হাছান মাহমুদ
হাছান মাহমুদ

বিশেষ সাক্ষাৎকার: হাছান মাহমুদ

সম্পর্কের ভারসাম্য রেখেই আমাদের চলতে হবে

আওয়ামী লীগ সরকারের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। সরকারের কূটনীতির চ্যালেঞ্জ, নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া, ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে বড় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য রাখা—এসব বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন হাছান মাহমুদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাহীদ এজাজ

প্রশ্ন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরকারের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। এগুলো হচ্ছে রাজনীতি, অর্থনীতি ও কূটনীতি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আপনি সরকারের চ্যালেঞ্জকে কীভাবে দেখেন?

হাছান মাহমুদ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিধি ও ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত। বর্তমানে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ একটা সময়ের মধ্যে আমরা রয়েছি। পৃথিবী প্রচণ্ডভাবে বিভক্ত। এ সময়ে কূটনৈতিকভাবে সফল হওয়া, এটা অত সহজ কাজ নয়। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য হলো—সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।

আমরা সেই পররাষ্ট্রনীতিই অনুসরণ করছি, যেটির ভিত্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়ে গেছেন। নির্বাচন নিয়ে বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রথমত, নির্বাচন হবে কি হবে না। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন হলে সেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি না। এর মধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে, আমাদের দেশে যে একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে, সমগ্র পৃথিবী সেটি অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে।

কারও কারও কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও সেটি কেটে গেছে। প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বের প্রায় ৭০টির মতো দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অভিনন্দন জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে তাঁর সরকারের সঙ্গে কাজ করার এবং আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। অর্থাৎ সরকার পৃথিবীব্যাপী একটি গ্রহণযোগ্য সরকার হবে কি না, সেটা আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল।

প্রশ্ন

আপনি নির্বাচনের পরের চ্যালেঞ্জের কথা বোঝাতে চাইছেন?

হাছান মাহমুদ: হ্যাঁ, নির্বাচনের পরে। নির্বাচনের পর পৃথিবীর সবার কাছে আমাদের সরকার একটি গ্রহণযোগ্য সরকার এবং সবাই আমাদের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। আমরা সবার সঙ্গে চলার অভিপ্রায় নিয়ে এগোচ্ছি।

প্রশ্ন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আপনি সরকারের সামনে কূটনীতির চ্যালেঞ্জ কী দেখছেন?

হাছান মাহমুদ: বিশ্বের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। প্রথমত, ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ও জনগণের কেনাকাটার সক্ষমতা। এখনকার কূটনীতি অনেকটাই বাণিজ্যনির্ভর। সে কারণে সবাই আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়। সবার সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য তৈরি করা খুব সহজ কাজ নয়। কিন্তু আমরা সেই ভারসাম্য রেখেই চলছি। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক।

মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, সেটি গভীরভাবে প্রোথিত এবং দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না।’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দেখা করতে চেয়েছেন এবং মিউনিখে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভলোদিমির জেলেনস্কির সাক্ষাৎ হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে যুদ্ধ বন্ধ করার উপায় খুঁজতে বলেছেন। সম্পর্কের এই ভারসাম্য রক্ষা করেই আমাদের চলতে হবে। আমরা পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ—সবার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমেই দেশকে এগিয়ে নিতে যেতে চাই।

প্রশ্ন

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি জোর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তো আমরা দেখেছি। নির্বাচনের পরও বিবৃতিতে তারা তাদের হতাশার কথা জানিয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে বাইডেন চিঠি লিখলেন। যুক্তরাষ্ট্র কি এখন নিজেদের স্বার্থের নিরিখে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী বলেই নির্বাচন ও সুশাসনের প্রসঙ্গগুলোকে পাশে সরিয়ে রাখার নীতি নিয়েছে?

হাছান মাহমুদ: কোন প্রেক্ষাপটে তারা কী বলছে, কী লিখছে, সেটাতে আমি যেতে চাই না। আমরা যেটা চাই, সেটাই আমি বলতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক। গত ৫২ বছরের পথ চলায় আমাদের দেশের উন্নয়ন–অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরাট ভূমিকা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক পরিসরে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা নানাভাবে একসঙ্গে কাজ করি। বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের নিজস্ব অবস্থান রয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

প্রশ্ন

আপনি বলছেন নানা ইস্যুতে ভিন্নমত থাকলেও সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়াতেই আপনাদের মনোযোগ...

