নবদম্পতিদের নিয়ে কর্মশালা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রশংসনীয় উদ্যোগ

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

বিশ্বায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে পাল্টে গেছে সমাজবাস্তবতা। যৌথ পরিবার তো আগেই ভেঙে গেছে, এখন ছোট পরিবার টিকে রাখা নিয়েও দেখা দিচ্ছে নানা সংকট। বিয়ের পর যেকোনো নবদম্পতির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হাজির হয় বলা যায়। যার কারণে পশ্চিমা দুনিয়ায় বাগ্‌দত্তা যুগল বা নবদম্পতিদের নিয়ে নানা ধরনের কর্মশালা করানো হয়ে থাকে। ইরান, তুরস্কের মতো কিছু মুসলিম দেশেও এমন কর্মশালার কথা শোনা যায়। যেখানে দাম্পত্য, সংসার জীবন, মনোদৈহিক সেবা ও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে সচেতনতা এবং পরামর্শমূলক কর্মসূচি থাকে। ফলে নবদম্পতিদের বৈবাহিক জীবন শুরু করতে দারুণভাবে সহায়ক হয়। বাংলাদেশে এমন কর্মশালার চল বা রীতি গড়ে না উঠলেও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে নিয়মিত কর্মসূচি চালু আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সেটিই এবার হলো এক কর্মশালার মাধ্যমে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নবদম্পতিদের নিয়ে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপজেলার ৩৬ নবদম্পতি অংশ নেন। ‘দাম্পত্য জীবনের শুরুতেই প্রয়োজন পরিবার পরিকল্পনার সঠিক ধারণা’ স্লোগান নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্থানীয় কার্যালয়। পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে নবদম্পতিরা যাতে সঠিক ধারণা পান, সেই লক্ষ্যে তাঁদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কর্মশালায় পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশুর পুষ্টি বিষয়েও ধারণা দেওয়া হয়। তিন মাসের মধ্যে বিয়ে হওয়া নবদম্পতিরা এই কর্মশালায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে দম্পতিদের কোন কোন বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত, সেসব বিষয়েও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক আবদুস সালাম বলেন, সাধারণত নবদম্পতিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরামর্শ দিয়ে আসেন মাঠকর্মীরা। কিন্তু দম্পতিদের একসঙ্গে পাওয়া যায় না। তাই এমন আয়োজন করে পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে তাঁদের ধারণা দেওয়া হয়েছে। শিশু, মাতৃস্বাস্থ্যসহ পরিবার পরিকল্পনায় স্বামী ও স্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনায় সমৃদ্ধ হয়েছেন নবদম্পতিরা। এমন উদ্যোগ নিয়মিত অনুষ্ঠিত হোক। তবে এর কারণে যেন মাঠকর্মীদের তৎপরতা থেমে না যায়, সেটিও খেয়াল রাখতে হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জকে অনুসরণ করে দেশের অন্যান্য উপজেলাতেও এমন কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। পরিবার পরিকল্পনা ছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক আইন ও অপরাধ, নারীর অধিকার, শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতার বিষয়গুলোও এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। এর ফলে সমাজে নারী নির্যাতন, বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা রোধ পাবে। সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন দাম্পত্য জীবনের প্রতি উৎসাহিত হবেন নবদম্পতিরা। স্থানীয় প্রশাসন চাইলেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।