চিঠিপত্র

শহীদ আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র–ছাত্রীরা কেন আতঙ্কে থাকবেন

২০২৪–এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আগুনের ফুলকি যে তরুণ আবু সাঈদের স্বতঃস্ফূর্ত জীবন বলিদান, সেটা সর্বজনবিদিত। আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ শত শত তরুণ আত্মাহুতি দিয়েছেন শুধু একটু চাওয়ার জন্য। সেটা হলো, এ দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না।

৭৫ একরের সবুজে ঘেরা ‘উত্তরের জ্ঞানের বাতিঘর’খ্যাত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) হলো আত্মদানের অগ্রদূত আবু সাঈদের প্রিয় বিদ্যাপীঠ। আজ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আতঙ্কে চলতে হয় নবাগত শিক্ষার্থীদের।

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে যে তরুণেরা স্বৈরাচারের বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, অদম্য সেই তরুণদের ওপর কেন নেমে আসছে র‍্যাগিংয়ের মতো কালচার। আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন আতঙ্কে চলবেন নবীন শিক্ষার্থীরা?

সিনিয়র–আতঙ্কে দিন কাটছে নবীন শিক্ষার্থীদের। ‘ম্যানার শেখানো’র নামে চলছে মানসিক নির্যাতন। ভোর ৬টা, রাত ১০টা, এমন এমন সময়ে ডেকে নেওয়া হচ্ছে নবীনদের। করা হচ্ছে অকথ্য নির্যাতন। এ জন্য ক্যাম্পাসে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন নবীনেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাচ্ছেন না তাঁরা শালীন ও পছন্দের পোশাক পরিধানের স্বাধীনতা। ফুল হাতা শার্ট ছাড়া অন্য যেকোনো প্রকার পোশাক পরার ওপর আছে নিষেধাজ্ঞা। এ নিষেধাজ্ঞা নবীনদের জন্য এক ব্যাচ সিনিয়রদের দেওয়া।

পদে পদে ভুল ধরে সেই ভুলের জন্য দেওয়া হচ্ছে শাস্তি। মানুষ কখনোই নিখুঁতভাবে চলতে পারে না। মানুষ মাত্রই ভুল। নবাগতরা সময়ের সঙ্গে শিখে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়মকানুন। কিন্তু সিনিয়ররা দুই দিনের মধ্যে সবকিছু শেখাতে চান।

প্রশ্ন থাকে, আবু সাঈদ কি এর জন্য শহীদ হয়েছেন?

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত না খেয়েই থাকতে হচ্ছে অনেক সময়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। যেখানে নবীনেরা বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত হবেন, সেখানে অনেকেই ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন বেরোবি।

যেখানে সব ক্যাম্পাসে এই র‍্যাগিং বন্ধ, সেখানে খুব ভালোমতোই চলছে বেরোবিতে। অধিকাংশ বিভাগে চলছে এমন নির্যাতন। কিছু কিছু বিভাগে এটি আরও বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে এ–সংক্রান্ত অনেক ই–মেইল ও আবেদন গেছে। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেনও। কিন্তু ভয়ে কোনো নবীন শিক্ষার্থী মুখ খুলছেন না।

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত না খেয়েই থাকতে হচ্ছে অনেক সময়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। যেখানে নবীনেরা বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত হবেন, সেখানে অনেকেই ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন বেরোবি।

এ রকম কালচার দ্রুত বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

নাম ও বিভাগ প্রকাশে অনিচ্ছুক
১৬তম ব্যাচ, ২০২৩-২৪ সেশন,
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।