সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

মুন্সিগঞ্জে মাঠটি দখলমুক্ত করা হোক

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভা অফিসের পাশে সাড়ে তিন একরের মাঠটি পড়ে আছে প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায়। অথচ ৫৮ বছর পুরোনো এই মাঠ একসময় খেলোয়াড়দের পদচারণে মুখর ছিল।

এই মাঠে খেলেছেন উপমহাদেশের বিখ্যাত ফুটবলাররা। নানা ধরনের ব্যবসার পসার বসিয়ে মাঠটির সৌন্দর্যহানি করা হয়েছে। সেখানে এখন আর খেলার পরিবেশ নেই।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, এটি মুন্সিগঞ্জের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী মাঠ। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাঠে একসময় নিয়মিত খেলা হতো। এই মাঠে খেলেছেন শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার পাকির আলী, প্রেম লাল, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, আশরাফউদ্দিন আহমদ ওরফে চুন্নু, গোলাম রাব্বানী হেলাল, শহিদুর রহমান সান্টু প্রমুখ। স্বাধীনতার পরও মাঠটিতে নিয়মিত খেলা হতো।

কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে মাঠে এখন আর খেলা হয় না; কাঠের ব্যবসা হয়, কোরবানির পশুর হাটে বসে। এমনকি গড়ে উঠেছে ফলের আড়তও। এতে হয়তো পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কিছু অর্থ উপার্জন করছে, কিন্তু তারা যে এলাকার মানুষকে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রেখেছে, তার প্রতিকার কী। কাঠের ব্যবসার কারণে মাঠে পেরেক পড়ে থাকে। ফলে সেখানে খেলা সম্ভব নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব খেলার মাঠ পুনরুদ্ধার করে শিশু-কিশোরদের খেলার সুযোগ তৈরি করে দিতে বলেছেন। অথচ মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র আবদুস সালাম মাঠটি উদ্ধার না করার পক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছেন, পাশে আরও একটি মাঠ আছে। তাঁর এ যুক্তি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। যেহেতু আলোচ্য মাঠটি আগে তৈরি হয়েছে, এটি খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। তা ছাড়া একাধিক মাঠ থাকলেই যে তার একটি দখলে রাখতে হবে, সেটি কেন হবে?

রহস্যজনক কারণে আবদুস সালাম জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন সময় ঐতিহ্যবাহী মাঠটি পুনরুদ্ধারের বিরোধিতা করলেন, যখন সারা দেশে মাঠ পুনরুদ্ধার করার পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে। সদর উপজেলার ইউএনও হোসাইন মো. আল জুনায়েদ মাঠটি পুনরুদ্ধার করে খেলার উপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন। আমরা তাঁর এ সদিচ্ছাকে স্বাগত জানাই।

একই সঙ্গে পৌরসভা মেয়রের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, তিনি যেন প্রকৃত জনপ্রতিনিধির মতো দায়িত্বশীল হন। আমরা আশাবাদী হতে চাই, ঐতিহ্যবাহী মাঠটি উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি ছেলেমেয়েদের খেলার সুযোগ অবারিত করবেন।