কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এ রোগ নির্মূলে এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন হিসেবে গণ্য করছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। বাংলাদেশে কালাজ্বর নির্মূলের প্রক্রিয়ায় নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমদ। তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পার্থ শঙ্কর সাহা।
কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) স্বীকৃতিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
বে-নজির আহমদ: এটা বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের সাফল্যের বড় স্বীকৃতি এবং বিশ্ব জনস্বাস্থ্যে কালাজ্বর নির্মূলে প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাস হয়ে রইল, যে ইতিহাস কোনো দিন মুছে যাবে না। এই স্বীকৃতির চেয়ে বড় দিক হলো, দেশের ১০০টির বেশি উপজেলায় কালাজ্বরের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি। যে রোগে অসংখ্য লোক প্রাণ হারিয়েছে, অসহায়ভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনেছে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ, সেই ভয়াল রোগ থেকে স্বস্তি একটা বড় প্রাপ্তি। তবে এখানেই শেষ নয়, জনস্বাস্থ্যের নিরিখে অর্জিত এই নির্মূল সাফল্য (উপজেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ১ জনের কম কালাজ্বর) কালাজ্বরের শেষ সংক্রমণটি বন্ধ করে কালাজ্বরমুক্ত বাংলাদেশের জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। এই রোগের যাতে পুনরোদ্ভব না ঘটে, তার জন্য দীর্ঘদিন ধরে রোগ নজরদারি করে যেতে হবে।
কালাজ্বর রোগটি সম্পর্কে বিশদে কিছু বলুন। এটি কত পুরোনো, কীভাবে হয়, কার মাধ্যমে ছড়ায়?
বে-নজির আহমদ: কালাজ্বর বাহকবাহিত একটি পরজীবীঘটিত রোগ। এটি পরজীবী বেলেমাছি বাহকের মাধ্যমে ছড়ায়। কালাজ্বরে আক্রান্ত মানুষ এই রোগের উৎস হিসেবে কাজ করে। কালাজ্বর মানুষের রক্ত তৈরির আধারকে আক্রমণ করে রক্তাল্পতা এবং প্রতিরোধক্ষমতাকে অকার্যকর করে অন্যান্য সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এ অবস্থায় চিকিৎসাহীন থাকলে মৃত্যুর আশঙ্কা প্রায় শতভাগ। কালাজ্বরের রোগী দীর্ঘমেয়াদি জ্বরে ভোগে এবং প্লীহা ও যকৃতের বৃদ্ধি পেয়ে থাকে, রক্তাল্পতা হয় এবং ওজন কমে যায়।
যেকোনো বয়সে এ রোগ হতে পারে, তবে শিশুদের মধ্যে এ রোগ বেশি হয়। রোগটি ঠিক কত পুরোনো তা বলা কঠিন; প্রজন্ম প্রজন্মান্তরে এ রোগ সম্বন্ধে জানা যায়। তবে প্রায় ২০০ বছর আগে যশোর অঞ্চলে কালাজ্বর মহামারিতে ২৮ হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে ইতিহাসে পাওয়া যায়। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকাজুড়ে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল। একসময় বিশ্ব কালাজ্বরের ৮০ শতাংশ হতো এই দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশ, ব্রাজিল এবং আফ্রিকার একটি দেশে।
এখন বিশ্বে কালাজ্বর পরিস্থিতি কেমন? এটি কোথায় কোথায় ছড়ায়?
বে-নজির আহমদ: এখন বছরে ৭০ হাজারের মতো মানুষ কালাজ্বরে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ব্রাজিল, ভারত এবং পূর্ব আফ্রিকার কয়েকটি দেশে বেশি সংখ্যায় মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশ এই পাঁচটি দেশের মধ্যে নির্মূল কার্যক্রমে সর্বাধিক সাফল্য দেখিয়েছে। তবে নেপাল ও ভারতও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমি ভারতে কালাজ্বর কর্মসূচি স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন টিমের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের অর্জন দেখেছি।
ভারতও অদূর ভবিষ্যতে নির্মূল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে। নেপাল পড়েছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মারপ্যাঁচে, সমতল ভূমিতে সফলতা পেলেও পাহাড়ি উচ্চভূমিতে নবোদ্ভূত হচ্ছে কালাজ্বর। সব মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কালাজ্বর নির্মূল কর্মসূচি সাফল্যের পথে হাঁটছে। তবে পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোর কালাজ্বর পরিস্থিতি আমাদের আগের অবস্থার মতো ভয়াবহ। এই দেশগুলোর জন্য আঞ্চলিক কালাজ্বর কর্মকৌশল প্রণয়নের জন্য আমি কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে যাওয়ার সুবাদে সমস্যার ব্যাপকতা ও বহুমাত্রিকতা প্রত্যক্ষ করেছি।
কালাজ্বরের বাহক বেলেমাছি কোথায় বংশ বিস্তার করে? এটি কি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়?
