গোটা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করতে সরকারের প্রচেষ্টায় ঘাটতি নেই। দুর্গম পাহাড় থেকে প্রত্যন্ত চর এলাকায় পর্যন্ত এখন বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দিতে বিদ্যুতের অভাব নিয়ে কৃষকদের অভিযোগও ঘুচে যাচ্ছে। এরপরও স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎসেবা নিয়ে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। যার মধ্যে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল রীতিমতো আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেক জায়গায়। যে কারণে বিপাকে পড়েছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের মানুষ। সেখানকার ৭০০ গ্রাহক অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলে রীতিমতো নাকাল। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিতে তাঁরা ক্ষুব্ধ।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা যায়, একজন কৃষকের প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে পাঁচ শ টাকার মতো। চলতি মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকার বিল দেখে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে আছেন তিনি। এখন এই করোনাকালে আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্যে এত টাকার বিল তিনি কীভাবে পরিশোধ করবেন, সেই দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। এভাবে ১০-২০ গুণ বিদ্যুৎ বিল পেয়ে দিশেহারা গ্রামটির বাসিন্দারা। বিষয়টি নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে তাঁদের বলা হয়, বন্যার কারণে নাকি মিটার রিডার ওই এলাকায় যেতে পারেননি। তাই পুরোনো বিলের সঙ্গে সমন্বয় করে চলতি মাসের বিল দেওয়া হয়েছে। সেটিই যদি করা হয়ে থাকে, তাহলে কীভাবে এমন অস্বাভাবিক বিল আসে। পুরোনো বিলের সঙ্গে সমন্বয় করা মানে কি দুই-এক বছরের সব বিল যোগ করে এক মাসে দিয়ে দেওয়া?
স্থানীয় ইউপি সদস্য বলছেন, গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষক ও শ্রমিক। তাঁরা এত টাকা বিল দিতে পারবেন না। মিটার রিডাররা না এসেই আন্দাজে বিল দিয়ে দেন। এখন বলা হচ্ছে চলতি মাসের বিল দিয়ে দেওয়ার জন্য। পরবর্তী মাসে নাকি ঠিক করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপকের দাবি, গরমে বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। এ কারণে বিল বেশি আসতে পারে। মিটারে ব্যবহৃত ইউনিটের সঙ্গে বিলের মিল থাকলে তাহলে তঁাদের করার কিছু নেই। বিল দিতে হবে। কথা হচ্ছে যেখানে মিটার রিডারই যাননি, সেখানে কীভাবে তিনি নিশ্চিত হলেন বিদ্যুৎ বেশি নাকি কম ব্যবহৃত হচ্ছে। বিল সংশোধনের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা আদৌ কার্যকর হবে কি না, সেটি আমরা জানতে চাই। সেই সঙ্গে কেমন এমন অনিয়ম হলো, এর পেছনে কারা যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।