হোমিওপ্যাথিক কলেজে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ হবে কবে

১৭৯০ সাল থেকে শুরু হয় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যার জনক ছিলেন জার্মানি বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান ফ্রেডরিক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান। তিনি প্রমাণ করেন, যে কোনো ওষুধ সুস্থ মানুষের ওপর যে রোগ লক্ষণ সৃষ্টি করে তা সদৃশ লক্ষণের রোগীকে আরোগ্য করতে পারে। অর্থাৎ ওষুধের রোগ সৃষ্টিকারী ক্ষমতার মাধ্যমেই এর রোগ আরোগ্যকারী ক্ষমতা নিহিত। সেই প্রাচীনকাল থেকে এই চিকিৎসার ব্যবস্থা জনপ্রিয়তা কমে নাই বরং দিন দিন বেড়ে চলছে।

অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জানার পর থেকে হোমিওপ্যাথিকের প্রতি মানুষের আগ্রহ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে,পাশাপাশি এই চিকিৎসা ব্যবস্থা ওপর আস্থা রেখে বাংলাদেশ সরকার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নামের আগে ডাক্তার উপাধি দিয়ে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন, ২০২৩ গেজেট প্রকাশ করে। যা ছিল বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটা প্রশংসার কাজ।

গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিল গঠন করা হয়। কিন্তু দুঃখের পরিতাপের বিষয় এই যে, আজকাল ব্যাঙের ছাতার মতো অনুমোদনবিহীন কলেজ চালু হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে হচ্ছে পুকুরচুরি।

একটা উদাহরণ দিই। কয়েক দিন আগে দেখলাম, আমার এক পরিচিত চতুর্থ বর্ষের ছাত্র একটি অনিবন্ধিত হোমিও কলেজের প্রভাষক হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন। তারপর কৌতুহলবশত ওই কলেজের শিক্ষক তালিকায় ওই শিক্ষার্থীর নাম দেখে আমি তো অবাক। তিনি আবার হোমিওপ্যাথি কলেজের প্রভাষক পদবি লিখে চেম্বার খুলে সাধারণ মানুষকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নামে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছেন।

তাছাড়া সচেতন মানুষের কাছে হোমিওপ্যাথি হাস্যকর বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কতিপয় ব্যক্তির কারণে হোমিওপ্যাথির মান নষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তদারকি করতে পারে। কিন্তু বড় পরিতাপের বিষয় হলো কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। অনিবন্ধিত কলেজ, সেই সঙ্গে নিয়োগ বাণিজ্য সব মিলে যেন একটা জগাখিচুড়ি।
বাংলাদেশে এমন আনাচে কানাচে ব্যাঙের ছাতার মতো হোমিও কলেজ সৃষ্টি হচ্ছে, ভুয়া নিয়োগ হচ্ছে। এরা বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও শিক্ষার মান নষ্ট করছে।

অনুমোদনবিহীন কলেজ ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিল কতটুকু অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে  তা এখন দেখার বিষয়।

ডা. শেখ শাকিল
ডি.এইচ.এম.এস (হোমিওপ্যাথিক)