অভিবাসন ও উদ্বাস্তু বিশেষজ্ঞ সি আর আবরার। চার দশক ধরে অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। বর্তমানে অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রামরুর নির্বাহী পরিচালক। করোনাকালে অভিবাসীদের বিভিন্ন সংকট, মানব পাচার ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মহিউদ্দিন।
প্রথম আলো: সাম্প্রতিক সময়ে ভূমধ্যসাগর থেকে নিয়মিত উদ্ধার হচ্ছেন অভিবাসীরা, মারাও যাচ্ছেন। আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দরিদ্র দেশগুলোর বাসিন্দাদের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও আছেন। দেশের অর্থনীতি ভালো হচ্ছে, তাহলে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন কেন বাংলাদেশিরা?
সি আর আবরার: অর্থনীতিবিদেরা এটাকে বলে থাকেন ‘জবলেস গ্রোথ’। এখানে চাকরির সুযোগ-সুবিধা সেভাবে তৈরি হচ্ছে না। যার ফলে দেশের বাইরে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। আর ইউরোপ তো অনেকের স্বপ্নের জায়গা। সেখানে দক্ষ কর্মীর পাশাপাশি অদক্ষ বা আধা দক্ষ কর্মীর চাহিদা আছে, যা পূরণের আনুষ্ঠানিক উপায় তারা রাখেনি। তাদের অভিবাসনবিরোধী রাজনীতির কারণেই এটা হয়েছে। চাহিদা ও জোগানের পার্থক্যটাই সেখানে অবৈধভাবে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়।
বাংলাদেশ থেকে একটা অংশ তৃতীয় দেশ লিবিয়া বা অন্য কোনো দেশ হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাচ্ছে। আরেকটা অংশ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থেকে দ্বিতীয়বার অভিবাসন করছে। এখানে দালালদের একটা সংঘবদ্ধ চক্র আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছে। কোনো রকম জবাবদিহি ছাড়াই এ দালাল চক্র কাজ করছে। ভূমধ্যসাগরে দুর্ঘটনা ঘটলে সরকার তৎপর হয়ে ওঠে। এরপর আর কোনো কার্যক্রম দেখা যায় না।
প্রথম আলো: করোনার প্রভাবে অভিবাসনের নামে মানব পাচার বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল আগে থেকেই। এটি প্রতিরোধে সরকার আসলে কী করেছে?
সি আর আবরার: অবৈধ উপায়ে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতার পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু এটি প্রতিরোধে দৃশ্যমান বা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ভূমধ্যসাগরের সাম্প্রতিক ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে। শ্রমিকেরা কীভাবে যাবে, তাদের টিকা, কোয়ারেন্টিন (সঙ্গনিরোধ), উড়োজাহাজের টিকিট নিয়ে সরকার ব্যস্ত ছিল, অন্য দিকগুলো তেমন গুরুত্ব পায়নি। এগুলো ঠিক প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় নয়, স্বরাষ্ট্র বা অন্য মন্ত্রণালয়ের করার কথা। কিন্তু তাদের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। বরং দুষ্টচক্র তাদের কাজটা গুছিয়ে নিয়ে করোনার সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছে। কর্মসংস্থানের চাহিদা আছে। কিন্তু বৈধ পথে কর্মী পাঠানোর সুযোগ নেই। এই সুযোগই নিচ্ছে দালাল চক্র।
প্রথম আলো: দেশে করোনা সংক্রমণের দেড় বছরে বিভিন্ন সিদ্ধান্তে প্রবাসীরা হয়রানি, ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। তাঁরা একাধিকবার রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে দাবি আদায় করেছেন। কেন এটা করতে হচ্ছে প্রবাসীদের?
