সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

ফুটবলে মাগুরার স্কুলটিকে আরও এগিয়ে নিন

সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে নতুন জোয়ার সৃষ্টি করেছেন। বলতে গেলে, দীর্ঘদিন পর ফুটবল নিয়ে পুরো দেশ মেতে উঠল। সাফজয়ী সাবিনা, কৃষ্ণা, ঋতুপর্ণা, রুপনা, সানজিদারা অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের আরও কিশোরীদের কাছে।

রংপুর, খাগড়াছড়ি, টাঙ্গাইল, সাতক্ষীরার মতো প্রত্যন্ত জেলার একেকটি বিদ্যালয় থেকে উঠে এসেছেন আজকের সাফজয়ী মেয়েরা। মাগুরায় তেমনই একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গোয়ালদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এবার নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন দলে থাকা সাথি বিশ্বাস ও ইতি রানী মণ্ডল এ বিদ্যালয়েরই প্রাক্তন শিক্ষার্থী।

ফুটবলে শ্রীপুর উপজেলার বিদ্যালয়টির সাফল্য রীতিমতো ঈর্ষণীয়। সেখানকার মেয়েরা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ড কাপে টানা সাতবারের মতো জেলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রতিপক্ষকে ৯-০ গোলে হারিয়ে সর্বশেষ জেলা চ্যাম্পিয়ন হয় বিদ্যালয়টি।

জেলা পর্যায়ে একটি ম্যাচও হারেনি গোয়ালদহের মেয়েরা। মোট পাঁচ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ৩৭টি গোল দিয়েছে তারা। বিপরীতে তাদের একটি গোলও হজম করতে হয়নি। বিদ্যালয়ের সামনে ২০ শতকের ছোট একটি মাঠে অনুশীলন করেই টানা সাফল্য ধরে রেখেছে সেখানকার মেয়েরা। সেখান থেকে বেড়ে ওঠা ১২ জনের বেশি মেয়ে বয়সভিত্তিক জাতীয় দল ও বিকেএসপিতে (বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) খেলছে। ফুটবলে তাদের সবার ‘পায়েখড়ি’ ছোট এ মাঠ থেকেই।

ছোট মাঠটিকে ঘিরেই ২০১২ সাল থেকে মেয়েদের ফুটবল খেলা নিয়ে কাজ শুরু করে বিদ্যালয়টি। মাঠের দুই পাশে স্কুলের ভবন, এক পাশে বসতবাড়ি, আরেক পাশে বাঁশের ঝাড়। এর মধ্যে ছোট জায়গায় প্রতিদিন বিকেলে চলে অনুশীলন, টুর্নামেন্ট সামনে রেখে সকালেও।

এভাবেই একের পর এক ফুটবলকন্যা তৈরি করছে এ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এমন প্রতিবন্ধকতার মধ্যে সেটি আর কত দিন? তাই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেয়েদের ফুটবল অনুশীলনের জন্য বড় একটি মাঠের দাবি জানিয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকদের ভাষ্য, সাফের সাফল্য আবারও প্রমাণ করেছে তৃণমূল থেকেই খেলোয়াড় তৈরি হয়। গোয়ালদহের মেয়েরা একটি ভালো মাঠ পেলে আরও দুর্দান্ত সাফল্য এনে দেবে।

মাঠের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসক সে আবেদন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে সেটি আবেদনেই থমকে আছে।

এ ছাড়া জাতীয় দলে খেলা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও গত জানুয়ারিতে বড় মাঠের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন জানান। আমরা আশা করছি, গোয়ালদহের বিদ্যালয়টির মেয়েদের জন্য অবিলম্বে বড় একটি মাঠের ব্যবস্থা করা হবে।