কখনো কখনো পত্রপত্রিকায়, কখনো শহরের অলিগলিতে চাকরির বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। এসব বিজ্ঞাপনে আবার মানুষের মন কেড়ে নিতে কিছু লোভনীয় কথা লেখা থাকে। যেমন দক্ষ বা অদক্ষ কিছুসংখ্যক লোক কোম্পানিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। বেতন ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। থাকা-খাওয়া ফ্রি ইত্যাদি।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজেক্টের চাকরিগুলোতে নিজ এলাকায় চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞাপনে লেখা থাকে। বেকারত্বের চাপে সরলমনা কিছু মানুষ এমন বিজ্ঞাপন দেখে সেই ঠিকানায় যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করা হলে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত, সনদের কপি ও ছবি নেওয়া হয় ই-মেইলের মাধ্যমে। এ সবকিছুই কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের একটা বিশেষ মাধ্যম। ই-মেইল যখন তারা পায়, তখন চাকরিপ্রার্থীদের কাছে শুরু হয় ফোন! ফোন করে চাওয়া হয়ে থাকে বিরাট অঙ্কের টাকা। টাকা দিতে পারলে আপনার চাকরি নিশ্চিত হবে। লোভনীয় মোটা অঙ্কের বেতন দেখে অনেকে সেই ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেন।
আবার চাকরিপ্রার্থীদেরও প্রতারণার কাজে ব্যবহার করে এই চক্র। নিজ এলাকা থেকে লোক নেওয়া যাবে বলে আরও মানুষ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয় চাকরিপ্রার্থীদের মাধ্যমে। এ চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেকে সনদের মূল কপিটাও দিয়ে দেন। চাকরি তো তারা দেয়ই না, পরে সনদ ফেরত দেওয়ার নামে শুরু করে টালবাহানা। তখন এসব ভুয়া কোম্পানি মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সনদ ফেরত বাবদ ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করে।
অসহায় বেকার এই শিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীরা উপায় না পেয়ে টাকা দিতে বাধ্য হন। অনেকে এ টাকা জোগাড় করতে গিয়ে হতাশায় ভোগেন। চড়া সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হন তাঁরা, অনেকে জড়িয়ে পড়েন অবৈধ কর্মকাণ্ডে। এই পরিস্থিতিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের সতর্ক হতে হবে, কোনো কোম্পানি বা প্রজেক্টে চাকরির জন্য লোভনীয় বেতন দেখে বিরাট অঙ্কের টাকা ও কাগজপত্র জমা দেওয়ার আগে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে আহ্বান জানাই।
মো. আবু হানিফ বিন সাঈদ
শিক্ষার্থী
ডা. ইলিয়াছ একাডেমি, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