বে-নজির আহমদ: বেলেমাছি স্যাঁতসেঁতে মাটিতে এবং মাটির ঘরের ফাঁকফোকরে বংশ বিস্তার করে ও আশ্রয় নেয়। যদিও তারা উড়তে পারে না, কিন্তু লাফিয়ে লাফিয়ে বিস্তার ঘটায় কালাজ্বরের। স্ত্রী বেলেমাছি রক্ত পানের সময় আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কালাজ্বর পরজীবী গ্রহণ করে এবং তার ভেতরে কিছু পরিবর্তনের পর সুস্থ মানুষের মধ্যে এই রোগ সঞ্চার করে। মানুষ থেকে মানুষে এই রোগ সরাসরি ছড়ায় না।
বাংলাদেশে কালাজ্বরের প্রকোপের ইতিহাস কী? কোন অঞ্চলে এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যেত?
বে-নজির আহমদ: কালাজ্বর কয়েক শ বছর ধরে তা বিভীষিকা হিসেবে বিরাজ করেছে। পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাজুড়ে দেশের উত্তর জনপদ থেকে দক্ষিণ জনপদ পর্যন্ত এই রোগ তাণ্ডব চালিয়েছে। ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের কীটনাশক ডিডিটির দেশজুড়ে ব্যাপক প্রয়োগের পার্শ্বফল হিসেবে ষাটের দশকের পর কালাজ্বরের প্রকোপ ব্যাপক হারে কমে যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরে ডিডিটি প্রয়োগ ব্যাহত হলে কালাজ্বরের পুনরোদ্ভব ঘটতে থাকে এবং একসময় তা ৪৫টি জেলার ১২৫টি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে।
একসময় রোগটি সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, খুলনা, কুষ্টিয়া, বরিশাল, ভোলা, ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর ইত্যাদি জেলায় ব্যাপকভাবে পাওয়া যেতে শুরু করে। পরবর্তী সময়ে এককভাবে ময়মনসিংহের পাঁচটি উপজেলা (ফুলবাড়িয়া, ত্রিশাল, ভালুকা, গফরগাঁও, মুক্তাগাছা), জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা, টাঙ্গাইলের নাগরপুর এবং খুলনার তেরখাদা—এই আটটি উপজেলাকে সর্বাধিক কালাজ্বরপ্রবণ উপজেলা হিসেবে ২০১২ সালে চিহ্নিত করা হয়। এই সময় আরও ১৫টি উপজেলাকে মাঝারিপ্রবণ এবং ৭৭টি উপজেলাকে স্বল্পপ্রবণ ধরে মোট ১০০টি উপজেলায় কালাজ্বর নির্মূল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।
কালাজ্বর নির্মূলে সরকারি তৎপরতার ধরন কেমন ছিল? আপনি নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলুন।
বে-নজির আহমদ: বাংলাদেশের কালাজ্বর নির্মূলের সংগঠিত কার্যক্রম গতি পায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে ২০০৫ সালে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। তখন থেকে কালাজ্বর নির্মূল কর্মসূচিতে আমার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হওয়া, যা আজও চলছে। দেশের কালাজ্বর কর্মসূচিতে অবদান রাখার পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক অঙ্গনেও আমি জড়িত আছি নিবিড়ভাবে। সে হিসেবে দেশের কালাজ্বর নির্মূল কর্মসূচির নানা দিক আমার জানা আছে। কালাজ্বর কর্মকৌশলের মূল জায়গাগুলো ছিল দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ ও সম্পূর্ণ চিকিৎসা, বাহক নিয়ন্ত্রণ, রোগ ও বাহক নজরদারি, গবেষণা এবং প্রচার প্রচারণা ও গণজাগরণ।
কালাজ্বর নির্মূলে মাঠপর্যায়ে কী কী ধরনের কাজ হয়?
