কোনো সমস্যার মূল কারণ অনুসন্ধানের একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো ‘ফাইভ হোয়াই টেকনিক’ বা পাঁচ কেন-র কৌশল। কৌশলটির জন্ম টয়োটার জনক সাকিচি টয়োডা উদ্ভাবিত টয়োটা প্রোডাকশন সিস্টেমের অংশ হিসেবে, যা পরবর্তী সময় যেকোনো সমস্যার মূল কারণ অনুসন্ধানে সারা দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা পায়। প্রশ্ন যে ঠিক পাঁচটিই করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। মূল কথা হলো, একটির পর একটি প্রশ্ন করে কোনো সমস্যার প্রাথমিক কারণ থেকে মূল কারণ বা রুট কজে পৌঁছানো। এভাবে বিশ্লেষণ করলে সাদা চোখে যে বিষয়টিকে কোনো ঘটনার জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়, দেখা যায় সেটি আসলে প্রাথমিক বা আপাত কারণ, মূল কারণ হয়তো সম্পূর্ণ ভিন্ন কাঠামোগত কোনো সমস্যা।
বাংলাদেশে যেকোনো সমস্যার কার্যকারণ নির্ধারণে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তিবিশেষের আচার-আচরণকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যক্তির সমস্যাজনক আচরণের পেছনে অন্য কোনো গভীর সমস্যা দায়ী কি না, সেসব বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ খুব কমই হয়। প্রবণতাটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সম্ভবত সড়ক দুর্ঘটনার বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ বিশ্লেষণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চালকের বেপরোয়া মনোভাব, বিপজ্জনক গতিতে যান চালনা, পাল্লা দেওয়া, যানবাহন চালনার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও লাইসেন্স না থাকা ইত্যাদির কথা উঠে আসে। যেকোনো সড়ক দুর্ঘটনায় এই কারণগুলোর একটা না একটার দায় থাকেই, কিন্তু এগুলো মূল কারণ নয়। এগুলো বড়জোর ফাইভ হোয়াই টেকনিকের প্রথম পর্যায়ের প্রশ্নের উত্তর। কী কারণে হাজার হাজার চালক দিনের পর দিন একই ধরনের বেপরোয়া আচরণ করেন, তার মূল কারণ অনুসন্ধান করতে হলে প্রথম প্রশ্নের পর আরও অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণগুলোর সমাধান করা হচ্ছে না বলেই বছর বছর সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে।
সম্প্রতি বাসচাপায় রাজধানীর বেসরকারি নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাদিয়া সুলতানা নিহত হওয়ার ঘটনায় নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠার দাবি আবারও সামনে এসেছে। ২০১৮ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সাড়ে চার বছরের বেশি সময় পার হলেও রাজধানীসহ সারা দেশে সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির হিসেবে গত আট বছরের মধ্যে ২০২২ সালে সড়কে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে। এ সময় ৬ হাজার ৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ৯৫১ জন নিহত ও ১২ হাজার ৩৫৬ জন আহত হয়েছেন। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং প্রাণহানি ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। (আট বছরের মধ্যে ২০২২ সালে সড়কে বেশি প্রাণহানি, প্রথম আলো, ২ জানুয়ারি ২০২৩)।
সারা দেশের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়নের কাজ যেখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কথা সেই ঢাকাতেই দুর্ঘটনা হয় সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালে দেশের সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর প্রায় ২৭ শতাংশই ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, এ সময় ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৮৪১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৪ জন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার সড়কে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ২২৭, যা আগের বছরের তুলনায় ৯৭ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। (এক বছরে রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৯৮%, প্রথম আলো, ০৭ জানুয়ারি ২০২৩)।
ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনা বাড়বে না কেন? এত আন্দোলন, আলোচনা-সমালোচনার পরও ঢাকার রাস্তায় যেভাবে বাস চলাচল করে, সেটাকে গণপরিবহনব্যবস্থা বলা যায় না।
