সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

মৌলভীবাজার কারিগরি কলেজ 

শূন্য পদে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দিন

আসন্ন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে বিশ্বব্যাপী যে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে, তার আলোকে সরকার কারিগরি শিক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলে আসছে। সরকার দাবি করে আসছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া তো হচ্ছেই, পাশাপাশি যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তিগত ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, সরকার তাদেরও সহায়তা করছে। 

কিন্তু মাঠপর্যায়ের বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সরকারের এসব ঘোষণার যে খুব একটা মিল নেই, তার বড় উদাহরণ মৌলভীবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ। সেখানে শিক্ষক-কর্মচারীর ঘাটতির কারণে শ্রেণি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে রয়েছে। অথচ এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের যে ভূমিকা দৃশ্যমান, তাকে উদাসীনতা বলা অন্যায্য হবে না। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, মৌলভীবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে শিক্ষকের পদ আছে ৪৪টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ১১ জন। এখানে ৩৩টি পদই শূন্য। অর্থাৎ চার ভাগের তিন ভাগ শিক্ষকই নেই। অন্যদিকে কর্মচারীর ২৬টি পদের ১৭টি পদই শূন্য। এই জনবল দিয়ে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে ৫৯৭ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই শূন্যতা বিদ্যমান।

প্রতিষ্ঠানটিতে সাধারণ পাঠ্যসূচির সঙ্গে কারিগরি বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করা হয়। এর বাইরে আছে হাউসকিপিং, ড্রাইভিং ও কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্সের মতো স্বল্পমেয়াদি বিভিন্ন কোর্স। কারিগরি শিক্ষা হাতে-কলমে লেখার বিষয়। এখানে ওয়েল্ডিং, অটোমোবাইলসের মতো বিষয় শুধু ঘরে বসে বই পড়ে আত্মস্থ করার বিষয় নয়। সত্যিকারের কারিগরি দক্ষতায় যুবসমাজকে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সক্ষম পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক ও প্রশিক্ষক থাকা জরুরি। 

মনে রাখা দরকার, আমাদের যে শ্রমশক্তি বিদেশে কাজ করতে যায়, তার বড় একটি অংশ অদক্ষ। অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে তাঁরা দেশে তো বটেই, বিদেশের মাটিতেও তুলনামূলক কম উপার্জন করতে পারেন। কিন্তু তঁাদের যদি কারিগরি দিক থেকে প্রশিক্ষিত করা যায়, তাহলে তাঁদের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

এসবদিকবিবেচনায়রেখেশুধুমৌলভীবাজারেরএইপ্রতিষ্ঠানইশুধুনয়, দেশেরঅন্যান্যকারিগরিশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরদিকেনজরদেওয়াদরকার।