হাছান মাহমুদ: যেকোনো দুটি দেশের মধ্যে নানা ইস্যুতে ভিন্নমত থাকতেই পারে। আমাদের সঙ্গে ভারতের সব মত কি সব সময় মেলে?। ভিন্নমত তো থাকতেই পারে। কিন্তু ভারত আমাদের পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত বন্ধু, এটাই তো বাস্তবতা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভারত অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের নানাভাবে সহায়তা করেছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই যে আমরা একমত হতে পারব, তা তো নয়।

সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও সেটি প্রযোজ্য। কিন্তু আমরা আমাদের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই। যে সম্পর্কের মধ্য দিয়ে জনগণ উপকৃত হবে, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। এই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যেতে চাই।

প্রশ্ন

নির্বাচন ও গণতন্ত্রের পাশাপাশি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো সব সময় উচ্চকণ্ঠ। ভবিষ্যতে ব্যবসা ও বিনিয়োগের প্রেক্ষাপটে সাইবার নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা ও প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে অনেকের মত। এ ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্বকে কীভাবে দেখছেন?

হাছান মাহমুদ: সাইবার নিরাপত্তা আইন তো করা হয়েছে দেশের সব মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার স্বার্থেই। এই আইন সব দেশেই হচ্ছে। পশ্চিমা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সব দেশে এই আইন আছে। কাজেই আমাদের আইনটি আলাদা কিছু নয়। আমাদের সাইবার নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল।

সেগুলো সংশোধন করা হয়েছে। সুতরাং এ আইন নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক। আমাদের দেশে যেভাবে অবাধে মত প্রকাশ করা যায়, রাতের টক শো দেখলে বা পত্রিকার পাতায় চোখ বোলালেই সেটা দেখা যায়। উন্নয়নশীল অনেক দেশের সঙ্গে মেলালে দেখবেন, আমাদের দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অনেক বেশি বিস্তৃত। আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন আলোচনায় যাঁরা এ প্রশ্নগুলো উত্থাপন করেন, তাঁদের দেশের চেয়ে আমাদের দেশে মতপ্রকাশে স্বাধীনতা অনেক বেশি।

প্রশ্ন

শ্রম অধিকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েক বছর ধরেই তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়ে আসছে। ভবিষ্যতে শ্রম অধিকার নিয়ে তাদের উদ্বেগগুলো আপনাদের সামনে কতটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে?

হাছান মাহমুদ: আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না। তারা তাদের মতামত দিতেই পারে। আমরা আমাদের দেশের আলোকে আমাদের শ্রমিকদের উন্নয়ন ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যা যা দরকার, অনেক কিছুই করেছি। ভবিষ্যতে আমাদের আরও অনেক কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মতামত দিতেই পারে। সেগুলো কীভাবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আত্তীকরণ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত আমরাই নেব।

প্রশ্ন

প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গত এক দশকে বিশেষ একটি পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। অথচ তিস্তা চুক্তি সই, শুল্ক ও অশুল্ক বাধা বিলোপ এবং বাণিজ্য–বৈষম্য দূরের মতো বিষয়গুলোর সুরাহা হয়নি। দুই দেশ যখন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অংশীদারত্বের অগ্রাধিকারের কথা বলছে, সে সময়ে এসে এগুলোর দ্রুত সুরাহা কি অপরিহার্য নয়?

হাছান মাহমুদ: ভারত সফরে আমি অমীমাংসিত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। সীমান্তে হত্যা আমরা বন্ধ করতে পারিনি। সীমান্তে অপরাধমূলক তৎপরতা ঘটলে যাতে গুলির আঘাতে মৃত্যু না হয়, মানে প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করলে সেটি সম্ভব। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ নিয়ে তো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছার কমতি নেই। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী তাদের রাজ্য সরকারের অনুমতি পেতে হয়। তা ছাড়া সামনে তাদের নির্বাচন। বিষয়টি সুরাহার ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। একই সঙ্গে গঙ্গার পানির হিস্যা, অর্থাৎ গঙ্গার পানি চুক্তি ২০২৬ সালে নবায়ন করতে হবে। সে বিষয়গুলো আলোচনা করেছি।

প্রশ্ন

সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। দিল্লি সফরের শুরুতে আপনি তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। মিয়ানমার ইস্যু নিয়ে আপনাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। স্পষ্ট করে বলবেন, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারত কীভাবে একে অন্যকে সহায়তা করতে চায়?

