সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

দুই বছর ধরে সংস্কারহীন সেতু

১৪ গ্রামের মানুষের কষ্টের অবসান হোক

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বন্যায় সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। এতে দুর্যোগপীড়িত মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ে। পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা–বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, সেতু বা কালভার্ট সংস্কারে গুরুত্ব দিয়ে থাকে সরকার। বড় বরাদ্দও ছাড় হয়।

তবে অনেক সময় সংস্কারহীন পড়ে থাকে সড়ক বা সেতু। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নে। সেখানকার মোহাম্মদপুর উত্তরপাড়া গ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের একটি শাখাখালের ওপর নির্মিত সেতু দুই বছর ধরে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে ১৪টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০১৩ সালে ১০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এর ফলে গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সঙ্গে বকশীগঞ্জ শহরের যোগাযোগ সহজ হয়ে যায়। সেতুটির পূর্ব পাশে মালমারা, কুমিরদহ, আগুনের চর, মহলগিরি, নাপিতের চর, শেখের চর, কাছিমারচর ও বুলকিপাড়া গ্রাম।

সেতুটির পশ্চিম পাশে সুভুকুঁড়া, মোহাম্মদপুর উত্তরপাড়া, ফকিরপাড়া, পুড়ারচর, চর বাবনা ও মরাকান্দি গ্রাম। দুই পাশে অনেকগুলো গ্রাম ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় সেখানে সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে ২০২০ সালে সেতুটি ধসে পড়ে। এ কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষকে। চর এলাকা হওয়ায় সেখানকার কৃষকেরা অসুবিধায় পড়েছেন। উৎপাদিত কৃষিপণ্য উপজেলা শহরে নিয়ে বিক্রি করতে ঘুরতে হচ্ছে অতিরিক্ত পথ।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনেক ধরনা দেওয়ার পর সেতুর পাশ দিয়ে মাটি কেটে চলাচল করা হয়। কিন্তু দুই বছরেও সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যানবাহনের চলাচল না থাকায় ১৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বর্ষা মৌসুমে চলাচলের রাস্তাটিও পানিতে তলিয়ে যায়। জামালপুর এলজিইডি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিকল্প হিসেবে সেখানে একটি ডাইভারশন সড়ক করে দেওয়া হয়েছে। একটি নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হবে।

সেতু নির্মাণের উদ্যোগের কথা বলা হলেও সময়ক্ষেপণের বিষয়টি নতুন কিছু না। আমরা চাইব, এ ক্ষেত্রে তেমনটি যেন না ঘটে। গোয়ালেরচরে সেতুটি নির্মাণের বিষয়টি যেন আশ্বাসেই আটকে না থাকে। আমরা এলজিইডি কর্তৃপক্ষের বক্তব্যে আস্থা রাখতে চাই।