প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মিটারের জন্য টাকা আদায়!

গত মঙ্গলবার প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, পল্লী বিদ্যুতের নাম ভাঙিয়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার কথা বলে একটি মহল ভূঞাপাড়া গ্রামের শতাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রায় আট লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভূঞাপাড়া গ্রামের মো. আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বে খায়রুল ইসলাম, লাল মিয়া, সেকুল মিয়া, আবদুল বারেক ও স্বরূপ আহমেদ পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের খরচ, মিটার ফি, ওয়্যারিং, যন্ত্রপাতি, দ্রুত বিদ্যুৎ–সংযোগ ও অন্য আনুষঙ্গিক খরচের কথা বলে পাঁচ বছর ধরে টাকা আদায় করেছেন।

সর্বশেষ গত বছরের জানুয়ারি মাসেও তাঁরা টাকা আদায় করেন। টাকা না দিলে সহজে বিদ্যুৎ মিলবে না এবং তালিকা থেকে নাম কাটা যাবে বলে তাঁরা হুমকি দেন। কিন্তু অনেক দিন আগে টাকা দিলেও এখনো বাড়িগুলোতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি। এখন যখন ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন, তখন দালালেরা তাঁদের উল্টো গালাগাল, হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন ও মামলার ভয় দেখাচ্ছেন।

সাধারণত পল্লী বিদ্যুতের সংযোগের ক্ষেত্রে শুধু গ্রাহকপ্রতি ৬০০ টাকা জামানত ফি ও ৫০ টাকা সদস্য ফি নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি কোনো টাকা আদায়ের সুযোগই নেই। ভূঞাপাড়া গ্রামের ওই বাসিন্দারা স্পষ্টতই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুস সাত্তার স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন পাতিনেতা। যাঁদের সঙ্গে জোট বেঁধে তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, তাঁরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এমন সব লোকের হাতে গ্রাহকেরাই-বা কেন টাকা তুলে দিলেন, সেটা একটা প্রশ্ন। বোঝাই যাচ্ছে বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়ার নিয়মকানুন না জানার কারণে তাঁরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তবে এভাবে যাঁরা পল্লী বিদ্যুতের নাম ভাঙিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুতের কারও সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এভাবে একদল লোক গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নিচ্ছেন আর পল্লী বিদ্যুতের কেউ কিছু জানেন না, তা হতে পারে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা জরুরি বলে আমরা মনে করি।

এভাবে যাঁরা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, তাঁদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। আর পল্লী বিদ্যুৎ নেত্রকোনা কার্যালয়ের উচিত প্রতারণার শিকার হওয়া এসব গ্রাহকের বাড়িতে অবিলম্বে বিদ্যুৎ–সংযোগ নিশ্চিত করা।