ষড়্ঋতুর বাংলাদেশে বছরজুড়েই কোনো না কোনো ফল বাজারে পাওয়া যায়। বাহারি ফলের স্বাদ নিতে মানুষ মুখিয়ে থাকে। তবে সমাজের একধরনের ভোগবাদী মানুষের এ আকুলতা প্রকৃতির জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের মানুষ সবার আগে সবকিছু ভোগ করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে। আর তাদের চাহিদা মেটাতেই বাজারে অপরিপক্ব ফলফলাদি নিয়ে আসেন চাষি ও আড়তদারেরা। পরিপক্ব হওয়ার আগেই এসব ফল কৃত্রিমভাবে সুমিষ্ট, রসাল করা ও পাকানোর কাজে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থও মেশানো হচ্ছে।
অন্যদিকে চাষিরা তাঁদের নিজেদের অজ্ঞতা বা দূরদর্শিতার অভাবে ফলের গাছের পরিমাণ হ্রাস করছেন। ধরা যাক, একটি লিচুগাছে যদি ২০০ লিচু ধরে, তার একইসংখ্যক বীজ থাকবে। এই ২০০ লিচুর বীজ (পরিপক্ব) থেকে পরে আরও ২০০ নতুন চারা গাছ যুক্ত হতে পারে। ২০০ না হোক, ১০০ বা ৫০ বা ২০টি হলেও মন্দ কী। তাহলে সারা দেশে এভাবে কতটি নতুন গাছ পাচ্ছি, সেটি ভেবে দেখুন। আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে ইত্যাদি ফল পরিপক্ব অবস্থায় বাজারে এলে তার পরিপক্ব বীজ থেকে প্রতিবছর কোটি কোটি নতুন চারা গাছ উৎপাদিত হবে, শুধু ফলগুলো খেয়ে তার বীজ মাটি বা উপযুক্ত কোনো জায়গায় ফেলে দিলেই হবে। এ পদ্ধতিতে শ্রম ও অর্থ ছাড়াই বিপুলসংখ্যক ফলের গাছ বাড়ানো সম্ভব।
তাই ফলচাষিরা যাতে পরিপক্ব হওয়ার আগে ফল বাজারে বিক্রি করতে না নিয়ে আসে, এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে হবে। বাজারের ফলের আড়তেও নিয়মিত মনিটরিং দরকার, যাতে কোনো ধরনের অপরিপক্ব ফল মজুত করা না হয়। কৃত্রিমভাবে ফল পাকানোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হোক। আর প্রতিটি ফল খাওয়ার মৌসুমি একটি গুরুত্ব আছে, সে ব্যাপারেও আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।
আ. আল মামুন
কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম