অর্ধলক্ষ মানুষের ভোগান্তি দূর করুন

দেশের সড়ক যোগাযোগে প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পাকা বা পিচঢালা সড়ক চলে গেছে। কিন্তু সেসব সড়ক কতটা টেকসই হয়েছে? প্রকল্প বাস্তবায়নে দফায় দফায় সময় ও বরাদ্দ বাড়ানো হয়, কিন্তু কাজে নানা অবহেলা বা অনিয়ম থেকে যায়। ফলে সড়কগুলো বেশি দিন টেকে না। একবার বেহাল হলে সংস্কারহীন পড়ে থাকে দীর্ঘদিন ধরে। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ে, পড়ে জনজীবনে নানা নেতিবাচক প্রভাব। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মতলব পৌরসভায় একটি সড়ক নিয়ে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মতলব পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংক সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার হয় ২০১৭ সালে। পৌরসভাটির উদ্যোগে এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়কের সংস্কারকাজে ব্যয় হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করে। এরপর সেটির আর সংস্কার হয়নি। ফলে সড়কটির বেশির ভাগ স্থানেই পিচঢালাই উঠে গিয়ে ইট, খোয়া ও বালু বের হয়ে আছে। এসব স্থানে তৈরি হয়েছে শতাধিক ছোট-বড় গর্ত। গর্তে বৃষ্টির পানি ও আবর্জনা জমে থাকায় এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

পৌরসভা এলাকা ছাড়াও চাঁদপুর জেলা সদর, জেলার বাবুরহাট, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর ও হাজীগঞ্জ এলাকার লোকজন এ সড়কপথে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী ও নারায়ণগঞ্জে কম সময় ও টাকায় চলাচল করেন। সড়কটিতে প্রতিদিন কয়েক শ যানবাহন চলাচল করে। অথচ বছরখানেক ধরে সড়কটির এ নাজুক অবস্থা থাকলেও এটি সংস্কারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।

স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, বৃষ্টি হলে রাস্তায় গর্তে পানি জমে ছোটখাটো পুকুরের মতো হয়ে যায়। যানবাহন তো দূরের কথা, হাঁটাচলাই করা যায় না সড়কটিতে। খানাখন্দ থাকায় এ সড়ক দিয়ে রিকশা ও অটোরিকশাচালকেরা আসতে চান না। এলেও দ্বিগুণ-তিন গুণ ভাড়া রাখেন। সড়কটি দিয়ে চলাচলের সময় প্রতি মাসে ১৫–২০টি দুর্ঘটনা ঘটছে। আহত হচ্ছেন। 

এলাকাবাসী সড়কটি মেরামতের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানালেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য দুই মাস আগে সওজের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়েও পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে সংস্কার শুরু হবে। 

আমরা আশা করব, সওজ কার্যালয় থেকে দ্রুত এ সড়কের জন্য বরাদ্দ ছাড় করা হবে এবং সেটির সংস্কারকাজও শুরু হবে।