সি আর আবরার: একটা সংকটের মধ্যে রয়েছে পুরো বিশ্ব। কিন্তু গত দেড় বছরে কিছু কিছু প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাওয়া গেছে। এটি যথাযথভাবে না করায় নানা সমস্যার মধ্যে পড়েছেন অভিবাসীরা। এর মধ্যে কর্মী গ্রহণকারী দেশগুলো একের পর এক সমস্যা তৈরি করছে। তারা একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা আমাদের সরকারকে বিভিন্ন সময় বিপাকের মধ্যে ফেলছে। ভিসা নবায়ন, ফ্লাইট বাতিল ও কোয়ারেন্টিন নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত কর্মীদের চরমভাবে ভুগিয়েছে। আবার বিদেশে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও দেশে আকস্মিকভাবে ফ্লাইট বাতিলের ঘটনা দেখা গেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের অভাব প্রকটভাবে সামনে এসেছে। যার ফলে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন অভিবাসীরা। অভিবাসীরা প্রতিবাদ করলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের অভিযোগ তোলা হয়। কিন্তু তাঁদের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা তো রাখা হয়নি।
প্রথম আলো: মহামারির মধ্যে ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ থেকে প্রতারিত হয়ে ফিরে আসা প্রবাসীদের কারাগারে যেতে হলো।
সি আর আবরার: তিন দফায় বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরা কর্মীদের কারাগারে যেতে হয়েছে। সেনাবাহিনীর অধীনে তাঁরা কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। অথচ সেখানে বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তুলে ১৫ দিনের বেশি ডিটেনশনে তাঁদের রাখা হলো। এটা তো আইনগতভাবে সরকার করতে পারে না। এরপর নাগরিক সমাজের মাধ্যমে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে তাঁরা ছাড়া পেলেন। তাঁদের লাখ লাখ টাকা খরচ ছাড়াও মানসিক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কে নিল, কেন নিল, এটা তো জানতে চাই। এটা যদি না জানানো হয়, তাহলে একই ঘটনা আবার হবে। এটি নিশ্চিত করা না হলে যাঁদের দায়িত্ব পালন করার কথা, তাঁরা দায়িত্বশীল হবেন না। সরকারের বড় দায়িত্ব হচ্ছে, যাঁরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত, তাঁরা যেন মর্যাদা পান। সম্মানের সঙ্গে যেন তাঁরা অধিকার ভোগ করেন।
প্রথম আলো: করোনার প্রভাবে কয়েক লাখ প্রবাসী ফিরে এসেছেন দেশে। কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে নানা কার্যক্রম থাকলেও ফিরে আসা কর্মীদের পুনর্বাসনে তেমন বড় কার্যক্রম নেই দেশে। করোনার সময় এটি বড়ভাবে সামনে এসেছে।
সি আর আবরার: এটা পুরো এশিয়া অঞ্চলের প্রবণতা। কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে নানা কিছু করা হয়। কিন্তু ফিরে আসার পর পুনরেকত্রীকরণ নিয়ে তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। নাগরিক সমাজ, উন্নয়ন সংস্থাও একই দোষে দুষ্ট। দাতা সংস্থারও এ খাতে আগ্রহ কম দেখা যায়। অথচ কর্মী যাওয়ার আগে থেকে পুনরেকত্রীকরণের পরিকল্পনা করা উচিত। যাতে কর্মীরা আয় করে ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করতে পারেন। কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, পুনরেকত্রীকরণে তার চেয়ে কম গুরুত্ব দেওয়া যাবে না।
মহামারির সময় দেখা গেছে, সরকারের পুনরেকত্রীকরণের ধারণা মূলত ঋণকেন্দ্রিক। সেই ঋণের পুরো টাকা সরকার দিচ্ছে না। একটি অংশ আসছে শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিল থেকে। ফিরে আসা সব কর্মী কিন্তু সম্ভাব্য উদ্যোক্তা নন, এটা বিবেচনায় নিতে হবে। পুরোনো ব্যবসায়ীরাই যেখানে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে নতুন উদ্যোক্তাদের সফল হওয়ার সুযোগটাও বিবেচনায় নিতে হবে। যাঁরা উদ্যোক্তা হতে চান, তাঁদের ব্যবসায়িক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কিছু না করে শুধু ঋণ দিলে হবে না। এসব ক্ষেত্রে খুব একটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
প্রথম আলো: উড়োজাহাজের টিকিটের দাম কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। প্রবাসীদের জন্য লেবার ফেয়ার চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। বিমান মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দিয়েছে প্রবাসী মন্ত্রণালয়। কিন্তু কাজ হয়নি।
সি আর আবরার: এটা অবশ্যই ন্যায্য দাবি। তৈরি পোশাকসহ বেসরকারি খাতে নানা রকম ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। অন্যরা হাজার হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি পেলে, এ খাতে নয় কেন? মন্ত্রণালয় তো যথাযথ বিবেচনা ছাড়া চিঠি দেয়নি। আর এটি না হলে, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করুক, কলকাতা বা কাঠমান্ডু থেকে যে খরচে কর্মীরা বিদেশে যাচ্ছেন, ঢাকা থেকেও যেন একই খরচে যেতে পারেন। এখানে কেন ৬০ শতাংশ বেশি খরচ দিতে হবে?
