সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

দ্রুত ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম শুরু হোক

রাজধানী ঢাকার যানজট সমস্যা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু সড়কে এখন কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁদের এই অংশগ্রহণ অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু এভাবে কত দিন? ট্রাফিক পুলিশকেই এর নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করা হয়। মূলত তখন থেকে ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম শিথিল হয়ে পড়ে। সরকার পতনের পর কোথাও কোনো ট্রাফিক পুলিশই নেই। এটি শুধু রাজধানী ঢাকার চিত্র নয়, বিভাগীয় শহরগুলোসহ সব জায়গায় অনেকটা একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সব জায়গায় ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের সময় ও সরকার পতনের পর সংঘর্ষ–সহিংসতায় দেশের অনেক জায়গায় থানা, ফাঁড়ি আক্রান্ত হয়। আন্দোলন ঠেকাতে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে বিপুল প্রাণহানির কারণে পুলিশ এমন জন–আক্রোশের মুখে পড়ে। এতে অনেক পুলিশ নিহতও হন। ফলে আতঙ্কে পুলিশশূন্য হয়ে যায় দেশের প্রায় সব থানা। তিন দিন পর ধীরে ধীরে এখন পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। এর মধ্যে দেশের বেশির ভাগ থানায় পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এখন ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রমও শুরু করে দেওয়া উচিত হবে।

পুলিশের ওপর মানুষ ক্ষুব্ধ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। সেসব নিয়ে পুলিশ বাহিনীর ভেতরে ও বাইরে আলোচনা চলছে এবং বাহিনীটির সংস্কারের দাবিও উঠেছে। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের ওপর মানুষের সেই অর্থে জন–আক্রোশ থাকার কথা নয়। কারণ, আন্দোলন দমনে তাঁদের ভূমিকা ছিল না, থাকার কথাও নয়। কারণ, তাঁদের কার্যক্রমই সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখা। তবে তঁাদের নিয়মিত কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন আছে এবং এ নিয়ে মানুষের ক্ষোভও আছে। কিন্তু এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষও উপলব্ধি করতে পারছে, থানা–পুলিশি কার্যক্রমের পাশাপাশি রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রমও জোরেশোরে শুরু করা দরকার।

শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁদের আমরা বাহবা দিচ্ছি। অনেক মানুষ তাঁদের খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজের প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই। কিন্তু এটিও মনে রাখতে হবে, শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষিত নন। এখানে আইন ও নীতিমালা আছে, সেগুলো তাঁদের জানা না থাকাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া সড়কে যেকোনো দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন শিক্ষার্থীরা। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব শহরে দ্রুত ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম শুরু করুন।

 আশা করি, জনসাধারণ ও সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ ট্রাফিক পুলিশের প্রতি আন্তরিক হবে এবং দায়িত্ব পালনে তাঁদের সহযোগিতা করবে।