বে-নজির আহমদ: আগে কালাজ্বর শনাক্ত হতো শুধু সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর)। পরে ১০০ কালাজ্বরপ্রবণ উপজেলায় আরডিটির মাধ্যমে তা করা শুরু হয়। ৫০ বছরের অধিক কালাজ্বর চিকিৎসা হয়েছে শুধু একটি মাত্র ওষুধ দিয়ে, সোডিয়াম স্টিবোগ্লুকোনেটের মাধ্যমে। আমরা ২০০৬ সাল থেকে কালাজ্বরের মুখে খাবার ওষুধ মিলটোফোসিনের গবেষণা শুরু করি। ২০০৮ সালে জাতীয় কালাজ্বর গাইডলাইনে প্রথম সারির ওষুধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ব্যাপক হারে চিকিৎসা শুরু করি। এই গবেষণা অনুসরণ করে আরও গবেষণার মাধ্যমে কালাজ্বর চিকিৎসায় যুক্ত হয় লাইপোজমাল অ্যাম্ফোটেরেসিন বি, পারোমোমাইসিন এবং এদের নানা কম্বিনেশন।
শুরু দীর্ঘ সাত বছর পর আমি রোগনিয়ন্ত্রণের পরিচালক নিযুক্ত হওয়ার পর ২০১২ সালে শুরু হয় বাহক নিয়ন্ত্রণে ঘরের অভ্যন্তরে কীটনাশক ছিটানোর কাজ। কীটনাশক ব্যবহারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর গ্রামগঞ্জে বিপুলসংখ্যায় স্প্রেম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়। দেশজুড়ে নানা কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এর ফলও পাওয়া গেছে হাতে হাতে, ব্যাপক হারে হ্রাস পেতে থাকে কালাজ্বর। বছরে ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হতো। সেটা কমতে কমতে শতকে নেমে আসে। একের পর এক উপজেলা নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে থাকে। বাঁকবদলের আরেকটি সংযুক্তি ছিল কালাজ্বর চিকিৎসায় সিঙ্গেল ডোজ লিপোসোমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি। অত্যন্ত কার্যকর এই ওষুধ কালাজ্বর নির্মূলে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখে। কালাজ্বর গবেষণা কার্যকর ওষুধ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণার ঘাটতি থাকলেও আমরা অনেক বিজ্ঞানী গত দুই দশকে অসংখ্য গবেষণা করেছি, যা কালাজ্বর নির্মূলে অমূল্য বলে বিবেচিত।
জনগণকে সম্পৃক্ত করে দীর্ঘদিন এক নাগাড়ে চেষ্টায় কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে মনে করেন অনেকেই। এখানে আর কী কী বিষয় কাজ করেছে?
বে-নজির আহমদ: কালাজ্বর নির্মূলে প্রচার প্রচারণা ও গণজাগরণ রোগ শনাক্তকরণ ও বেলেমাছি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। কালাজ্বর নির্মূল কর্মসূচি মূলত সরকারি অর্থে পরিচালিত হয়েছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে দীর্ঘ দুই দশক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পর সাফল্য এসেছে। বিশ্বে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের নির্মূল লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি বিষয় এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে আছে সংগঠিত কর্মসূচি, জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা, সেক্টরভিত্তিক কর্মসূচিতে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থ বরাদ্দ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অব্যাহত সমর্থন, গবেষণালব্ধ কার্যকর ওষুধ ও কীটনাশক, প্রচার-প্রচারণা, দক্ষ নেতৃত্ব, সুপারভিশন ও মনিটরিং এবং বহুমাত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ।
কিন্তু কালাজ্বরের মতো এ রকম জীবাণুবাহিত রোগ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না কেন?
বে-নজির আহমদ: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার অভাব, কারিগরি দিক উপেক্ষা, কার্যকর বাহক নিয়ন্ত্রণের অপর্যাপ্ততা, নেতৃত্বের ঘাটতি, দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি ও অর্থ বরাদ্দের ঘাটতি। এত সব ঘাটতির কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ তো নিয়ন্ত্রণ হওয়ার নয় এবং ২০ বছরে তার ব্যাপ্তি কেবল বাড়ছে; রোগীর ও মৃত্যুর সংখ্যা আকাশ ছোঁয়াচ্ছে, ভৌগোলিক ব্যাপ্তি বেড়ে রাজধানী ঢাকা থেকে এখন সারা দেশে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারি না? এ জন্য কী কী করা দরকার?
বে-নজির আহমদ: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা কালাজ্বর নির্মূল এবং ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের অভিজ্ঞতা ভালোমতোই কাজে লাগাতে পারি। প্রসঙ্গত, এই দুটি রোগও বাহকবাহিত এবং গ্রামগঞ্জে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে বিস্তৃত। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভালো নেতৃত্ব দরকার। স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে তা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্য বিভাগের নেতৃত্ব প্রয়োজন। একটি জাতীয় ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মকৌশল এবং কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, জাতীয় কারিগরি কমিটি কার্যকরী করা, দীর্ঘ মেয়াদে অর্থ বরাদ্দ, কীটতাত্ত্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো।
কালাজ্বর নিয়ে আমরা সাফল্য পেয়েছি; কিন্তু এটাই তো শেষ কথা নয়। এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে। তা করতে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া যায়?
বে-নজির আহমদ: স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক অর্জন। গুটিবসন্ত, কুষ্ঠ, পোলিও, নবজাতকের ধনুষ্টংকার, ফাইলেরিয়া এবং কালাজ্বর উচ্ছেদ এবং নির্মূল ধারাবাহিকভাবে অর্জিত হচ্ছে। এই রোগগুলোর বড় শিকার মূলত গ্রামের অবহেলিত জনগণ। কুষ্ঠ রোগের বেলায় ‘হইয়াও হইল না শেষ’ অবস্থা হয়েছে। এ রোগ নির্মূল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়ার পরও নজরদারির দুর্বলতার কারণে তা নির্মূল হয়নি। কালাজ্বরের পুনরোদ্ভব ঠেকাতে আমাদের দীর্ঘদিন কঠোর নজরদারি চালাতে হবে।