রিক্রুটিং এজেন্সির একজন স্বত্বাধিকারী জানালেন, ঢাকা থেকে কোয়ারেন্টিনসহ সৌদি আরবে পাঠাতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাগছে। একই প্যাকেজ তিনি সৌদি নিয়োগকর্তার মাধ্যমে ব্যবস্থা করে ৯০ হাজার টাকায় শ্রমিক পাঠাচ্ছেন। কেন এমন হবে, কাউকে না কাউকে তো এর দায় নিতে হবে? এগুলো করতে পারলেই শ্রমিকবান্ধব হিসেবে সরকার নিজেকে দাবি করতে পারবে।
প্রথম আলো: সর্বশেষ অর্থবছরে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। অথচ বাজেটে সর্বনিম্ন বরাদ্দের দিক থেকে দ্বিতীয় প্রবাসী মন্ত্রণালয়। প্রবাসীদের পেছনে সরকারের বিনিয়োগ কি ঠিক পথে আছে বলে মনে করেন?
সি আর আবরার: প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে বিভিন্ন সময় যতটুকু শুনেছি, টাকা প্রাপ্তিতে কোনো ঘাটতি নেই। বাজেট চাইলেই পাওয়া যাবে। তার অর্থ দাঁড়ায় পরিকল্পনায় হয়তো ঘাটতি রয়েছে। বিভিন্ন দেশে কর্মীদের সেবা দেওয়ার জন্য দূতাবাসগুলোতে পর্যাপ্ত জনবল নেই। কোনো কোনো দেশে এটি কয়েক গুণ বাড়ানো দরকার। তার জন্য তো বিনিয়োগ প্রয়োজন।
খরচ করার জন্য বিস্তারিত পরিকল্পনা লাগবে। এ কাজগুলো হয়তো করতে না পারায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। আবার ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে বেশ কিছু খাতে খরচ করা হয়, যা সরকারের উন্নয়ন বাজেট বা রাজস্ব বাজেট থেকে আসা দরকার।
দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মূলত অবকাঠামোতে জোর দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বানানো হচ্ছে। কিন্তু সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী যথাযথ প্রশিক্ষণ এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন দেশের চাহিদা বুঝে কর্মী তৈরি করা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য, পর্যটনসহ সেবা খাতে ব্যাপক চাহিদা উন্নত দেশে। এসব খাতে কর্মী তৈরিতে বিনিয়োগ হচ্ছে না। সনাতনী চিন্তায় চলছে বৈদেশিক কর্মসংস্থান। প্রয়োজনে ভারত, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন থেকে প্রশিক্ষক আনা দরকার। যোগ্য লোকদের যুক্ত করে সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার।
প্রথম আলো: প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা ও প্রবাসীদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। বাজেটে এটা বিবেচনা করা হয়নি।
সি আর আবরার: দুটোই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রবাসী আয়ের প্রবাহে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। ৪ শতাংশ না হোক, অন্তত ৩ শতাংশ করার প্রত্যাশা ছিল। এটি না হওয়ায় হতাশ হয়েছি। হুন্ডির চাহিদা কমে যাওয়ায় করোনাকালে বৈধ পথে টাকা আসা বেড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, হুন্ডি আবার শুরু হবে এবং প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কিছুটা হলেও কমে যাওয়ার শঙ্কা আছে। প্রবাহ ধরে রাখার জন্যই প্রণোদনা বাড়ানোর দরকার ছিল। সরকার তো অনেক খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে, এ খাতে দিলেও তা অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনত।
প্রথম আলো: বৈদেশিক কর্মসংস্থানে সরকারের ভূমিকা আসলে কতটুকু? দীর্ঘ সময়েও নতুন শ্রমবাজার তৈরি করা যায়নি। মাঝে মাঝে ঘটা করে কিছু শ্রমবাজার চালুর কথা বলা হয়, যেখানে আসলে কর্মী যেতে পারে হাতে গোনা। কোথায় সমস্যা দেখছেন?
