মানিকগঞ্জের সবুজ হোসেন নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ঢাকার এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার যে অভিযোগ মঙ্গলবারের প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা সত্য হলে সবুজ হোসেনের বিচার ও যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করাই যথেষ্ট হবে না, তাঁর অপরাধ সংঘটনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁর যে বিকৃত মানসিকতা ও অপরিণামদর্শিতার প্রকাশ ঘটেছে, তা নিয়েও গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।
ছাত্রীর পরিবার ও পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সবুজ ঢাকায় এসে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ওই তরুণীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গেছেন এক অজ্ঞাত স্থানে। সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করেছেন, ধর্ষণের সময় মারধর করেছেন, বিবস্ত্র অবস্থায় মুঠোফোনে তরুণীর ভিডিওচিত্র ধারণ করে এই বলে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন যে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলে তিনি তাঁকে হত্যা করবেন। আইন-বিচার আছে, এমন কোনো সুস্থ-স্বাভাবিক সমাজে কি এমন বিকৃত দুঃসাহস কল্পনা করা যায়? ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনসংক্রান্ত আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান যে দেশে বহাল আছে, সেখানে কেউ এতটা বেপরোয়া হতে পারে কীভাবে?
এই প্রশ্ন তোলার কারণ, অভিযুক্ত সবুজ হোসেনের মতো বিকৃত মানসিকতার ধর্ষকের সংখ্যা এই সমাজে নেহাত কম নয়। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৪৯০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ধর্ষণের পরে মারা গেছেন ৩৮ জন। আরও বিস্ময়কর তথ্য হলো, ধর্ষণের শিকার নারীদের মধ্যে ২৯ জনের বয়স ছিল ছয় বছরের কম, আর ৭ থেকে ১২ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৯ জন!
ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার ও ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে এত বেশিসংখ্যক ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারত না। বিলম্বিত বিচার ও বিচারহীনতার পরিবেশ ধর্ষণপ্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ।
সবুজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।