এখানে বাস চলাচলের অনুমোদন থেকে শুরু করে এর পরিচালনা পদ্ধতি— সবকিছুই সমস্যাজনক। বাস-মিনিবাসগুলো রাজধানীর ৩২৪ রুটে ১৩৭টি কোম্পানির নামে চলাচল করে। এর মধ্যে ১০০টির বেশি বাস রয়েছে মাত্র সাতটি কোম্পানির, ৫০টির কমসংখ্যক বাস আছে ৭৫টি কোম্পানির আর ৮৫০টি বাসের মালিক পৃথক পৃথক ব্যক্তি। এসব রুটে একাধিক কোম্পানির বাস যাত্রীর জন্য পরস্পরের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে। এখানে কোনো বাস রুটে বাস পরিচালনার প্রধান যোগ্যতা হলো রাজনৈতিক ক্ষমতা। ক্ষমতার জোরে প্রভাবশালীরা বাস রুটের অনুমোদন নিয়ে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন বাসমালিককে সেই রুটে বাস চালানোর অনুমোদন প্রদান করেন। বাসমালিকেরা আবার চুক্তি বা ট্রিপ ভিত্তিতে পরিবহনশ্রমিকদের হাতে বাস তুলে দেন। চুক্তিভিত্তিতে চলাচলের ক্ষেত্রে দিন শেষে মালিককে দেওয়ার জন্য জমার টাকা, জ্বালানি খরচ, টোল, চাঁদা ও ঘুষের টাকার ব্যবস্থা করার পর যা থাকে, তা ভাগাভাগি করে নেন চালক ও তার সহকারী। আর ট্রিপভিত্তিক মজুরির ক্ষেত্রে চালকেরা ট্রিপের সংখ্যা অনুযায়ী মালিকের কাছ থেকে টাকা পান। বেশি ট্রিপ দিতে পারলে টাকা আয় হয় বেশি। ফলে চুক্তি বা ট্রিপভিত্তিক চলাচলের ক্ষেত্রে বাড়তি যাত্রী এবং ট্রিপের জন্য চালকেরা রাস্তায় বেপরোয়া থাকেন, একই রুটের অন্য বাসের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন ও ঘন ঘন দুর্ঘটনা ঘটান।
অথচ ২০০৪ সালে ঢাকার জন্য করা ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ বা বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। অনেক আলোচনা-সমালোচনার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে একটি রুটে এবং ২০২২ সালের অক্টোবরে আরও দুটি রুটে ৫০টি করে বাস নিয়ে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে একটি কোম্পানির মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালু করা হয়। কিন্তু একই রুটে ব্যক্তিমালিকানাধীন অন্য কোম্পানির বাস চলাচল অব্যাহত থাকায় অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়নি। ওই পরিবহনগুলো ঢাকা নগর পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাত্রী তুলছে, যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকছে, ফলে যে উদ্দেশ্যে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজির পরীক্ষামূলক যাত্রা, সেটাই সফল হতে পারছে না। শুধু তা-ই না, চালু হওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে রাজধানী হয়ে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর রুটে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধির বদলে উল্টো কমে যাওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সময় বিআরটিসির ৩০টি বাসের মধ্যে ২৩ থেকে ২৫টি দোতলা বাস চলাচল করলেও বেসরকারি কোম্পানির ২০টি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাসসংকটের কারণে ঠিকমতো যাত্রী সেবা দেওয়া যাচ্ছিল না, যাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বাস না পেয়ে চলে যাওয়ারও ঘটনা ঘটে। মাত্র কয়েকটি রুটে পরীক্ষামূলক বাস চলাচলের ক্ষেত্রেই যদি এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে পুরো ঢাকা শহরের গণপরিবহনের ক্ষেত্রে কী ঘটবে, তা সহজেই অনুমেয়। তা ছাড়া যে গতিতে পুরো প্রক্রিয়াটি চলছে, তাতে সারা ঢাকা শহরে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালু হতে কত বছর সময় লাগবে, সে বিষয়েও যথেষ্ট অনিশ্চয়তা রয়েছে।
এবার তাহলে দেখা যাক ‘ফাইভ হোয়াই টেকনিক’ অনুসারে রাজধানী ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনার একটি ধরনের কার্যকারণ বিশ্লেষণ করলে মূল কারণ কি বেরিয়ে আসে।
সমস্যা: বাসচাপায় রাজধানীতে ঘন ঘন দুর্ঘটনা ও মৃত্যু
কেন?—চালকের বেপরোয়া বাস চালনা (১ম কেন)
কেন?—বেশি যাত্রী তোলার জন্য দুই বাসের চালকের মধ্যে প্রতিযোগিতা (২য় কেন)
কেন?—ট্রিপ ও চুক্তিভিত্তিক বাস চালনা এবং একই রুটে একাধিক কোম্পানির বাস পরিচালনা (৩য় কেন)
কেন?—রাজনৈতিক প্রভাবশালী বাসমালিক গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার্থে রাজধানীর কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা ও আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজির মাধ্যমে মাসিক বেতনভিত্তিক চালক নিয়োগ না করা (৪র্থ কেন)
কেন?—জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহি না থাকা (৫ম কেন)