হাছান মাহমুদ: মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আছে। আমি মনে করি, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের একটা বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে চীনেরও এই সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। ভারতের সাহায্য চেয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে নিরাপত্তা বাহিনী, সেনাবাহিনীর সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে ৩৩০ জন আমাদের দেশে প্রবেশ করেছিলেন।

মিয়ানমারের সঙ্গে যেহেতু দুই দেশেরই সীমান্ত রয়েছে, তাই বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও মিয়ানমারের নাগরিকদের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সমস্যার কারণে ভারতেও অনেকে অনুপ্রবেশ করেছেন। সুতরাং এ সমস্যা সমাধানে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।

প্রশ্ন

বাংলাদেশসহ এ অঞ্চল ঘিরে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়েছে। এমনকি বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে একদিকে চীন, ভারত, রাশিয়া; অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলোর অবস্থানের কথা কারও অজানা নয়। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কীভাবে ভারসাম্যমূলকভাবে সবার সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেবে?

হাছান মাহমুদ: আমরা তো কারও সঙ্গে বৈরিতায় জড়াই না। তাহলে সবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রে তো কোনো সমস্যা আমি দেখি না। আমরা সেটির উদাহরণ নানা ক্ষেত্রে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের পক্ষ বজায় রাখা কঠিন কাজ নয়। অতীতে আমরা ভারসাম্য রেখেছি। ভবিষ্যতেও রাখব।

প্রশ্ন

বর্তমান সরকারের পরীক্ষিত বন্ধু ভারত। আবার চীনের সঙ্গে সরকারের সুসম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে। বাংলাদেশ ও চীনের এই ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কখনো কখনো ভারতের একধরনের অস্বস্তি দেখা যায়। ভারত ও চীনের সঙ্গে একই সমান্তরালে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়াটা সরকারের জন্য কতখানি চ্যালেঞ্জের?

হাছান মাহমুদ: ভারতের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক। আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামে ভারত যে অবদান রেখেছে, বাংলাদেশ যত দিন থাকবে, তত দিন স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। ভারত সব সময় সংকটে আমাদের পাশে থেকেছে। একই সঙ্গে চীনও আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। অনেক প্রকল্পে তাদের সহায়তা আছে।

ভারত কখনো বলেনি যে চীন থেকে সাহায্য নেওয়া যাবে না, প্রকল্প নেওয়া যাবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ থাকে। ভারত যেহেতু নিকটতম প্রতিবেশী, তাদের সেই নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগগুলো শোনার প্রয়োজন আমাদের আছে।

প্রশ্ন

প্রায় সাত বছরের মাথায় এসেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। প্রত্যাবাসনের তিন দফা উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিলও উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। উপরন্তু মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সংঘাত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিকল্প কিছু কি ভাবছে?

হাছান মাহমুদ: আমরা অন্য কোনো কিছু ভাবছি না। আমরা আশা করি, মিয়ানমারের পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটলে আমরা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব।

প্রশ্ন

সম্প্রতি বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র কিনছে। জোর দিচ্ছে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায়। এটি কি সম্পর্কের কৌশলগত উত্তরণের বিবেচনায় হচ্ছে, নাকি তা শুধু সামরিক সরঞ্জাম কেনাকাটার মধ্যেই সীমিত?

হাছান মাহমুদ: আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াইনি। জড়াতেও চাই না। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ নেওয়া হয়েছে। ওই লক্ষ্য পূরণের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের প্রয়োজন আছে। আর আধুনিকায়নের জন্য সামরিক সরঞ্জাম তো কিনতেই হয়। এটা চলমান প্রক্রিয়া। তবে আমাদের নজরটা কিন্তু বাণিজ্যে। কাজেই সম্পর্কের কৌশলগত উত্তরণ বলতে আমরা ব্যাপক প্রেক্ষাপট থেকে বিষয়টিকে দেখছি।

প্রশ্ন

সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

হাছান মাহমুদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।