সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

ভাঙা সেতু

বকশীগঞ্জে পাঁচ গ্রামের দুর্ভোগ দূর করুন

প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি সেতু বা একটি সড়ক শুধু যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতিই ঘটায় না, সেখানকার আর্থসামাজিক অবস্থানেও বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নে একটি খালের ওপর নির্মিত এমন একটি সেতু পাঁচ গ্রামের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করেছিল। সেই সঙ্গে উপজেলার সঙ্গে গ্রামগুলোর যোগাযোগের মাধ্যমও ছিল সেটি। কিন্তু পাঁচ বছর আগে ভয়াবহ বন্যায় সে সেতু ভেঙে যায়। নতুন সেতু না হওয়ায় পাঁচ গ্রামের মানুষ আছে নিত্যভোগান্তিতে। আরেকটি সেতু হওয়ার প্রত্যাশায় কত বছর অপেক্ষা করতে হবে, সেটিই প্রশ্ন তাদের।

সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বাঙ্গালপাড়া গ্রামে খালের ওপর ছিল ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির অবস্থান। সেতুটির পশ্চিম পাশের বাঙ্গালপাড়া, গাজীরপাড়া, চর গাজীরপাড়া, কুতুবেরচর ও দপরপাড়া গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল সেতুটি। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে বকশীগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা হয়। সে সময় পুরো সেতু পানির তোড়ে ভেঙে ভেসে যায়। খালের দুই পাড়ে সেতুর কয়েকটি কংক্রিটের টুকরা রয়েছে শুধু। সেতু না থাকায় এখন ওই পাঁচ গ্রামের সঙ্গে উপজেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভোগান্তিতে পড়ে এসব গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।

শুষ্ক মৌসুমে খালে কম পানি থাকে, ফলে হেঁটে খাল পার হওয়া যায়। তবে খালটি বিশাল হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে নৌকায় চলাচল করতে হয়। আগে সেতু পার হয়ে মাত্র ১০ মিনিটে উপজেলা শহরে যাওয়া যেত। এখন যানবাহন নিয়ে উপজেলা শহরে যেতে হলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হয়। এতে গ্রামবাসীর অর্থ ও সময়ের অপচয় হয়। এ ছাড়া উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ কঠিনতর হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনিক নানা কাজ ব্যাহত হচ্ছে তাদের।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্য, নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু এর কোনো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. শামছুল হক বলেন, ওই খালের ওপর নতুন একটি সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই স্থান পরিদর্শন করেছে। আশা করা যায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।

আমরা উপজেলা প্রকৌশলীর বক্তব্যে আস্থা রাখতে চাই। নতুন সেতু নির্মাণে আর দীর্ঘসূত্রতা না হোক, সেটিই কাম্য।