সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

চক্রের হোতাদের ধরতে হবে

কয়েক মাস ধরে সিলেটে ভারতীয় চিনি চোরাচালান চরম আকার ধারণ করেছে। সিলেটের সীমান্ত এলাকাগুলো চিনি চোরাচালানের রীতিমতো নিরাপদ রুট। ট্রাকে ট্রাকে চোরাই চিনি সিলেট নগরীতে ঢুকছে এবং তা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এমনকি দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চোরাচালান। চিনিবোঝাই ট্রাক আটক করা হচ্ছে, কোটি টাকার চোরাই চিনিও উদ্ধার করা হচ্ছে ও অনেককে গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবে বন্ধ হচ্ছে না চোরাচালান। মূল হোতাদের না ধরলে এ চোরাচালান থামবে না বলেই সচেতন মহল মনে করছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দেশে চলমান কারফিউর মধ্যেও সিলেটে ভারতীয় চিনি চোরাচালান থেমে নেই। ২৪ থেকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে পাঁচটি অভিযানে অন্তত ২৯ টন ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়েছে। চোরাচালানে সম্পৃক্ততার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১২ জন। স্থানীয় লোকজন বলছেন, কারফিউ থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সুযোগে অনেক চোরাকারবারি ভারত থেকে চোরাই পণ্য আনছেন। সুযোগ বুঝে সেগুলো বিভিন্ন গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সামান্য কিছু ধরা পড়ছে।

দেশে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশি মুনাফা করতে ভারত থেকে চোরাই পথে কম দামে চিনি আনছে অনেকগুলো চক্র। সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোয় এসব চিনি চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত অনেকগুলো চক্র। পত্রিকার মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, চিনিসহ ভারতীয় পণ্য চোরাচালানে ক্ষমতাসীন দল ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তাও এর সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে চোরাই পণ্য বহনকারী ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার হলেও চক্রের মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

তবে সিলেট জেলার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, চোরাচালান রোধে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে জেলা পুলিশ। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুধীসমাজ ও সচেতন নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অপরাধ নির্মূলে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।

আমরা সিলেট জেলা পুলিশের এ বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি সমন্বিত কার্যক্রমের মধ্যেও চিনি চোরাচালান বন্ধ না হওয়ায় উদ্বেগ জানাই। মূল চক্রকে না ধরলে এ চোরাচালান শিগগিরই বন্ধ হওয়ার নয়, সেই উপলব্ধি তাদের হোক।