প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, বিদেশিদের যেই চাপই আসুক না কেন, জনগণের স্বার্থে যা করা দরকার, সরকার সেটাই করবে। চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বিদেশিদের চাপ প্রত্যাহারের এই অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এমন অবস্থায় বিরোধী দল প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি বিদেশি হস্তক্ষেপ আছে? চীনা রাষ্ট্রদূতের এমন মন্তব্য কি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে তাদের বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করছে না?
ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন মিশনের রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে, সরকারের নানান মন্ত্রী, উপদেষ্টা, নির্বাচন কমিশনারসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার খবর প্রতিনিয়ত গণমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে। গত বছর পশ্চিমা জোটের ১৪টি দেশের রাষ্ট্রদূত নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি অবাধ, মুক্ত, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনের প্রতি আশা ব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ নিয়ে আলাপ বা উল্লেখ লক্ষণীয়।
১৫ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ডেরেক শোলে ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দূত ও ভবিষ্যৎ কৌশলবিষয়ক সিনিয়র সচিব জাং সুং মিন ঢাকা সফর করেন। ২০ জানুয়ারি এসেছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফেলিপ গঞ্জালেজ। ১৪ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ৯ জানুয়ারি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন গ্যাং আফ্রিকা যাওয়ার পথে বাংলাদেশে প্রায় দুই ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করেন। চীনের প্রধানমন্ত্রী সি চিন পিং যখন মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আবেদন নিয়ে সাক্ষাৎ করছেন, তখন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ভারত সফরে আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে বাংলাদেশ ও ভারতের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ নেই তা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় রাজনৈতিক দলই মনে করেন। প্রশ্ন হলো, বিদেশি কূটনীতিকেরা কেন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে চিন্তিত বা আগ্রহী?
বৈশ্বিক রাজনীতিতে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো একে অপরের মুখোমুখি। গ্লোবাল ওয়ার অন টেরর, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো দুই দলে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিকে দ্বিতীয় স্নায়ুযুদ্ধ বলছেন। পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রগুলো অনেক সময় একে অপরের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয় না, তাতে যেকোনো পক্ষের যুদ্ধে জয়ের লোভে সর্বোচ্চ শক্তি—পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সম্ভাবনা থাকে। অন্য দেশ তাদের হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। একে বলে ‘প্রক্সি’ যুদ্ধ। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে অনেক পশ্চিমা চিন্তাবিদ ‘প্রক্সি’ যুদ্ধ বলে মনে করেন, যেখানে ইউক্রেন আমেরিকা ও তার মিত্রদের থেকে সাহায্য পাচ্ছে রাশিয়াকে প্রতিহত করার জন্য।
ইউরোপের ভূখণ্ডে চলমান এই যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো বিশ্ব। এ যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য, যা বর্তমানের বৈশ্বিক নির্ভরশীল বাজারব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
ইউক্রেনকে বলা হয় ইউরোপের ‘রুটির ঝুড়ি’ বা ‘ব্রেড বাস্কেট’। ইউরোপের শুষ্ক ও রুক্ষ ঠান্ডায় মানুষকে ওম দেয় রাশিয়ার জ্বালানি। এই যুদ্ধের ফলে খাবার ও জ্বালানিসংকট তৈরি হয়েছে পুরো বিশ্বে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বর্ধিত মূল্য বহন করে চলছে বিশ্বের জনগণ। জনগণের ভোগান্তির এমন পরিস্থিতিতেও যুদ্ধ বন্ধের তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আমেরিকান নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন রাশিয়াকে এমনভাবে প্রতিহত করতে হবে যেন রাশিয়া এখন পর্যন্ত দখল করা সব এলাকা ছেড়ে দেয় এবং ভবিষ্যতে কখনো আগ্রাসনের মতো কাজ না করতে পারে। এতে যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। রাশিয়ার শক্তি নিঃশেষ করার কৌশলকে তারা সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়েই প্রতিহত করার চেষ্টা করবে। এখানে মনে রাখতে হবে রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দেশ। আলোচনার মাধ্যমে এই যুদ্ধ অবসানের একটা পদক্ষেপ নিয়ে চীন মস্কো ভ্রমণ করে। চীনের এই পদক্ষেপকে রাশিয়া গ্রহণ করলেও আমেরিকা সাধুবাদ জানায়নি। এমন অবস্থায় ইউরোপে অদূর ভবিষ্যতে শান্তি ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
