অন্যরাও উদ্যোগ নিতে পারে

'ময়মনসিংহ হেল্পলাইন'

কারও রক্তের প্রয়োজন, কারও জাতীয় পরিচয়পত্র বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাগজ হারিয়ে গেছে, কেউ জানতে চান বাস বা ট্রেনের সময়সূচি, কারও দরকার কোনো চিকিৎসকের ঠিকানা বা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঠিকানা অথবা কমিউনিটি সেন্টারের ঠিকানা। কোনো চিন্তা নেই, ‘ময়মনসিংহ হেল্পলাইন’ নামের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিলেই পাওয়া যাচ্ছে সমাধান। বুধবার প্রথম আলোয় এই ফেসবুক গ্রুপের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে দেশে এ রকম আরও সহযোগিতামূলক ফেসবুক গ্রুপের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা ও জামালপুর জেলার তথ্যবিষয়ক সহযোগিতা এই গ্রুপে পাওয়া যায়। এই গ্রুপে বর্তমানে ১৬ জন অ্যাডমিন আছেন, যাঁদের বেশির ভাগই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। গ্রুপের সদস্যসংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। যেকোনো পোস্ট প্রথমে অ্যাডমিনরা পড়ে দেখেন। যদি আপত্তিকর না হয়, তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যে সেই পোস্টটি ময়মনসিংহ হেল্পলাইনে দেওয়া হয়। এই গ্রুপে সব ধরনের সহযোগিতামূলক পোস্ট অনুমোদন করা হলেও অর্থ সহযোগিতার কোনো পোস্ট দেওয়া হয় না। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে বিতর্ক এড়াতে অর্থ সহযোগিতার বিষয়টি এড়িয়ে চলার নীতি গ্রহণ করেছে ময়মনসিংহ হেল্পলাইন। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার পোস্ট জমা পড়ে এই গ্রুপে। সমাধানও পাওয়া যাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটি অনন্য একটি উদ্যোগ। 

ময়মনসিংহ হেল্পলাইনকে অনুসরণ করে দেশের অন্যান্য জেলার মানুষও নিজের এলাকার লোকজনকে সহায়তার জন্য একই ধরনের ফেসবুক গ্রুপ চালু করতে পারে। প্রতিটি জেলার জন্য এ ধরনের ফেসবুক গ্রুপ গড়ে উঠলে অনেক মানুষ উপকৃত হবে। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে মানুষের সমস্যার কোনো অন্ত নেই। কোনো দুর্ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়লে অনেক সময় মানুষজন ভেবে পায় না যে তারা কী করবে বা কোথায় গেলে সাহায্য পাবে। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের ফেসবুক গ্রুপ থাকলে তারা সহায়তা পেতে পারে। আর এখন প্রায় সবার কাছেই ইন্টারনেট সংযোগসহ মোবাইল ফোন থাকে। এ ধরনের সহযোগিতামূলক ফেসবুক গ্রুপ থাকলে সহজেই মানুষজন তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারবে।

তবে শুধু ফেসবুক গ্রুপ গড়ে উঠলেই হবে না। এসব গ্রুপ সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে। এ ধরনের কার্যক্রমের প্রচার বাড়ানোর লক্ষ্যে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, যানবাহন, যাত্রীছাউনি, হাসপাতাল, বাড়িঘর, দোকানপাটে এসব ফেসবুক গ্রুপের উপযোগিতাসংবলিত স্টিকার লাগানো যেতে পারে। গ্রাহকদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো যেতে পারে। মোটকথা প্রচারণা দরকার। জনগণ যদি বিষয়টি না জানে, তবে এ ধরনের গ্রুপ চালু করে ফল পাওয়া যাবে না।