সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে

অবৈধ বিলবোর্ড স্থাপন

চার বছর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নগরে বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন অবৈধ ঘোষণা করেছিল। এ ঘোষণায় বেশ কাজও হয়েছিল। কেউ যত্রতত্র বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন লাগায়নি। কারও প্রয়োজন হলে ডিএসসিসির অনুমতি নিয়ে লাগিয়েছে। এরই মধ্যে একটি উদ্বেগজনক খবর হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনুমতি ছাড়াই ঢাকা নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ফের বিলবোর্ড বসানো শুরু হয়েছে। 

বুধবার প্রথম আলোর খবরে প্রকাশ, গুলিস্তান ও পল্টন এলাকায় ইতিমধ্যে চারটি বড় আকারের বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি বিলবোর্ডই স্টিলের কাঠামো দিয়ে তৈরি। একেকটি বিলবোর্ড গড়ে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থ। কিন্তু এসব বিলবোর্ড কে বা কারা স্থাপন করেছে, তা খোদ ডিএসসিসিই বলতে পারছে না। 

বিশাল বিশাল বিলবোর্ড নগরের সৌন্দর্য তো হানি করেই, এ ছাড়া নাগরিক নিরাপত্তার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অতীতে ঝড়-তুফানে বিলবোর্ড ভেঙে হতাহত হওয়ার অনেক ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, বিলবোর্ডে যেসব ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানো হতো তা ব্যক্তিগত ও দলীয় উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। এতে আর যা–ই হোক, জনগণের কোনো উপকার হয় না। এসব বিবেচনায় নিয়ে ডিএসসিসি সব ধরনের বিলবোর্ড স্থাপন অবৈধ ঘোষণা করে। পরিবর্তে পণ্য ও ব্যক্তির প্রচারের জন্য দক্ষিণ সিটির বেশ কয়েকটি সড়কে কয়েক শ এলইডি বোর্ড স্থাপন করে। কিন্তু তারপরও নতুন করে অ্যানালগ বিলবোর্ড বসেছে। 

আমাদের দেশে দেখা যায়, কেউ যখন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতে শুরু করে, তখন আরও অনেকে তাকে অনুসরণ করে। বিলবোর্ড স্থাপনের ক্ষেত্রে এমন আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই এ ব্যাপারে ডিএসসিসিসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। 

এমনিতেই ঢাকা শহরের রাস্তায় বের হওয়ার পর চারপাশে তাকালে একধরনের অস্বস্তি হয়। গোটা শহরটাই যেন পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব। পাশাপাশি রয়েছে দেয়াললিখন। এগুলো চোখের আরাম নষ্ট অর্থাৎ দৃশ্যদূষণের সৃষ্টি করে। গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, বাড়ির দেয়াল, পদচারী-সেতুতে, এমনকি ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতেও সাঁটানো হয় দৃশ্যদূষণকারী উপাদান। 

একটি রাজধানী শহরের এমন চিত্র কাম্য নয়। ৪০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক শহরটি বিশ্বের অন্যান্য দেশের রাজধানী শহরের সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার তুলনায় কিছুই নয়। তাই দৃশ্যদূষণের কবল থেকে ঢাকাকে রক্ষা করতে সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। 

ডিএসসিসির বর্জ্য বিভাগ জানিয়েছে, রাজস্ব বিভাগ ও সম্পত্তি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে শিগগিরই বিলবোর্ডগুলো অপসারণ করা হবে। তাই আমরা আশা করছি খুব দ্রুত অবৈধ বিলবোর্ডগুলো অপসারণ হবে। তবে শুধু বিলবোর্ড নয়, যত্রতত্র পোস্টার স্থাপনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারির প্রয়োজন আছে। নগরবাসী মুক্তি পাক অসহনীয় দৃশ্যদূষণ থেকে।