সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র

শ্রীপুরের চিকিৎসালয়টি দ্রুত চালু করুন

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত চিকিৎসা অবকাঠামো গড়ে উঠলেও চিকিৎসার সুবিধা মানুষ কতটা ভোগ করতে পারে, তা নিয়ে অনেক সময় প্রশ্ন ওঠে। ভবন আছে, যন্ত্র নেই, যন্ত্র থাকলেও সচল নেই; কোথাও পড়ে থেকে নষ্ট হয় অত্যাধুনিক ভবনও।

স্বাস্থ্য খাতের অনেক সাফল্যের মধ্যে এসব অব্যবস্থাপনার কথা যে স্বাস্থ্যকর্তাদের জানা নেই, তা নয়। এরপরও আমাদের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী এলাকায় মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের দুরবস্থা আমাদের দেখতে হয়। ফলে স্থানীয় শিশু ও মায়েরা এখান থেকে তেমন একটা স্বাস্থ্যসুবিধা পাচ্ছেন না।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটি আসলে নামেই একটি চিকিৎসালয়। ছয় বছর আগে কেন্দ্রটির বহুতল ভবন নির্মাণ শেষ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে ভবনের ফটক, বারান্দা ও ভবন চলে গেছে নার্সারি ব্যবসায়ীর দখলে।

অনেক কসরত করে রোগীদের এ হাসপাতালে যেতে হয়। ভবনের নিচতলায় সীমিত পরিসরে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মীরা। শয্যা, যন্ত্রপাতি ও আনুষঙ্গিক উপকরণ না দেওয়ায় প্রথম ও দ্বিতীয় তলা এখনো পড়ে আছে।

শুধু যন্ত্রপাতিসংকটই নয়, লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি কেন্দ্রটিতে। চিকিৎসকের দুটি পদ থাকলেও ছয় বছরে তা পূরণ করা হয়নি। শূন্য পড়ে আছে নার্সের চারটি পদ। এ ছাড়া পরিদর্শকের তিনটি, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর তিনটি পদও শূন্য। চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে লোকজন না থাকায় মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটিতে মূল কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে, তা বলতে পারছেন না কেউই। এই সুযোগে ভবনের ফটক ও আশপাশের স্থান দখল করে নার্সারি স্থাপন করে ব্যবসা করছেন এক ব্যক্তি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি হওয়ায় স্থানীয় মানুষ অনেক আশার আলো দেখেছিল। তারা এখন হতাশ। কারণ, মা ও শিশুর পরিচর্যায় কেন্দ্রটির যে ভূমিকা রাখার কথা, কেন্দ্রটি তা রাখতে পারছে না। কথা হচ্ছে, ভবন হয়ে যাওয়ার পরও সেটির কার্যক্রম চালু করতে কেন এত বছর লাগছে?

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লোকবল নিয়োগ করে ওই কেন্দ্র চালু করার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’ তবে এখানে অবশ্যই জেলা-উপজেলা কর্মকর্তাদের ব্যর্থতার কথা বলতেই হয়। এত বছরেও এর সমাধান করতে পারেননি তাঁরা। আমরা আশা করব, দ্রুত লোকবল নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে কেন্দ্রটি দ্রুত চালু করা হবে।