তারা এখানে বোমা পাঠিয়ে কীভাবে বড়দিন উদ্‌যাপন করছে

আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা বিদীর্ণ। উৎসবের এই মৌসুমে আমরা শোকে নিমজ্জিত। আমরা ভয়ার্ত।

এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ২০ হাজার মানুষ। ইট-সুরকির চাঁইয়ের নিচে চাপা পড়ে আছে হাজার হাজার মরদেহ। নৃশংসতার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটিয়ে হত্যা করা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার শিশুকে। দিনের পর দিন, দিনের পর দিন। প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত। শত শত, হাজার হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত। গাজার অস্তিত্ব মুছে গেছে প্রায়। যা চলছে, তা নিধনযজ্ঞ। গণহত্যা।

আর এই বিশ্ব চেয়ে চেয়ে দেখছে, দেখছে চার্চগুলোও। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গাজার মানুষ তাদের ছবি পৌঁছে দিচ্ছে বিশ্ববাসীর উদ্দেশে। কিন্তু এতে কি পৃথিবীর কিছু আসে যায়? বেথলেহেমে আমাদের ভাগ্যে কি তবে এটাই লেখা ছিল? রামাল্লায়? জেনিনে? এ-ই কি আমাদের ভবিতব্য?

বিশ্বের এই নীরবতায় আমরা নির্বাক। তথাকথিত ‘মুক্ত’ দেশগুলোর নেতারা একের পর এক অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার পক্ষে সবুজ সংকেত দিয়ে গেছেন।

তাঁরা ধ্বংসযজ্ঞকে আড়াল করতে শুধু আগাম অর্থই বরাদ্দ করেননি, রাজনীতির পর্দা দিয়ে প্রকৃত ঘটনা ও প্রেক্ষাপটকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এই কাজে এখন তাঁদের একটি ধর্মতাত্ত্বিক পর্দা চাই। তাই ডাক পড়েছে পশ্চিমা চার্চগুলোর।  

দক্ষিণ আফ্রিকার চার্চ আমাদের শিখিয়েছিল, ‘রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ধর্মতত্ত্ব’ কী। ধর্মতত্ত্ব ও বাইবেলের ভাষ্যের অপব্যবহার করে তারা বর্ণবিদ্বেষ, পুঁজিবাদ ও সর্বগ্রাসী শাসনব্যবস্থাকে যৌক্তিকতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ধর্ম ব্যবহার করা হয়েছিল রাজনৈতিক প্রয়োজনে।    

এই ফিলিস্তিনে আবারও বাইবেলকে—আমাদের পবিত্র গ্রন্থকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হলো। ফিলিস্তিনে আমরা যে ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে দ্বন্দ্বে অবতীর্ণ, তা ‘সাম্রাজ্যবাদ’ রচিত।

ধর্মতত্ত্বের আড়ালে শ্রেষ্ঠত্ববাদ, আধিপত্যবাদ, নিজেদের অধিকতর প্রিয় এই ধারণা পোষণ করা এবং যা কিছু করার অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে এই সাম্রাজ্যবাদ। আর নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলে ‘মিশন’, ইভানজেলিজম, ঐশী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, মুক্তি ও স্বাধীনতার বিকাশ—এসব গালভরা বুলি ব্যবহার করে।

এই যুদ্ধ নিশ্চিত করেছে, পৃথিবীতে সবাই সমান নয়। হয়তো এ আমাদের চামড়ার রঙের দোষ। হয়তো আমরা রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের খেলায় বিরোধী পক্ষ। এমনকি যিশুর সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধনও আমাদের সুরক্ষা দিতে পারেনি। তারা বলে থাকে, হামাসের একজন ‘সন্ত্রাসী’কে খুঁজে পেতে ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা অন্যায় নয়। তাহলে তা-ই হোক। আমরা তাদের চোখে মানুষ নই। অথচ ঈশ্বরের চোখে—কেউ কি বলতে পারে—আমরা সমান নই?

ঈশ্বরের অনুমোদন আছে, এই ধুয়া তুলে তারা ধর্মকে নির্যাতনের শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা ও তারা—এই ভেদরেখা টেনে দেয় মানবজাতির মধ্যে।

তারপর একটি গোষ্ঠীকে অমানুষ ও শয়তান হিসেবে উপস্থাপন করে। তারা জনশূন্য ভূমির কথা বলে; অথচ তারা পরিষ্কার জানে, ওই ভূমিতে মানুষ আছে। তারা গাজাকে শূন্য করে ফেলার আহ্বান জানায়। এই একইভাবে তারা ১৯৪৮ সালে পরিচালিত গণহত্যাকে স্বর্গীয় ও অলৌকিক বলে ঘোষণা দিয়েছিল। তারা ফিলিস্তিনিদের মিসর, নয়তো জর্ডানে চলে যেতে বলে। সাগরকেও-বা বাদ দিল কই?      

তারা আমাদের সম্পর্কে বলে, ‘ঈশ্বর! তুমি কি চাও আমরা প্রার্থনা করি, যেন স্বর্গ থেকে আগুন বর্ষিত হয়ে ওরা আগুনের গ্রাসে পরিণত হয়?’ এই হলো সাম্রাজ্যবাদের ধর্মতত্ত্ব।

এই যুদ্ধ নিশ্চিত করেছে, পৃথিবীতে সবাই সমান নয়। হয়তো এ আমাদের চামড়ার রঙের দোষ। হয়তো আমরা রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের খেলায় বিরোধী পক্ষ।

এমনকি যিশুর সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধনও আমাদের সুরক্ষা দিতে পারেনি। তারা বলে থাকে, হামাসের একজন ‘সন্ত্রাসী’কে খুঁজে পেতে ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা অন্যায় নয়। তাহলে তা-ই হোক। আমরা তাদের চোখে মানুষ নই। অথচ ঈশ্বরের চোখে—কেউ কি বলতে পারে—আমরা সমান নই?

পশ্চিমা বিশ্বের শঠতা ও বর্ণবৈষম্য প্রকাশ্য এবং ভয়ংকর। তারা ফিলিস্তিনি শব্দটিকেই সন্দেহের সঙ্গে নেয়।  অন্যদিকে অপতথ্য ছড়ানোর হাজারো উদাহরণ থাকার পরও অপর পক্ষটির সব বয়ান তাদের কাছে সন্দেহাতীত।  

আমি আমাদের ইউরোপীয় বন্ধুদের বলছি। আমি কখনো আপনাদের কাছ থেকে মানবাধিকার বা আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে কোনো বক্তৃতা আর শুনতে চাই না। আমরা শ্বেতাঙ্গ নই। তাই আপনাদের নিজস্ব যুক্তিতেই আমাদের জন্য এসব আইনকানুন প্রযোজ্য নয়।

এই যুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক খ্রিষ্টান ধর্মের ব্যাখ্যা নিয়ে সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন। আমাদের বলা হলো, এটা ‘আত্মরক্ষা’(এবং আমি জানতে চাই কেমন করে?)।

রেভারেন্ড ড.মানথের আইজ্যাক

সাম্রাজ্যবাদের ছায়ায় ওরা ঔপনিবেশিক শক্তিকে ভুক্তভোগী বলে প্রচার করে, আর যারা ঔপনিবেশিকতার শিকার, তাদের বলে আগ্রাসী। আমরা কি ভুলে গেছি যে এই রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে গাজাবাসীর শহর ও গ্রামের ধ্বংসাবশেষের ওপর?

দুষ্কর্মে চার্চের যুক্ততা আমাদের ক্ষুব্ধ করে। পরিষ্কার করে বলি—নীরবতা, যুদ্ধবিরতি ও দখলদারির অবসানের ডাক না দিয়ে শান্তির কথা বলা, কাজের বদলে সমানুভূতির ফাঁপা আওয়াজ তোলা—এই সবই দুষ্কর্মে সহযোগিতার নামান্তর। তাই এই হলো আমার বার্তা: গাজা এই মুহূর্তে এই বিশ্বের নৈতিক দিকনির্দেশনার কেন্দ্রভূমি। ৭ অক্টোবরের আগেও গাজা নরকই ছিল।  

যা ঘটছে তাতে যদি আপনি ভয়ার্ত না হন, আপনি যদি ভেতর থেকে কেঁপে না ওঠেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনার মানবিকতা সংকটে। যদি এই গণহত্যা, গণহত্যার পক্ষে বাইবেলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করায় আমরা যদি ক্ষুব্ধ না হই, তাহলে ধরে নিতে হবে আমাদের বিশ্বাসে খামতি আছে। আমরা গসপেলের বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে আপস করছি।  

আপনি যদি গণহত্যা বলতে ব্যর্থ হন, তাহলে এর দায় আপনার। এই পাপকে, এই নিবিড় অন্ধকারকে আপনি স্বেচ্ছায় আলিঙ্গন করছেন।
কেউ কেউ এমনকি যুদ্ধ বিরতির কথাও বলছেন না।  

আমি আপনার জন্য দুঃখ বোধ করছি। তীব্র এই ক্ষতির পরও আমরা আবার পুনরুত্থিত হয়ে উঠব। আমরা ধ্বংস থেকে উত্থিত হব, ফিলিস্তিনি হিসেবে আমরা বরাবর যা করেছি, তা-ই করব। আমরা আবার জেগে উঠব, উঠে দাঁড়াব। যদিও এবারকার মতো এত তীব্র হামলার শিকার আমরা বহুদিন হইনি।  

কিন্তু আবারও বলি, আপনারা যাঁরা এই দুষ্কর্মের সহযোগী, আমি আপনাদের জন্য দুঃখ বোধ করছি। আপনারা কি কখনো আর জেগে উঠতে পারবেন?

গণহত্যার পর আপনাদের দয়াদাক্ষিণ্য, ব্যথাতুর উচ্চারণ কোনো পরিবর্তন আনবে না। কোনো খেদোক্তিই আর যথেষ্ট হবে না। গণহত্যার পর আপনাদের ক্ষমা প্রার্থনা আমরা আর গ্রহণ করব না। যা ঘটেছে, ঘটে গেছে। আমি আপনাদের বলব, আয়নায় মুখ দেখুন এবং নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: আমি কোথায় ছিলাম?

আজ আমার সঙ্গে যাঁরা আছেন, আপনারা আপনাদের পরিবার ও চার্চ ছেড়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আপনারা আমাদের সত্যিকারের সহচর—আপনারা অতিমূল্যবান ‘সংহতি’র ধারক। ‘আমরা যখন কারাগারে ছিলাম, তখন আপনারাই দেখতে এসেছিলেন।’ আমরা যে নীরবতা ও দুষ্কর্মের সহযোগিতা প্রত্যক্ষ করছি, তা থেকে যোজন যোজন দূরে আপনাদের অবস্থান। এই উপস্থিতির অর্থ সংহতি।

আপনাদের এই আগমন আমাদের যেভাবে প্রাণিত করেছে, তা চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। আপনাদের মাধ্যমেই ঈশ্বর যেন বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘সবাই আমাদের পরিত্যাগ করেনি।’ ক্যাথলিক চার্চের ফাদার রামি যেমনটি বলেছেন, আপনারা বেথলেহেমে এসেছেন ম্যাজাইদের মতো। সঙ্গে এনেছেন ভালোবাসা আর সংহতি। এই উপহার সোনার চেয়েও দামি।

এই উপহার কাঙ্ক্ষিত ছিল। এই মৌসুমে, অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ঈশ্বরের নীরবতায় আমরা ক্লিষ্ট হয়েছি। দুই মাস ধরে শোকস্তবগীতি আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সঙ্গী। আমরা চিৎকার করে বারবার বলেছি, ‘হা ঈশ্বর! হায় ঈশ্বর! আমরা কী এমন করেছি যে তুমি গাজাকে ভুলে গেছ? তুমি কী করে গাজা থেকে তোমার মুখ ফিরিয়ে রেখেছ?’  

আমাদের বেদনায়, আমাদের যন্ত্রণায়, আমাদের শোকে আমরা ঈশ্বরকে খুঁজেছি এবং তাঁকে খুঁজে পেয়েছি গাজার ধ্বংসাবশেষের নিচে। যিশু সেই পুরোনো সাম্রাজ্যবাদী সহিংসতার শিকার। তিনি নির্যাতিত। ক্রুশবিদ্ধ। তাঁর শরীর থেকে যখন রক্ত চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে, তখন আমরা নীরব দর্শকের মতো দেখে গেছি। তিনি নিহত হলেন, বেদনায় চিৎকার করে কাঁদলেন—হা ঈশ্বর, তুমি কোথায়?
আজ গাজায় ঈশ্বর ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে আছে।

বড়দিনের এই মৌসুমে, যিশুকে রোমের আশপাশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাঁকে পাওয়া যাবে আমাদের এদিকটায়, দেয়ালের কাছে। একটা গুহায়, সাধারণ পরিবারে, সমস্যাসংকুলতায়। কোনো রকমে অলৌকিকভাবে যিশু বেঁচে যাবেন রক্তাক্ত এ যুদ্ধে থেকে। তাঁকে পাওয়া যাবে শরণার্থী কোনো পরিবারে।

আজ যদি যিশুর জন্ম হতো, তিনি জন্মাতেন গাজায় ধ্বংসাবশেষের মধ্যে। যখন আমরা অহংকার আর প্রাচুর্যে মাহাত্ম্য খুঁজি, যিশু তখন ধ্বংসাবশেষের নিচে...
যখন আমরা ক্ষমতা, শক্তি আর অস্ত্রের ওপর নির্ভর করি, যিশু তখন ধ্বংসাবশেষের নিচে...

যখন ধর্মতত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে শিশুদের ওপর বোমাবর্ষণের যৌক্তিকতা খুঁজি, যিশু তখন ধ্বংসাবশেষের নিচে...  

যিশু ধ্বংসাবশেষের নিচে। এই ধ্বংসাবশেষই তাঁর সেই যাবপাত্র। তিনি প্রান্তিক মানুষ, তাদের কষ্ট-যন্ত্রণা, নিপীড়ন ও বাস্তুচ্যুতির সঙ্গে আছেন। এসবই তাঁর যাবপাত্র।
আমি সেই জন্মক্ষণের কথা ভাবি...ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে এভাবেই আছেন। এই পুনরুত্থান। ধ্বংস। রক্ত। দারিদ্র্য।

এই শিশুই আমাদের আশা ও স্পৃহা। এই শিশুর মধ্যে আমরা নিহত প্রতিটি শিশু, ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে বের করা প্রতিটি শিশুর মুখচ্ছবি দেখি। যখন এই বিশ্ব গাজার শিশুদের প্রত্যাখ্যান করছে, তখন যিশু বলেন, ‘আমার কোনো ভ্রাতা বা ভগিনির সঙ্গে যদি তুমি দুর্ব্যবহার করো, তাহলে জেনে রেখো, এই আচরণ তুমি আমার সঙ্গেই করলে।’ যিশু তাদের শুধু নিজের বলে উল্লেখ করেননি, যিশু এই নিপীড়িত মানুষগুলোই।

বাস্তুচ্যুত ও ছুটতে থাকা দিশাহারা পরিবারগুলোর মধ্যে সেই পবিত্র পরিবারকে আমরা দেখতে পাই। যখন এই বিশ্ব গাজাবাসীর ভাগ্য নিয়ে আলোচনায়, যেন তারা গাড়িবারান্দায় রাখা অযাচিত কোনো বাক্স, ঈশ্বর তখন তাদের মধ্যে বিরাজমান। তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁর নিজের বলে আখ্যা দেন।  

এই যাবপাত্র প্রত্যাবর্তনের কথা বলে। যিশুর প্রত্যাবর্তন নম্রতায়, দুর্বলতায়, ঝুঁকিতে। পুনরুত্থানের ঐশ্বর্য মিশে আছে প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে সংহতিতে। প্রত্যাবর্তনের কথা বলছি; কারণ বেদনা, ধ্বংস, অন্ধকার ও মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত এই শিশুই একদিন সাম্রাজ্যবাদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে। ক্ষমতাসীনদের প্রশ্ন করবে। মৃত্যু ও অন্ধকারকে পরাজিত করে চিরস্থায়ী জয়ের ঘোষণা দেবে।  

ফিলিস্তিনে আজ বড়দিন। আর এই আমার বার্তা। বড়দিন মানে সান্তা, গাছ, উপহার বা আলোকসজ্জা নয়। হা ঈশ্বর। আমরা কীভাবে বড়দিনের অর্থকে বদলে দিয়েছি। আমরা কীভাবে বড়দিনের বাণিজ্যিকীকরণ করেছি।

গত সপ্তাহে আমি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম, থ্যাঙ্কস গিভিংয়ের পর প্রথম সোমবার ছিল সেদিন। আমি বড়দিনের সাজসজ্জা আর থরে থরে পণ্য দেখে অবাকই হয়েছি। আমি না ভেবে পারলাম না, তারা আমাদের এখানে বোমা পাঠিয়ে নিজেদের দেশে কীভাবে বড়দিন উদ্‌যাপন করছে! তারা তাদের দেশে শান্তির রাজপুত্রকে নিয়ে গান ধরেছে, যখন আমাদের ভূমিতে বাজছে যুদ্ধের দামামা।

যিশুর জন্মভূমি বেথলেহেমই তাঁর যাবপাত্র। বিশ্বের কাছে এই আমাদের বার্তা। এই আমাদের গসপেলের গল্প, এই গল্প সত্য ও নিখাদ। এই গল্প ঈশ্বরের, যিনি নীরব ছিলেন না, যিনি কথা বলেছিলেন যিশুর মুখ দিয়ে। যেই যিশু অবরুদ্ধ অঞ্চলে প্রান্তিকতার মধ্যে জন্মেছিলেন। যিনি আমাদের বেদনা ও ক্লেশের সঙ্গে আছেন।

এই যাবপাত্রই বিশ্বের কাছে আজ আমাদের বার্তা এবং আমাদের ভাষ্য পরিষ্কার। এই গণহত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। এটাই আমাদের আহ্বান। এটাই আমাদের আবেদন। এটাই আমাদের প্রার্থনা। আমাদের প্রার্থনা শুনুন, হা ঈশ্বর! আমিন।

  • রেভারেন্ড ড. মানথের আইজ্যাক ইভানজেলিক্যাল লুথারিয়ান ক্রিস্টমাস চার্চ, বেথলেহেমের সহকারী যাজক।

আইজ্যাকের এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশিত বক্তৃতা। বড়দিন উপলক্ষে বেথলেহেমে তাঁর চার্চে এই বক্তৃতা দেন তিনি। টাইম, ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা তাঁর এই বক্তৃতার ওপর খবর ছেপেছে। ইংরেজি থেকে ঈষৎ সংক্ষেপিত অনুবাদ করেছেন: শেখ সাবিহা আলম