কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও পরবর্তী সংঘর্ষ-সহিংস পরিস্থিতিতে গোটা দেশ কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। ধীরে ধীরে জনজীবনে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। তবে গত কয়েক দিনে আন্তর্জাতিক রুটে অনেক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় আটকে পড়েছেন অনেক প্রবাসী। ফলে দুর্ভোগের পাশাপাশি একধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তাঁরা।
গত শুক্র, শনি ও রোববার তিনটি এয়ারলাইনস কোম্পানি আন্তর্জাতিক রুটে ১৭টি ফ্লাইট বাতিল করে। কয়েক গুণ বেশি খরচ করে দূরদূরান্ত থেকে প্রবাসীরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। এখন ফ্লাইট বাতিল হওয়ার পর বিমানবন্দরেই তাঁরা অপেক্ষা করছেন। এখন না তাঁরা প্রবাসে যেতে পারছেন, না তাঁরা আবারও কারফিউর মধ্যে ঘরে ফিরতে পারছেন। অনেকে হজ ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে উঠলেও সেখানে গুনতে হচ্ছে কয়েক গুণ কক্ষভাড়া।
দৈনিক বণিক বার্তা বলছে, ১৯ ও ২০ জুলাই সৌদি এয়ারলাইনসের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়। সেখানে চারটি ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ১ হাজার ২০০ জন। সৌদি আরবে যাওয়ার সব ফ্লাইটের জন্য বিমানবন্দরে যাত্রীরা এখন অপেক্ষা করছেন। ফ্লাইটগুলো ঠিক কখন ছেড়ে যাবে, সে ব্যাপারে এয়ারলাইনসগুলো যাত্রীদের নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। এর মধ্যে অনেকের ভিসার মেয়াদ দুই থেকে সাত দিন পর্যন্ত হওয়ায় তাঁদের সৌদি আরব যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মালয়েশিয়াগামী ফ্লাইটসহ অন্য ফ্লাইটগুলোর ক্ষেত্রেও কমবেশি এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, যেসব ভিসার মেয়াদ এর মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, সেসব কর্মীর ভিসার মেয়াদ ১৫ দিন বাড়ানোর জন্য সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অন্যদিকে সোমবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মোহাম্মদ ফারুক খান বলেন, আটকে পড়া সৌদিপ্রবাসীদের বিমানের মাধ্যমে সৌদিতে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।
আমরা আশা করব, ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় সফল হবে। নয়তো অনেক প্রবাসী কর্মহারা হতে পারেন। এতে তিনি বা তাঁর পরিবারই শুধু ভুক্তভোগী হবেন না, দেশও রেমিট্যান্স হারাবে। আর বিমানের মাধ্যমে প্রবাসীদের সৌদিতে পাঠানোর চেষ্টাটিও কার্যে পরিণত হোক।
গত কয়েক দিনে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু থাকলেও বিভিন্ন রুটে কয়েক গুণ বেশি দামে টিকিট কিনতে বাধ্য হয়েছেন যাত্রীরা। আগেও নানা সময়ে এমনটি আমরা দেখেছি। মন্ত্রীর বক্তব্য, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। এমনটি ঘটে থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। আমরা তাঁর ওপর আস্থা রাখতে চাই।