কাজেই দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে শুধু চালকের বেপরোয়া বাস চালনাকে দায়ী মনে হলেও পুরো বিষয়টি আরও ভালোভাবে তলিয়ে দেখলে রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থার মালিকানা থেকে শুরু করে জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহির ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি পর্যন্ত এ সমস্যার জন্য আসল দায়ী বলে বেরিয়ে আসে। এখন সমস্যার এ দিকগুলো সমাধান না করে আমরা যদি মনে করি স্রেফ কঠোর আইন করে বা চালকদের শাস্তি দিয়ে এই কাঠামোগত সমস্যার সমাধান করা যাবে, তাহলে তা ব্যর্থ হতে বাধ্য। গণপরিবহনের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনের মাধ্যমে কী করে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা যেতে পারে, তার দৃষ্টান্ত হিসেবে আমরা প্রতিবেশী ভারতের রাজধানী দিল্লির পদক্ষেপগুলো তলিয়ে দেখতে পারি।
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে একসময় চুক্তিভিত্তিতে চলাচলকারী বেসরকারি বাসের তীব্র প্রতিযোগিতায় অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটত। ব্লু লাইন নামে পরিচিতি ব্যক্তিমালিকানাধীন বাসগুলো পরস্পরের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতায় এত বেশি দুর্ঘটনার কারণ হয় যে সেগুলো একসময় ‘কিলার বাস’ বা খুনি বাস হিসেবে পরিচিতি পায়। এরপর ২০১১ সালের মধ্যে এই বেসরকারি বাসগুলো তুলে দিয়ে ক্লাস্টার বাস সার্ভিস চালু করা হয়।
(ফেইজ আউট অন শিডিউল; ব্লু লাইন বাস অব ফ্রম দিল্লি রোডস ফ্রম ফেব ১, ইন্ডিয়া টুডে, ৩০ জানুয়ারি ২০১১; ক্লাস্টার বাস সার্ভিস লঞ্চড ইন দিল্লি, ৫ মে, ২০১১, দ্য হিন্দু) ক্লাস্টার সার্ভিস স্কিম অনুযায়ী, দিল্লির ৬৫৭টি বাস রুটকে ১৭টি ক্লাস্টারে বিভক্ত করা হয় যেখানে সরকারি ডিটিসি বাস এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের পিপিপি বাস ৫০: ৫০ অনুপাতে চলাচল করবে। কোন ক্লাস্টারে কোন কোম্পানি বাস পরিচালনা করবে, তা প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। এসব কোম্পানিগুর যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করার সুযোগ নেই। কারণ, ভাড়া আদায় করার দায়িত্ব দিল্লি ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রানজিট সিস্টেম বা ডিআইএমটিসি নামের আরেকটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির। যে কোম্পানিটি গ্রস-কস্ট মডেলের চুক্তি অনুযায়ী বেসরকারি বাস কোম্পানিকে নির্দিষ্ট দূরত্ব ও ঘণ্টার ভিত্তিতে অর্থ প্রদান করে, অবশ্য বিলম্বের জন্য জরিমানা কেটে রাখার পর।
এসব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দিল্লির পরিবহন দুর্ঘটনা যেমন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পেয়েছে, তেমনি গণপরিবহনব্যবস্থাও যাত্রীবান্ধব হয়েছে। বর্তমানে দিল্লির বাস চলাচলব্যবস্থা পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান দিল্লি ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের (ডিটিসি) কর্তৃত্বাধীন। সেখানে দুই ধরনের মালিকানা ব্যবস্থায় বাস চলে—পুরোপুরি ডিটিসি মালিকানাধীন লাল ও সবুজ রঙের বাস এবং পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ ম্যাকানিজমে কমলা রঙের ক্লাস্টার বাস। দিল্লিতে ডিটিসি বাসগুলো বাংলাদেশের বিআরটিসি বাসের মতো নামকাওয়াস্তে চালানো হয় না, বরং দিল্লিতে ডিটিসি বাসই বেশিসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করে থাকে। যেমন: ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ডিটিসি বাসগুলো দৈনিক গড় যাত্রী পরিবহন করেছে ১৬ দশমিক ৩ লাখ এবং ক্লাস্টার বাসগুলো যাত্রী পরিবহন করেছে দৈনিক গড়ে ১১ দশমিক ৩ লাখ।
কাজেই যে ব্যবস্থা ও কাঠামোর কারণে ব্যক্তি বেপরোয়া আচরণ করে, সেই ব্যবস্থা পাল্টে দেওয়ার মাধ্যমে ব্যক্তির বেপরোয়া আচরণ যেমন নিরুৎসাহিত করা যায়, তেমনি দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যুও কমিয়ে নিয়ে আসা যায়। এরপরও কেউ বেপরোয়া আচরণ করলে তার জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই বাংলাদেশের চালকেরাই যখন মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করতে যান, সেখানে কিন্তু তাঁরা সব ধরনের নিয়মকানুন মেনেই পরিবহন চালিয়ে থাকেন। একই ব্যক্তি শুধু ব্যবস্থাগত পরিবর্তনের কারণে ভিন্ন আচরণ করতে বাধ্য হন। কাজেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনতে হলে লাইসেন্স ও প্রশিক্ষণবিহীন চালকের হাতে ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন তুলে দিয়ে বেপরোয়া চালনার প্রণোদনা দেয়, সে ব্যবস্থা তার খোলনলচে পাল্টানো জরুরি।
কল্লোল মোস্তফা বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবেশ ও উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক লেখক, প্রকাশিত গ্রন্থ: বাংলাদেশে উন্নয়নের রাজনৈতিক অর্থনীতি
ই–মেইল: kallol_mustafa@yahoo.com