়েছে, যা জননিরাপত্তা ও নজরদারি–ব্যবস্থার জন্য উদ্বেগজনক। সিসিটিভি ক্যামেরা অপরাধ প্রতিরোধ, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং আইনের শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কিন্তু এই ক্যামেরাগুলোর নষ্ট হয়ে যাওয়া শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে না, বরং অপরাধীদের জন্য নিরাপত্তার একটি শূন্যতা তৈরি করছে। নষ্ট ক্যামেরাগুলো দ্রুত মেরামত করা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। এটি না করলে রাস্তায় অপরাধের সঠিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। পাশাপাশি নতুন এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সিসিটিভি ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে হবে। জনগণের করের অর্থে স্থাপিত এসব সিসিটিভি ক্যামেরার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি জাতীয় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।

বাংলাদেশে রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট হওয়ার কারণে অপরাধ প্রতিরোধ ও অপরাধীদের শনাক্ত করতে পুলিশের কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরা আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, প্রমাণ সংগ্রহ এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। তবে রাজশাহী ও ঢাকার মতো শহরগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরার নষ্ট হওয়ার কারণে পুলিশ অপরাধীদের সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারছে না, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।

রাজশাহী ও ঢাকায় চুরি, ছিনতাই এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার পেছনে সিসিটিভি ব্যবস্থার অকার্যকারিতা একটি বড় কারণ। অপরাধের সময় বা পরবর্তী তদন্তে অপরাধীর গতিবিধি ট্র্যাক করার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সিসিটিভি নষ্ট থাকায় পুলিশের হাতে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও প্রমাণ থাকছে না। ফলে অনেক অপরাধী ধরা পড়ছে না, যা অপরাধীদের আরও সাহসী করে তুলছে।

এই সমস্যার কুফল শুধু আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার নিরাপত্তায়ও প্রভাব ফেলছে। জনগণ সিসিটিভির ওপর যে আস্থা রেখেছিল, তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে শহরের ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় সেখানে অপরাধের হার বাড়ছে।

এই সংকট সমাধানে নষ্ট সিসিটিভি দ্রুত মেরামত করা এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। একই সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্ধারিত বাজেট বরাদ্দ এবং নজরদারি ব্যবস্থায় দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে একটি কার্যকর সিসিটিভি ব্যবস্থা অপরিহার্য, যা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পুলিশের কাজের মানোন্নয়ন ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হালিমা আক্তার
শিক্ষার্থী
রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী।