ঢাকা বিভাগের প্রসিদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী নগরী ও জেলা নারায়ণগঞ্জ। ইতিহাস-ঐতিহ্য ও শিল্প-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ জেলাটি ঢাকার এক প্রাণকেন্দ্র। নারায়ণগঞ্জ সোনালি আঁশ পাটের জন্য প্রাচ্যের ড্যান্ডি হিসেবে খ্যাত।
শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে এই নারায়ণগঞ্জ জেলাটি। নারায়ণগঞ্জ জেলাটি রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। ৬৮৪.৩৫ বর্গকিলোমিটারের এই জেলা ৬টি জেলা দ্বারা বেষ্টিত। ঢাকা বিভাগের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম জেলা নারায়ণগঞ্জ জেলা। এটি ৫টি উপজেলা ও ৭টি থানায় বিভক্ত। বাংলাদেশের সপ্তম সিটি করপোরেশনের হলো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। চাষাঢ়া হলো নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র।
নারায়ণগঞ্জের এক ব্যস্ততম পয়েন্ট হলো এই চাষাঢ়া। বিভিন্ন রুটের বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল এই সড়কে। চাষাঢ়া থেকে চারদিকে চারটি সড়ক বিস্তৃত। চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ, চাষাঢ়া থেকে খানপুর হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ, চাষাঢ়া থেকে পঞ্চবটী হয়ে ঢাকা, চাষাঢ়া থেকে বিশ্বরোড হয়ে ঢাকার সড়কগুলো বিস্তৃত।
প্রতিদিন প্রায় হাজারো শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও পথচারীদের যাতায়াত এই স্থানে। এ ছাড়া এই পয়েন্টকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শত রেস্টুরেন্ট ও বেশ কিছু শপিং কমপ্লেক্স। তাই ব্যস্ততম সড়কটিতে প্রাণের নিরাপত্তা সময়ের দাবি; বরং এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজন ছিল আরও বেশ কিছু বছর আগে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নেই কোনো প্রাণের নিরাপত্তা।
বছরের পর বছর সড়কটিতে মানুষের চলাচল চলছে নিজেদের প্রাণের ভয় নিয়ে। কেননা ব্যস্ততম স্থানের বিস্তৃত এই সড়কগুলোতে হাজারো মানুষের চলাচল থাকলেও নেই নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করার মতো একটি পদচারী-সেতুও। সড়কে চলাচলকারী শিশু, নারী কিংবা বয়স্ক ব্যক্তিরা প্রতিদিন রাস্তা পারাপার করতে হচ্ছেন প্রাণের ভয় নিয়ে। রাস্তার পাশে দাঁড়ালে আবার অনেক সময় দেখা যায়, দৌড়ে পার হচ্ছেন অনেকে এই ব্যস্ততম সড়ক। ফলে দুর্ঘটনা ক্রমে বেড়েই চলছে।
বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, আদালত কিংবা প্রয়োজনীয় সব অফিসের অবস্থান এই চাষাঢ়ার আশপাশেই তাই এই স্থানে মানুষের চাপও অনেক বেশি। তাই হাজারো মানুষ এই ব্যস্ততম রাস্তাগুলো পার হচ্ছে কোনো প্রকারের নিরাপত্তা ছাড়াই। চাষাঢ়ার সড়কগুলোতে পদচারী-সেতু নির্মাণ নারায়ণগঞ্জবাসীর বহুদিনের দাবি। তবে বছরের পর বছর অতিবাহিত হলেও চোখে পড়ছে না জনবাসী নিরাপত্তার জন্য কোনো পদচারী-সেতুর। প্রশাসনেরও এ ব্যাপারে নেই কোনো গুরুতর নজরদারি; বরং তারা যেন বিষয়টিতে নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বেশ কয়েকবার এই পদচারী-সেতুর দাবিতে আন্দোলন চালিয়েছে জনবাসী, তবে বিপরীতে পাওয়া যায়নি কোনো ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া।
বর্তমানে সড়কে চলাচলের নিরাপত্তা যেন একজন পথচারীর একান্তই নিজ দায়িত্ব। নিজেদের প্রাণের নিরাপত্তা অনুভব করলেও তাদের নিরাপত্তার জন্য নেই কোনো জরুরি পদক্ষেপ। এ অবস্থায় এভাবেই চলতে থাকলে ক্রমে বেড়েই চলবে চাষাঢ়ায় সড়ক দুর্ঘটনা, থেকে যাবে পথচারীদের নিরাপত্তাহীনতা। তাই এ ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। সঙ্গে প্রয়োজন কিছু ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ও কার্যক্রম, যাতে নিশ্চিত হবে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রাণের নিরাপত্তা এবং বজায় থাকবে সড়কে সুস্থ চলাচল।
সাফা আক্তার
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইল: safa121214@gmail.com