তবে পশ্চিমা চিন্তাবিদেরা চীনকে আমেরিকার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করেন। ২০১৭ সালে চীনের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যঘাটতি ছিল ৩৭৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ’৭০-এর দশকে মাও সে-তুংয়ের নেতৃত্বে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন শুরু হয়। বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, আমেরিকার পরেই। সামরিক শক্তিতে চীন সংখ্যায় আমেরিকার সমান তবে দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে এখনো চীন আমেরিকার থেকে পেছানো বলেই ধারণা করা হচ্ছে। যদিও চীন বরাবরই বলে এসেছে তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্য বাণিজ্য নিরাপত্তা, তবু চীনের এই সামরিক শক্তি বৃদ্ধিকে আমেরিকা বিশ্বে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্যের ওপর হুমকি হিসেবেই দেখছে। তাই চীনের শক্তি খর্ব করতে চীনের কাছে উন্নতমানের সেমিকন্ডাক্টর মাইক্রোচিপ বিক্রি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল আমেরিকা। সেই সঙ্গে যাঁরা মার্কিন প্রকৌশলী বা প্রযুক্তিবিদ চীনে বা চীনের কোম্পানিতে কাজ করছেন, তাঁদেরও ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হলো। আমেরিকা চীনকে ‘মেধা চুরির’ দায়ে অভিযুক্ত করল। শুরু হলো চীন-আমেরিকা বাণিজ্যযুদ্ধ।
দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশ ও অন্য সব রাষ্ট্র যারা ভূরাজনীতিতে এখন গুরুত্বপূর্ণ তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও নির্বাচনে অবশ্যই শক্তিশালী দেশগুলোর আগ্রহ থাকবে, কারণ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একটা দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতি বজায় রাখতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সেমিকন্ডাক্টর মাইক্রোচিপ বড় বড় গণনার কাজে ব্যবহার হয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দিয়ে উন্নততর ও সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কাজ করানোর জন্য এই চিপ প্রয়োজন হয়। পৃথিবীব্যাপী এই প্রযুক্তি জনগণের টাকায় করা হলেও জনগণের হিতে খুব একটা ব্যবহার হওয়ার নজির দেখা যায় না।
প্রযুক্তির উন্নয়ন ধ্বংসাত্মক অস্ত্র তৈরি ও মানুষকে নিয়ন্ত্রণ ও শাসন করার ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার হয়। এই প্রযুক্তির প্রয়োগেই উন্নত থেকে উন্নততর সামরিক অস্ত্র তৈরি হয়। এখন এমন সাবমেরিন তৈরি হয়, যার গতিবিধি রাডারেও ধরা পড়ে না। এক একটা সাবমেরিন থেকে ১০-১২টা করে পারমাণবিক বোমা ছোড়া যায়। এমন কয়েক শ সাবমেরিন আছে এই পৃথিবীতে বিভিন্ন শক্তিশালী দেশের কাছে।
এ ছাড়া পাইলটবিহীন ড্রোন, রোবট এমন নানান প্রযুক্তিতে এই চিপ ব্যবহার হয়। মুক্ত বাজারব্যবস্থায় বাণিজ্যে এমন সরকারি হস্তক্ষেপ উভয় পক্ষকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বাইডেন সরকার ইতিমধ্যেই ৫৭ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে নিজ দেশেই সব প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কাজ হবে। আমেরিকার এই বাণিজ্যযুদ্ধকে চীন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত তাদের সাপ্লাই চেইনের ওপর হুমকি হিসেবে দেখছে। ফলে চীন তাদের বাণিজ্যিক নিরাপত্তা জোরদারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, আরে সেই পরিপ্রেক্ষিতেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ও তার ভূরাজনৈতিক অবস্থান বিশ্বরাজনীতিতে।