সি আর আবরার: অনেক সংকট আছে, যা এখনো সমাধানের অপেক্ষায়। আরব আমিরাতের বাজার খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু সেটি ধরে রাখা যায়নি। অনেক দিন ধরে এ বাজার ঢিমেতালে চলছে। সিন্ডিকেটের জন্য মালয়েশিয়ার দুয়ার বন্ধ হয়েছে। যাঁদের নামে অভিযোগ, তাঁদের বিরুদ্ধেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নতুন করে বাজার খোলার সমঝোতায়ও আগের সেই সিন্ডিকেট প্রভাব বিস্তার করছে বলে শোনা যাচ্ছে। সম্ভাবনাময় বাজার ধরে রাখতে পারছি না। আবার নতুন বাজারও সেভাবে তৈরি করা যাচ্ছে না। কোনো কোনো দেশে অল্প কিছু কর্মী যাচ্ছে, তাকে ঠিক নতুন বাজার বলা যায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রবাসীরাই নতুন কর্মী নিয়ে যান। বৈদেশিক কর্মসংস্থানে রাষ্ট্রের ভূমিকা গৌণ বলা যায়।
প্রথম আলো: প্রবাসী কর্মসংস্থানের গন্তব্য দেশটির সঙ্গে সমঝোতা করে কর্মীর জন্য সুবিধা আদায়ে বড় ঘাটতি আছে। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন পারছে, বাংলাদেশ কেন পারছে না?
সি আর আবরার: ফিলিপাইনের মতো তো কোনোভাবেই পারছে না। সৌদি আরবে কোয়ারেন্টিনের খরচ দিতে রাজি হয়নি ফিলিপাইন। তারা এটি সৌদির নিয়োগকর্তার কাছ থেকে নিতে বলেছে। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিপাইনের দূতাবাসগুলোর মূল কাজ হলো, অভিবাসী কর্মীদের দেখভাল করা। দেশেও রিক্রুটিং এজেন্সির একজন স্বত্বাধিকারী জানালেন, তিনি আলোচনা করে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে ৫০ শতাংশ কোয়ারেন্টিন খরচ আদায় করেছেন। এটিই তো সরকারের করার কথা। কর্মী গ্রহীতা রাষ্ট্রের সরকার ও বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতা করতে পারে। গ্রহীতা রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সময় নিজেদের দুর্বল ভাবলে সে দুর্বলতার সুযোগ তারা নেয়। অভিবাসীরা তো বলেন, অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের কর্মীদের অবস্থা তুলনামূলকভাবে সঙিন। করোনার সময় অনেক কর্মী তাঁদের ন্যায্য পাওনা ফেলে এসেছেন। তাঁদের ন্যায্য প্রাপ্তি ও ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। এটিও দুই পক্ষের সরকারের দায়িত্ব।