অর্থনীতি নয়, ব্রিকসের পেছনে রাজনৈতিক কৌশল

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা—এই পাঁচ দেশের জোট ব্রিকস। মূল লক্ষ্য নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো। বিশ্বের প্রায় ৪২ শতাংশ মানুষের বাস বিকাশমান অর্থনীতির এই দেশগুলোতে। ব্রিকসের যাত্রা শুরু ২০০৬ সালে। বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো। প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ব্রিকসের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও রাজনৈতিক অভিলাষ নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ওয়ালিউর রহমান

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
প্রশ্ন

ব্রিকসে যোগ দিতে ঢাকার আবেদনের খবর এমন সময়ে এল, যখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ আলোচনায় আছে। সৌদি আরবের মতো আরও কিছু দেশও ব্রিকসে যোগ দিতে চায়। ব্রিকসের সদস্যপদ বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হবে?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: বাংলাদেশ কেন ব্রিকসে যোগ দিতে চাইছে, তা নিয়ে আমাদের ভালো করে বোঝার বিষয় আছে। একটা দিক হলো, এই মুহূর্তে বৈশ্বিক ব্যবস্থার সংস্কার দরকার, এ ব্যাপারে সবাই একমত। যুক্তরাষ্ট্রের কারণে অনেক বহুপক্ষীয় ব্যবস্থা কার্যকর নেই। স্বল্পোন্নত ও তুলনামূলকভাবে কম উন্নত দেশগুলোর আর্থসামাজিক ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত অধিকার আদায়ের জন্যও এটা খুব প্রয়োজনীয়। আবার একই সঙ্গে, দক্ষিণীয় জোটবদ্ধতার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ভূমিকা বাড়ানোর চেষ্টার অংশও হতে পারে বাংলাদেশের এই আগ্রহ।

কিন্তু মনে রাখতে হবে, ব্রিকসে যেসব দেশ রয়েছে, তাদের অভিলাষ অনেক বড়। তাই এটা পুল ফ্যাক্টর থেকেও হতে পারে, যে তারা বাংলাদেশকে চায়। আবার এটা পুশ ফ্যাক্টর থেকেও হতে পারে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ পাশ্চাত্যের বড় দেশগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থানে আছে। সে কারণে আরও কিছু বড় দেশের সংহতি লাভের জন্যও বাংলাদেশ সেখানে যেতে পারে। আমরা লক্ষ করছি, নির্বাচন তথা মানবাধিকারকে কেন্দ্র করে অনেক বড় দেশ বাংলাদেশের ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের তিরস্কারমূলক ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া আমরা লক্ষ করছি। এই প্রতিক্রিয়া দিয়েও ব্রিকসে যোগ দেওয়ার বর্তমান সিদ্ধান্তকে ব্যাখ্যার সুযোগ থাকে।

প্রশ্ন

বাংলাদেশ সার্ক, বিমসটেক, ডি-৮-এর মতো জোটে আছে। এসব জোটেরও লক্ষ্য ছিল নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানো। খুব লাভ হয়েছে আমরা তেমনটা দেখতে পাইনি। ব্রিকসের প্রধান দুই দেশ থেকে বাংলাদেশ প্রচুর কাঁচামাল আমদানি করে। তাহলে ব্রিকস থেকে আমরা কী সুবিধা পেতে পারি?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: সেই কারণে বোঝার ব্যাপার আছে আমরা আসলে ঠিক কী কারণে ব্রিকসে যাচ্ছি। এই কারণ কি রাজনৈতিক, না অর্থনৈতিক? না কি আমরা উন্নয়ন চিন্তা থেকে ব্রিকসে যাচ্ছি।