চীনের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ। চীন থেকে ইউরোপে পণ্য যায় আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে। বাণিজ্যপথ হিসেবে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের আওতায় চীন বিশ্বের ১৫১টি দেশের সঙ্গে স্থল ও সমুদ্রপথে সংযোগ স্থাপন করছে। এ প্রকল্পকে বিশ্বের সবচেয়ে বিস্তৃত ও আগ্রাসী প্রকল্প হিসেবেই পশ্চিমারা দেখছে। চীন থেকে কাজাখস্তান হয়ে, রাশিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ডের ১১ হাজার ১৭৯ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন পশ্চিম জার্মানির ডুইশবুর্গ শহরে পৌঁছার কথা। এটি চীনের নতুন সিল্ক রোডের অংশ।
এ প্রকল্পের আর একটি অংশ চীনের কুনমিং থেকে মিয়ানমার দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করে কলকাতা যাওয়ার কথা, যদিও ভারত সরকার এখনো এ প্রকল্পে যুক্ত হয়নি। সমুদ্রপথে চীন ইউরোপে পণ্য পৌঁছায় দক্ষিণ চীন সাগর থেকে মালয়েশিয়া হয়ে মালাক্কা প্রণালি, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা পেরিয়ে, আরব সাগরে পাকিস্তান, ডুবাই হয়ে অর্ন অব আফ্রিকা হয়ে সুয়েজ প্রণালি দিয়ে। মালাক্কা প্রণালি থেকে বের হওয়ার মুখে দেয়ালের মতো দাঁড়িয়ে আছে ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের বিস্তার ঠেকাতে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। চীনের সঙ্গে ভারতের কাশ্মীর, লাদাখ ও তিব্বত বিষয়ে বৈরিতা আছে। এই অঞ্চলে ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তানের পুরোনো ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু চীন। ভারত মহাসাগরে চীনকে মোকাবিলায় আমেরিকার সহায়তাও পাচ্ছে ভারত। তাই মালাক্কা প্রণালিতে ভারত যদি চীনকে চাপে ফেলে সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে চীনের খুব প্রয়োজন হবে। কারণ মালাক্কা প্রণালির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হলে বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের সমুদ্র ও স্থলবন্দর তখন চীনের জন্য খুবই দরকারি হয়ে পড়বে। চীনের বাণিজ্যিক নিরাপত্তার জন্য যেহেতু বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ, সেই কারণেই আমেরিকার জন্যও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে মুক্তি ও উন্নয়ন মডেল পূর্ব ও পশ্চিমের নেতাদের কাছে যথেষ্ট সমাদৃত। বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে এখন নির্ভরশীল বিশ্বব্যবস্থায় নানান বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও কাজ করছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম অনিরাপদ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ, দারিদ্র্য ও মিয়ানমার সরকারের গণহত্যার ফলে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যার আঞ্চলিক সমাধান বাংলাদেশ করে চেলেছে, যার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় আছে।
কোনো একটি রাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে শ্রীলঙ্কার মতো ঋণফাঁদে পড়ে কিংবা দূরদর্শী জনমুখীনীতির অভাবে পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মতো জঙ্গিবাদ ও নিজস্ব সংঘর্ষ বাধিয়ে বাংলাদেশের জনগণ এখনো কোণঠাসা হয়নি বিশ্বে। অর্থনৈতিক কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ সব রাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার সচেতন সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের বারবার উদ্যতমূলক আচরণেও বাংলাদেশ উদারতার পরিচয় দিয়েছে এবং গণহত্যা ও উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধান কামনা করেছে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার মাধ্যমে। চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমার সকারের সঙ্গে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়াও চলমান। আর এখানে আবারও চীনের প্রভাব বিষয়ে পশ্চিমা সংশয় চলেই আসে। নতুন সিল্ক রোড প্রতিষ্ঠায় চীনের বাণিজ্য যেমন প্রসারিত হবে, তেমনি সংযুক্ত সব দেশের রাজনীতিতে চীন প্রভাব বিস্তার করবে, এমনটাই আশঙ্কা পশ্চিমাদের।
দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশ ও অন্য সব রাষ্ট্র যারা ভূরাজনীতিতে এখন গুরুত্বপূর্ণ তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও নির্বাচনে অবশ্যই শক্তিশালী দেশগুলোর আগ্রহ থাকবে, কারণ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একটা দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতি বজায় রাখতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আইরিন খান গবেষক
writeto@ayreenkhan.com