নাব্যতা-সংকট দূর করতে উদ্যোগ নিন

ফেরিজট

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া নৌরুটে নাব্যতা-সংকটসহ অন্যান্য কারণে ঘাটসংকট আর সে কারণে ফেরিজট সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। জনদুর্ভোগ দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত এ সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। 

বুধবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ঘাটসংকটের কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ব্যাপক ফেরিজট দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে, নাব্যতা-সংকটের কারণে ঘাটগুলো উঁচু হয়ে যাওয়ায় সব ঘাট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য জট দেখা দিচ্ছে। এই নৌপথে সাধারণত ১৮টি ফেরি চলাচল করে। এর মধ্যে একটি চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে চলে গেছে। বাকি ১৭টির মধ্যে দুটি বড় ফেরি বিকল হয়ে রয়েছে। চলাচল করছে ১৫টি। ফেরি ভিড়তে পাটুরিয়ায় চারটি এবং দৌলতদিয়ায় ছয়টি ঘাট রয়েছে। পাটুরিয়ার ৪ নম্বর ঘাটের কাছে নাব্যতা-সংকট দূর করতে খননযন্ত্র বসানো হয়েছে। এ কারণে অধিকাংশ সময় এই ঘাটে ফেরি ভিড়তে পারছে না। 

অন্যদিকে দৌলতদিয়া প্রান্তে ছয়টির মধ্যে ভয়াবহ ভাঙনে ১ ও ২ নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে ৩ নম্বর ঘাটও বন্ধ হয়ে গেছে। ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট বিশেষভাবে তৈরি ফেরির জন্য নির্মিত। সব ফেরি এসব ঘাটে ভিড়তে পারে না। নাব্যতা-সংকটের কারণে এক সপ্তাহ ধরে ৬ নম্বর ঘাটও বন্ধ। সচল রয়েছে শুধু ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট। কিন্তু নাব্যতা-সংকটের কারণে ৩ নম্বর ঘাটটি অনেক খাড়া হওয়ায় ফেরিতে গাড়ি ওঠা-নামায় সমস্যা দেখা দেয়। গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। 

নদীতে পলি জমে নাব্যতা-সংকট সৃষ্টি হয় মূলত প্রাকৃতিক কারণে। কিন্তু নিয়মিত খনন না করার কারণে নদ-নদীগুলোতে নাব্যতা-সংকট দিন দিন প্রকট হচ্ছে। নদীমাতৃক দেশ হয়েও সব সময় নিজেদের নৌপথ নির্বিঘ্ন রাখতে না পারা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। যে করেই হোক, নৌপথগুলোকে সচল রাখতে হবে। কেননা, কম খরচে, নিরাপদ ও সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য নৌপথের কোনো বিকল্প নেই। 

এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) অনেক বেশি তৎপর হতে হবে। কারণ, নদী খনন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব মূলত তাদেরই। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের যেসব স্থানে নাব্যতা-সংকট দেখা দিয়েছে, সেসব স্থান দ্রুত খনন করতে হবে। শুধু খনন করলেই হবে না। অপসারণ করা পলি যেন আর কখনোই নদীতে ফিরে না আসে, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিকল হয়ে পড়া ফেরিগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করতে হবে এবং আরও ঘাট নির্মাণ করতে হবে। তা না হলে ফেরিজট লেগেই থাকবে।