প্রশ্ন

সেটা কি পরিষ্কার নয়?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: দেখুন, বিষয়টি জটিল। এই মুহূর্তে ব্রিকসের সাফল্যের জায়গাটা বাণিজ্যে না, বিনিয়োগে না, প্রযুক্তি হস্তান্তরেও না। যা আছে তা হলো উন্নয়নের অর্থায়ন। নতুন উন্নয়ন ব্যাংক হয়েছে, বাংলাদেশ যার সদস্যও হয়েছে। ভারত ও চীন আমাদের আমদানির মূল উৎস, আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের বাজার। এটা প্রতিযোগিতামূলক বাজার নয়, আমাদের জন্য বিশেষ সুবিধার বাজার। বিনিয়োগ, রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও তারা বড় ভূমিকা পালন করে। তাই রাজনৈতিক বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বলেন, উন্নয়ন মাপকাঠিতে বলেন, এ ক্ষেত্রে একটা বিশেষ বিবেচনা কাজ করে।

জি-৭ বাদ দিলে পৃথিবীতে কার্যকরভাবে যে জোট কাজ করছে, সেটি জি-২০। বাকিগুলো আড়ম্বরপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই আমার জানতে চাওয়া, বাংলাদেশ যে ব্রিকসে যেতে চাইছে, তার আসল উদ্দেশ্যটা কী। আসল উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক, এটা চটজলদি মনে হয় না। বাংলাদেশ আসলে একধরনের রাজনৈতিক সংহতি খুঁজছে।

প্রশ্ন

আপনি ব্রিকসের অর্জনের প্রসঙ্গে বলছিলেন। ব্রিকস গঠিত হয়েছে অনেক দিন। এখন পর্যন্ত ফলাফল কী কিংবা কতটা অগ্রগতি হয়েছে এই জোটের?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: দেখুন, ব্রিকসের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনেক বড়, কিন্তু এখন পর্যন্ত অর্জন সীমিত। কারণ, একভাবে তারা চায় চলমান বৈশ্বিক ব্যবস্থার সংস্কার, যেখানে দক্ষিণের কণ্ঠস্বর জোরদার হবে। একই সময়ে তারা বিকল্পও চায়। কিন্তু বিকল্প করার জন্য যে সামর্থ্য, শক্তি, সিদ্ধান্ত দরকার, সেটা তাদের নেই। ভারত, চীন, রাশিয়ার দিকে তাকালে তা বোঝা যায়। আবার ব্রাজিল কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় সরকার পরিবর্তন হলে তাদের চিন্তায় পরিবর্তন ঘটে। এখন পর্যন্ত ব্রিকস একটি যৌথ দক্ষিণী কণ্ঠস্বর। এদের কারও কারও আকাঙ্ক্ষা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হওয়া। তাহলে কি দক্ষিণের কিছু দেশ উত্তরের অংশ হতে চাইছে? যদি তা-ই হয়, তাহলে প্রশ্ন ওঠে, এখানে ছোটদের ব্যবহার করা হচ্ছে কি না।

প্রশ্ন

ব্রিকস মূলত বাণিজ্য জোট। জোটে ভারত আছে, চীন আছে। আছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার মতো বামপন্থী নেতা। তাই এর রাজনৈতিক চরিত্র নিয়েও অনেকে কথা বলেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: কোভিড অতিমারির সঙ্গে বৈশ্বিক টানাপোড়েন, পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়া, টিকার প্রাপ্যতা—এ সবকিছু মিলে নতুন ধরনের উপলব্ধি হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর অপরাজেয় ইমেজে দাগ লেগেছে। বিকাশমান অর্থনীতির দেশগুলো তাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে। আমরা দেখছি, তারা বিকল্প মুদ্রা খুঁজছে, বিকল্প বাণিজ্যব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে। তবে অর্থনৈতিক প্রত্যাশার দিক থেকে তারা একদিকে এগোলেও তাদের রাজনৈতিক ও ভূকৌশলগত অবস্থান বিপরীতমুখী। ফলে অর্থনৈতিক যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা অর্জন করা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের জন্য এটি একটি জটিল পরিস্থিতি। এই মুহূর্তে ব্রিকসে বাংলাদেশের যাওয়ার প্রেরণা কোথা থেকে আসছে—আমি আবার বলি, এটা আসছে যতটা না অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, তার চেয়েও বেশি রাজনৈতিক কৌশলগত দিক থেকে। বর্তমানে সরকার উন্নত বিশ্বের দিক থেকে একধরনের চাপের মুখে অবস্থান করছে— রাজনৈতিকভাবে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে, মানবাধিকারের প্রশ্নে, নির্বাচনের প্রশ্নে। এই প্রশ্নগুলোকে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে দেশ হিসেবে যে আমরা একা নই, সেটা দেখানোর জন্য আমরা একত্র হচ্ছি। ব্রিকস কীভাবে সম্প্রসারিত হবে, তার নীতিমালা বা পদ্ধতি এখনো ঠিক হয়নি। কিন্তু যদি হতো, তাহলে আমাদের সঙ্গে উন্নত বিশ্বের এই মুহূর্তে যে বৈপরীত্য রয়েছে, তাকে কি আরও গভীর করে দিত? তাকে কি আরও বেশি সংকটপূর্ণ করে দিত? এই প্রশ্নগুলো সামনে আসছে।

