সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনে ই-পেমেন্ট

এবার ভোগান্তির অবসান হোক

নাগরিক সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে ভোগান্তি ও দুর্ভোগের উদাহরণ হিসেবে যে কয়েকটি বিষয় সামনে চলে আসে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন। এ নিয়ে অভিযোগ ও সমালোচনার শেষ নেই। শুরু থেকেই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতা ও বাড়তি অর্থ লেনদেনের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের সেবা।

তবে দেরিতে হলেও প্রক্রিয়াটিকে বেগবান করতে ও ভোগান্তি দূর করতে এগিয়ে এসেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। চালু হয়েছে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য ফি পরিশোধে ই-পেমেন্ট। নতুন আবেদন ও সংশোধনের জন্য অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এখন থেকে এ ফি দেওয়া যাবে। তবে শুরুতে ই-পেমেন্ট করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলেও এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গত এপ্রিল থেকে কয়েকটি উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ই-পেমেন্ট শুরু করে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়। এখন দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় এ সেবা চালু আছে। সর্বশেষ গত রোববার সব পৌরসভায় ই-পেমেন্ট চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশে মোট ১২টি সিটি করপোরেশন ও ৩২৮টি পৌরসভা (কার্যকর) রয়েছে। তার মানে, বিপুলসংখ্যক মানুষ এখন জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনে এ সুবিধা পাচ্ছেন এবং ভোগান্তি থেকে রেহাই পাচ্ছেন।

তবে ই-পেমেন্টে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কোনো কোনো আবেদনকারী। যেমন কেউ জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে গিয়ে টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। আবার কারও মুঠোফোন নম্বর সঠিক নয় বলে জানানো হচ্ছে, কিন্তু সেটি পরিবর্তন করতে বলায় জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু যাঁদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাঁরা ই-পেমেন্টও করতে পারছেন না। অনেকে ই-পেমেন্টে টাকা পরিশোধ করতে না পেরে ঘোরাঘুরি করছেন। কিন্তু এসব সমস্যার সমাধান কী, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও তা বলতে পারছেন না।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সেবা নিতে গিয়ে এমন সমস্যা দেখা গেছে। তবে রেজিস্ট্রার জেনারেল, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের বক্তব্য, ই-পেমেন্ট পাইলট আকারে করাই হয়েছে কী কী সমস্যা উঠে আসে, তা দেখার জন্য।

যখন যে সমস্যা আসছে, সেগুলো সমাধান করা হচ্ছে। কোনো সমস্যা না পেলে ধাপে ধাপে ইউনিয়ন পরিষদে এটি শুরু হতে পারে। অনেক বেশি সমস্যা এলে সেগুলো সামলানোর জন্য লোকবল আছে কি না, তা দেখে অগ্রসর হতে হবে।

আমরা আশা করব, সমস্যাগুলো দ্রুত নিরসন করা হবে। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের পুরো কার্যক্রমটি কার্যকর ডিজিটাল সেবায় পরিণত হোক।