ধর্মপাশার গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও কৃষকদের দুঃখ

গ্রাম ভালো থাকলে শহরও বাঁচবে, দেশটাও এগোবে—এই মুখস্থ সম্ভাষণের বাইরের সর্বজনবিদিত সত্যটা হলো, শহরকেন্দ্রিক উন্নয়ন ও শিক্ষিত সুবিধাভোগী সম্প্রদায়ের তুষ্টিবিধানে গ্রামকে আগেও উপেক্ষা করা হয়েছে; এখনো করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার কামলাবাজ সেতুটি ওপর দিয়ে প্রায় ২০টি গ্রামের (নলগড়া, আবুয়ারচর, খয়েরদিরচর, লংকাপাতারিয়া, সলফ, ভাটাপারা, রংপুর, রাজাপুর, রায়পুর, সরস্বতীপুর, আমজোড়া ইত্যাদি গ্রাম) যাতায়াতের ব্যবস্থা খুব ভয়ানক।

কামলাবাজে ধ্বংস অবস্থায় পড়ে থাকা সেতুটিসহ রাস্তাঘাটের অস্তিত্ব বিলীনপ্রায়। বর্ষা মৌসুমে, তথা অর্ধবছর পানিতে ভাসমান থাকে প্রায় ১২টি গ্রাম এবং বাকি ৭-৮টি গ্রামের অটোরিকশার চালকেরা নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তায় ইটের গুঁড়া ঢেলে কোনোরকমে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেতুটি পারাপারের সময় গরু, মহিষ, মানুষসহ অটোরিকশার দুর্ঘটনা বরাবরই ঘটছে। এতে উপজেলার বহুল জনসংখ্যার একটি অংশ দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।

কৃষিনির্ভর এই দেশে কৃষিকাজই তাঁদের জীবিকার অন্যতম উৎস। বৈশাখ মাসে পরিবহনব্যবস্থা ভালো না থাকায় কৃষকদের মাঠেই স্বল্পমূল্যে ফসল বাজারজাত করতে হয়। এতে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

উপজেলায় একটিমাত্র হাসপাতাল বিদ্যমান থাকায় এ অঞ্চলের মানুষগুলো ভোগান্তির শিকার এবং যথাসময়ে তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসা গ্রহণের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, ধর্মপাশা উপজেলার কামলাবাজ সেতুটি নতুন করে নির্মাণসহ নিগৃহীত মানুষের যাতায়াতব্যবস্থা যে ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে, তা সত্বর মেরামত করুন। তা না হলে মানুষের দুর্ভোগ দিনের পর দিন বাড়তেই থাকবে।

দিদার আহমেদ

শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।