সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা রহস্যজনক

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের পশ্চিম পাশে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন প্যাঁচার দ্বীপের ভরাখালে লাগানো বিশাল প্যারাবন দখল করে তাতে তৈরি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ ফুট লম্বা দুটি সীমানাদেয়াল। এক্সকাভেটর দিয়ে যেখানে মাটির বাঁধ ও যান চলাচলের রাস্তা তৈরি হচ্ছে, সেখানে ‘কিংশুক ফার্মস লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড দেখা গেছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ঢাকার এই প্রতিষ্ঠানকে প্যারাবন দখলে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য কামাল আহমদ ওরফে কামাল মেম্বার। প্যারাবনের বিরানভূমির কিছু অংশ ভরাটের পর সেখানে রিসোর্ট তৈরি করার কথা আছে। আর কিছু অংশে হবে মৎস্য খামার।

প্যারাবন উজাড়ের অংশটি পড়েছে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হিমছড়ি এলাকায়। বন কর্মকর্তারা বলেছেন, প্যারাবনের জায়গাটি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। ব্যবস্থা নিলে রামু উপজেলা প্রশাসন নিতে পারে। তবে রামুর ইউএনও বলেছেন, প্যারাবনের জায়গাটি বন বিভাগের হতে পারে।

দুই পক্ষের দায় এড়ানোর পেছনে কী রহস্য আছে, সেটা খুঁজে বের করা দরকার। এটি খাসজমির খতিয়ানভুক্ত হলে ইউপি সদস্য বিক্রি করলেন কীভাবে? আর বন বিভাগের হলে তাঁরা কিছু বলছেন না কেন? এ প্রসঙ্গে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) যা বলেছেন, তা-ও গ্রহণযোগ্য নয়।

প্যারাবন নিধন করে সীমানাপ্রাচীর, বেড়িবাঁধ ও যান চলাচলের রাস্তা তৈরির কথা তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে কেন? গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো সূত্র খবরটি পাওয়ার পর তার উচিত ছিল সরেজমিনে স্থানটি পরিদর্শন করা এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

প্রথম আলো অনলাইনে খবরটি প্রকাশের পর বন বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গেছেন। তাঁরা বলেছেন, বন উজাড়ের কাজ এখন বন্ধ আছে। অথচ সেখানকার বাসিন্দারা বলেছেন, কাজ চলছে। খাসজমি হোক কিংবা বন বিভাগের হোক, সেখানে প্রতিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো মৎস্য খামার কিংবা রিসোর্ট করা যাবে না। এটা পরিবেশ ও বন আইনেরও পরিপন্থী।