প্রশ্ন

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা প্রশ্ন তুলেছেন, ডলারের বাইরে আরেকটি মুদ্রা দিয়ে কেন বাণিজ্য করা যাবে না? ডি-ডলারাইজেশনের কথাবার্তা এখন জোরেশোরে হচ্ছে। ব্রিকসকে ঘিরে বিশ্ববাণিজ্যে কি একটা মার্কিন বিরোধী বলয় হতে যাচ্ছে?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: ডি-ডলারাইজেশনের ব্যাপারটা বাস্তবের সঙ্গে ঠিক মেলে না। তবে একটা চেষ্টা আছে। আমরা অনেক সময় যেমনটা বলি, আওয়াজ দেওয়া হচ্ছে।

প্রশ্ন

কিন্তু এ নিয়ে কথাবার্তা আছে, একধরনের রাজনৈতিক সুরও শোনা যায়। এর ফলে বাংলাদেশ কি কোনো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে রপ্তানির প্রধান গন্তব্য দেশগুলো যেহেতু ব্রিকসে নেই?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: আমরা বলি ব্রিকস। ওই যে বি, ওটা তো বাংলাদেশ না। ওই যে আর, সেটা তো রুয়ান্ডা না। মনে রাখতে হবে, দক্ষিণের ভেতরেও দক্ষিণ আছে। দক্ষিণের ভেতরে উত্তর আছে। অর্থাৎ এখানে ভারত আছে, চীন আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য পরস্পর নির্ভরশীল। আর আমার দেশের বাণিজ্য কিন্তু অনেকটাই পশ্চিমের ওপর নির্ভরশীল।

বড়রা তর্ক-বিতর্ক করতে পারে, কিন্তু আমি আসরের কোন দিকে বসছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এটাই ঝুঁকির জায়গা। ইতিমধ্যে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অংশগ্রহণের যে চাপ আমাদের ওপরে আছে, সেটা প্রকাশ পেয়েছে। ব্রিকসে যোগ দেওয়ার অভিলাষের কথা বলা হলেও আমাদের দেখতে হবে, বড়দের খেলায় অংশ নিয়ে আমি না আবার ক্রসফায়ারে পড়ে যাই। এই আশঙ্কাটা বৃদ্ধি পায়, যখন পাশ্চাত্য দেশগুলোর একধরনের বিপরীতমুখী আচরণের ভেতরে আমরা অবস্থান করছি।

