সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

শ্রমিকদের ভোগান্তি দ্রুত নিরসন করুন

বিসিক শিল্পনগরীগুলোর নানা সমস্যা-সংকট সংবাদমাধ্যমগুলোতে নিয়মিতই উঠে আসে। বিভিন্ন জেলায় বিসিকের শিল্পনগরীতে অনেক শিল্পপ্লট খালি পড়ে আছে। আবার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার দিক থেকেও পিছিয়ে আছে অনেক বিসিক শিল্পনগরী। অনেক শিল্পনগরীতে বেহাল হয়ে আছে সড়ক।

যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটী বিসিক শিল্পনগরীতে প্রবেশের প্রধান একটি সড়কের ক্ষেত্রে। সড়কের নির্মাণকাজ চললেও তা তিন মাস ধরে বন্ধ। এতে শিল্পনগরীতে চলাচল করা শ্রমিকেরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ফতুল্লার পঞ্চবটী বিসিক শিল্পনগরীতে রপ্তানিমুখী নিট গার্মেন্টসসহ সাড়ে ছয় শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। শিল্পনগরীতে যাতায়াতের জন্য দুটি প্রধান সড়ক আছে। একটি সড়ক ও পানিনিষ্কাশনের নালা নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০২০-২১ অর্থবছরে।

আড়াই কোটি টাকায় কাজটি পায় বিএম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। করোনার সময় কাজ বন্ধ থাকায় পরে মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্পটি দেওয়া হয় নার্গিস এন্টারপ্রাইজ নামের আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। গত বছরের অক্টোবরে আরসিসি ঢালাইয়ের জন্য তারা সড়কে ইটের খোয়া ফেলে। এর পর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে।

শিল্পনগরীতে কাজ করেন আড়াই লাখ শ্রমিক। নির্মাণাধীন সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক চলাচল করেন। সড়কটি খোঁড়াখুঁড়ির পর ইটের খোয়া ফেলে রাখায় এর ওপর দিয়ে হাঁটতে গিয়ে তাঁদের নিয়মিত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। চলাচল করতে গিয়ে অনেকে আহতও হচ্ছেন। এ ছাড়া সড়ক বন্ধ থাকায় দূর থেকে মালামাল ওঠানামা করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। শিল্পমালিক ও শ্রমিকদের অভিযোগ, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাঁদের।

সড়কটির নির্মাণকাজ নিয়ে পরস্পরকে দুষছেন ঠিকাদার ও শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদারের দাবি, বিসিকের প্রকৌশলীরা জটিলতা তৈরি করে বিল পরিশোধ না করায় কাজ বন্ধ হয়ে আছে। বিল পেলে দ্রুত কাজ শেষ করা হবে। অন্যদিকে বিসিক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, নিয়ম অনুযায়ী কাজ শেষ করে বিল নিতে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে সড়কের নির্মাণকাজ থমকে আছে। দুই পক্ষের মাঝখানে পড়ে ভুক্তভোগী হচ্ছেন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশি ক্রেতাদের এখানে আনার উপায় নেই। মালামাল ওঠানামায় শ্রমিকদের পেছনে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। প্রয়োজনে অর্থ দিয়ে হলেও তাঁরা নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানান।

একটি সড়ক নির্মাণে এভাবে বছরের পর বছর চলে যাবে, তা কোনোভাবে মানা যায় না। ঠিকাদার ও শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষকে এখানে সমঝোতায় আসতে হবে। অভিযোগের তির না ছুড়ে পরস্পরকে সহযোগিতার মধ্য দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সড়কের কাজটি শেষ করুন।