আইসিইউতে ভেন্টিলেটর নেই

শীতকাল আসছে। আশঙ্কা রয়েছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের। গত মার্চে যখন দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়, তখন অনেক হাসপাতালই প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু সাত মাস পরে এসে আর বলা যাবে না যে ‘আমরা প্রস্তুতির সময় পাইনি’। যশোর জেনারেল হাসপাতালে এখনো আসেনি আইসিইউ শয্যা। আইসিইউ ওয়ার্ড প্রস্তুত হলেও ঢাকা থেকে যে আইসিইউ শয্যা আসার কথা, তা আসেনি। দেশের অনেক সরকারি হাসপাতালের অবস্থা এখনো এ রকম।

আমাদের কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার অভিজ্ঞতা স্বস্তিদায়ক নয়। অনেক সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ছিল না, যেখানে ছিল সেখানেও অক্সিজেন সরবরাহ ছিল অপর্যাপ্ত। মনে রাখা দরকার, স্বাস্থ্য খাতে বিগত বছরগুলোতে বরাদ্দের কমতি হয়নি এবং এ খাতে দুর্নীতিও ছিল দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। এ–ও মনে রাখা দরকার, এসব অভাব, অপর্যাপ্ততা, অপ্রস্তুতির পরিণতি মৃত্যু। আইসিইউ না থাকায় যশোরের এ জেনারেল হাসপাতালের সংকটাপন্ন রোগীদের হয় খুলনা, না হয় ঢাকায় পাঠাতে হয়। একুশ শতকের বাংলাদেশে যশোরের মতো জেলা শহরের অন্যতম প্রধান হাসপাতালের চালচিত্র এমন হওয়া মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ইউরোপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শীতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত ও সতর্ক থাকতে বলেছেন। কিন্তু বাস্তবে তাঁর আহ্বানে সাড়া দিতে যে বিলম্ব হচ্ছে, তা যশোর জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা না থাকা থেকেই প্রমাণিত হয়। এ হাসপাতালে ১০ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের জন্য চার মাস আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ছয়টি ভেন্টিলেটর যন্ত্র পাঠানো হয়। কিন্তু বিশেষায়িত শয্যা ও মনিটর এখনো পাঠানো হয়নি। অব্যবহৃত পড়ে থাকা যন্ত্রের কার্যকারিতার জন্য ভালো নয়।

বুধবারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত এ–বিষয়ক সংবাদ থেকে জানা যায়, ঢাকার মহাখালীতে যে কোভিড-১৯ হাসপাতাল হওয়ার কথা ছিল, সেটা আর হচ্ছে না। এ হাসপাতালের জন্য কেনা আইসিইউ শয্যা, মনিটর, ভেন্টিলেটর ইত্যাদি দিয়েই আপাতত দেশের অন্যান্য হাসপাতালের চাহিদা মেটানো হবে। মহাখালীর হাসপাতালটি দরকার ছিল। আর একটি দরকারি হাসপাতাল না হওয়ার সুবাদে অন্যান্য হাসপাতালের ঘাটতি পূরণ হবে, এ জোড়াতালি ব্যবস্থাও মোটেই কাম্য ছিল না।

আশা করি, শীতের আগেই সারা দেশের সব জেলার সরকারি হাসপাতালগুলো করোনা মোকাবিলার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে পারবে।