সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

গাইবান্ধার বেহাল ব্যারাক

দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সচেষ্ট হোন

দেশে জলবায়ু উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। মূলত নদীভাঙনের শিকার এসব মানুষের বেশির ভাগ। এর মধ্যে দারিদ্র্য মোকাবিলাও নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। তবে বর্তমান সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীন এসব মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তুলেছে। এতে লাখো পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। এটি অবশ্যই ইতিবাচক। তবে এসব আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর একবার সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর করার পর সেগুলোর আর খোঁজখবর রাখেনি সরকারি কর্তৃপক্ষ। ফলে অনেক জায়গায় এসব ঘর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে বসবাসকারীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী কাপাসিয়া ও হরিপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলে সরকার, যা ব্যারাক নামে পরিচিত। ২০১০ সালে নির্মাণ করা এ ব্যারাকে ঠাঁই পায় মোট ৪৬০টি দরিদ্র গৃহহীন পরিবার। কিন্তু নির্মাণের ১৪ বছরেও ব্যারাকের ঘরগুলো সংস্কার করা হয়নি। ফলে ঘরগুলোর বেশির ভাগই বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সে অবস্থাতেই নিরুপায় হয়ে বসবাস করছে পরিবারগুলো।

ব্যারাকের ঘরগুলোর টিনের বেড়া ও চালা নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকে বেশি খারাপ টিনগুলো সরিয়ে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন। কোনো কোনো ঘর হেলে পড়েছে। চালার টিন ফুটো হয়ে গেছে। যাঁদের ঘর পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে, তাঁরা আত্মীয়স্বজন ও অন্যের বাড়িতে বসবাস করছেন। এবারের শীতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বসবাসকারীরা। বৃষ্টির মৌসুমেও কষ্টের শেষ নেই তাঁদের। ঘরের ভেতরে পানি পড়ে। পানিতে বিছানা ও আসবাব ভিজে যায়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ওয়ালিফ মণ্ডল বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। এরপর মেরামতের জন্য কোনো বরাদ্দ আসেনি। তাই এগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। বিধ্বস্ত ঘরগুলো নতুনভাবে নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে সংস্কার করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ‘আমি নিজে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকগুলো পরিদর্শন করেছি। বসবাসের অনুপযোগী ব্যারাকগুলো নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবহিত করেছি।’

আমরা পিআইও ও ইউএনওর বক্তব্য আশ্বস্ত হতে চাই। আশা করি, ব্যারাক সংস্কারে বরাদ্দ পেতে তাঁরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাবেন। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরও এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমরা। গাইবান্ধার প্রত্যন্ত চর এলাকার এসব মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে, এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।