প্রশ্ন

২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জিডিপির অর্ধেকের বেশি ব্রিকসের দেশগুলো থেকে আসতে পারে বলে অনেকের ধারণা। সুতরাং এটাও তো ঠিক যে ব্রিকসের মতো জোটে যোগ দিলে ভবিষ্যতে পণ্য বিক্রির সুযোগ তৈরি হতে পারে?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: বাজার তো আছে, কিন্তু মূল বিষয় হলো আপনি কী তৈরি করেন। বাংলাদেশ যা তৈরি করে, সেটা ভারতও তৈরি করে, চীনও তৈরি করে। যদিও তাদের মজুরি বাড়ার কারণে আমাদের সস্তা কাপড় সেসব দেশে ঢুকতে পারছে। আমাদের মূল বাজার উন্নত বিশ্বে। আগামী দু-এক দশকে এটা পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরোনোর পরও আমরা এসব বাজারে সুবিধা পাব। দক্ষিণের দেশ থেকে কি আমরা এই সুবিধা পাব? চীন ও ভারত যে শূন্য শুল্কের সুবিধা অব্যাহত রাখবে, এই নিশ্চয়তা এখনো পাওয়া যায়নি।

প্রশ্ন

ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্য বাংলাদেশ। ব্রিকসে আরও দেশ যোগ দিতে পারে। এই জোট থেকে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কতটা থাকবে?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: ব্রিকসের প্রধান দেশগুলোর জন্য আমরা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল খুলে বসে আছি। ভারতকে আমরা তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দিয়েছি। এখন পর্যন্ত তারা বেড়াটেড়া তুলেছে। কিন্তু বিনিয়োগ তো এল না। চীনের বিনিয়োগ আগের চেয়ে একটু বেশি এসেছে। আমি সাহায্যের কথা বলছি না বা সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটের কথাও বলছি না। আমি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের কথা বলছি।

আরেকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিওর বাইরে যেসব মেগা রিজওনাল ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যেমন আরসেপ (রিজওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ), এমন মহা আঞ্চলিক ব্যবস্থা অথবা বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার জন্য আমার উৎপাদন সক্ষমতা আছে, এমন দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের জন্য মহা আঞ্চলিক অথবা বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার চেয়ে নিঃসন্দেহে সর্বজনীন ব্যবস্থা উন্নততর। তুলনামূলক দুর্বল দেশগুলোকে ডব্লিউটিওর মতো ব্যবস্থাই সবচেয়ে ভালো সুরক্ষা দেয়।

প্রশ্ন

দক্ষিণ আফ্রিকায় আগস্টে ব্রিকসের সম্মেলনে বাংলাদেশের আবেদন বিবেচনা করা হতে পারে। চীন বলেছে তারা বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের কৌশল তাহলে এখন কী হওয়া উচিত?

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: ব্রিকসে যারা সদস্য হতে চায়, তারাও দেখবে সদস্য হলে তাদের ওপর কী প্রভাব পড়তে পারে। মনে রাখতে হবে, ব্রিকসের একটি দেশ রাশিয়া, যার সঙ্গে অনেক দেশ এখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুদ্ধে লিপ্ত। কোনো কোনো দেশ আবার হয়তো রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চাইবে। সুতরাং এখানে বহুবিধ আচরণ থাকবে।

ব্রিকসে গেলে বাংলাদেশের মতো একটি দেশকে খুবই বিচক্ষণতা, দক্ষতা, তৎপরতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। আমরা যেটা বলি, আপনি কৌশলগত অংশগ্রহণ করবেন, আবার একই সঙ্গে কৌশলগত দূরত্বও বজায় রাখবেন। আমরা যে বলি, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়—এর বাস্তব প্রতিফলন কী হবে? এটা হবে, সবার সঙ্গেই অংশগ্রহণ করব, কিন্তু আবার কৌশলগত দূরত্বও বজায় রাখব।

তবে দেশ যখন একটা অনিশ্চিত নির্বাচনী পরিবেশে ঢুকছে, একটা রাজনৈতিক উত্তরণের দিকে যাচ্ছে, তখন এ ধরনের কুশলী আচরণ আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। তার জন্য সময় ও মেধা খরচ করতে হবে, একটি ধ্রুবতারা ঠিক করতে হবে। এর ওপর নির্ভর করবে আগামী দিনে কী কৌশল নিতে হবে। সে কারণেই বলছি, সময়টা খুব সহজ নয়।

প্রশ্ন

আপনাকে ধন্যবাদ।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: আপনাকেও ধন্যবাদ।