মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব খাজা মিয়া ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে দেদার পথসভা আর জনসংযোগ করে বেড়াচ্ছিলেন। বিধি বাম। তাঁর একটি বক্তৃতা ভাইরাল হয়ে যায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনাদের মাধ্যমে নড়াইল-১ আসনের সব জনগণের কাছে একটা কথা পৌঁছে দিতে চাই। আমি আমার চাকরিজীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। আমি শেষ প্রান্তে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আমার মাত্র আর কয়েক মাস চাকরি আছে। আমি আর চাকরি করব না। আপনি আমাকে নমিনেশন দেন। আমি কালিয়ায় ফিরে যেতে চাই।’ ব্যাপক সমালোচনার মুখে তাঁকে ওএসডি করেছিল সরকার।
ঘটনাটি এ বছরের জুলাইয়ের। খাজা মিয়াকে নিয়ে আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল চন্দ্র ধর ও পরে জামালপুরের জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ ক্ষমতাসীন দলের জন্য ভোট চান। প্রথম আলোর খবর বলছে, শ্যামল চন্দ্র ধর স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ‘নয়নের মণি’ বিশেষণে অভিহিত করেন। বলেন, ‘আমরা (যেন) পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকারকে বিপুল ভোটে জয়ী করতে পারি।’
সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ অবশ্য আরও এক কাঠি সরেস। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের জয় কামনা করেই ক্ষান্ত দেননি। বলেছেন, ‘আমি আশা করি, সামনের নির্বাচনের পর আমাদের সম্মানিত প্রধান অতিথি (মির্জা আজম) অবশ্যই একজন মন্ত্রী হিসেবে এই জেলায় আরও ব্যাপক উন্নয়ন করবেন। এটা আমি আশা করি এবং বিশ্বাস করি—এটা হবে, ইনশা আল্লাহ।’
ওই একই সময়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আয়োজিত এক সম্মেলনে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলামের একটি বক্তব্য ব্যাপক প্রচার পায়। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমরা কোনো রাজনীতি করি না। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় যে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হয়। সেই কারণে আমাদের দায়িত্ব হলো জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেন্স অব সিকিউরিটি প্রোমোট করা। আমরা জানি নির্বাচনের বছর। তরুণ সহকর্মীদের উদ্দেশে বলছি। পুলিশ কী ধরনের দায়িত্ব পালন করবে, প্রেসক্রিপশন দেওয়া হয়। আমরা আমাদের আইনের আলোকেই কাজ করব। আমরা...যেখানে বিদ্যুৎ নয়, তারবিহীন খাম্বা, সেটি শোভা পাবে সেই রকম জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়ার যে চক্রান্ত, সফল হতে দেব না।’
পুলিশ ও প্রশাসনের পর আলোচনায় আসে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় তাঁরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ‘১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে “অধিকারের” বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, তা বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নজরে এসেছে।
আমরা এই প্রস্তাবে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ, এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা, যা অপ্রত্যাশিত ও অন্যায্য।’ কারণ হিসেবে তারা বলেছে, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে। অধিকারসংক্রান্ত মামলার রায় তাঁরা প্রভাবমুক্তভাবে দিয়েছেন।
এ ধরনের বিবৃতি অবশ্য আমরা আগেও দেখেছি। যেমন র্যাব ও এর সাবেক-বর্তমান ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতি দিয়েছিল।
অনেকেই বলেন, ক্ষমতাসীন দল আর পুলিশ-আমলারা মিলেমিশে সব একাকার হয়ে গেছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে আগে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রতি সরকারি কর্মচারীদের আনুগত্যের এই প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়াও তাঁরা কী করতে/বলতে পারেন, কী পারেন না এবং কেন এই অবস্থা, তা আরেকবার দেখে নিতে পারি।
সরকারি কর্মচারীরা পরিচালিত হন সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর অধীনে। এই বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি কর্মচারী নিজের নামে কোনো লেখায় বা বক্তব্যে এমন কিছু বলতে পারবেন না, যা সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে। সরকারের জন্য অস্বস্তিকর অবস্থা হলো জনগণের কিংবা কোনো শ্রেণি বিশেষের সঙ্গে সম্পর্ক বা বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়ে এমন কিছু। তাঁদের জন্য ‘রাজনীতি’র ধারপাশ দিয়ে হাঁটাও নিষেধ।
বিধিমালার ২৫ ধারায় আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকার সহায়তা করতে পারবেন না।
আইনসভার নির্বাচন, নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না, হস্তক্ষেপ বা প্রভাবও খাটাতে পারবেন না। চাকরিজীবী সমিতি সম্পর্কেও বিধিমালায় পরিষ্কারভাবে বলা আছে। সোজা বাংলায়, ব্যক্তি যা করতে পারবেন না, সমিতিও তা করতে পারবে না। সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো ‘নিবেদনমূলক’ বক্তব্য কোনো সংবাদমাধ্যম বা অন্য জায়গায় প্রকাশ করাতেও নিষেধ আছে। এসব বিধিনিষেধ অমান্য করলে তদন্ত করে শাস্তির কথাও আছে।
আমাদের বিচার বিভাগের জন্য অবশ্য নিয়মকানুন আলাদা এবং আরও কঠিন। যেমন ‘জুডিশিয়াল কনডাক্টস’-এ আছে, জনগণের সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়, এমন আচরণ থেকে তাঁদের বিরত থাকতে হবে। জনগণ আস্থা হারায়, এমন কোনো কাজ তাঁরা করতে পারবেন না। জনসমক্ষে কোনো মামলা সম্পর্কে মন্তব্য করা একদম নিষেধ।
আপনাদের কি মনে পড়ছে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির-বিন-আনোয়ারের কথা? তিনি অবসর গ্রহণের দুই দিন পরই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে যান। এই নির্বাচনে এইচ টি ইমামের মতো সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে থাকার সময় ইকবাল মাহমুদ ৪২ সাবেক সচিবকে নিয়ে বৈঠক করে আলোচনায় এসেছিলেন। সরকার পরিচালনায় কী করে আরও ভূমিকা রাখা যায়, তা নিয়ে আলোচনাই নাকি কারণ ছিল।
গত বছর জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হয়ে একটি দলের পক্ষে ভোট চেয়ে মোনাজাত ও বক্তৃতা করেছিলেন চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। পুলিশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক পাওয়ার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে পেটানো তাঁর কৃতিত্বমূলক কাজ বলে বিবেচিত হয়েছে। কিংবা এরও পরে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন দমনের কারণে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান পুরস্কৃত হন।
শরীয়তপুরের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনকে দলীয় স্লোগান দিতে দেখা যায়। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন অর্থমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১০ আসনের সংসদ সদস্য আ হ ম মুস্তফা কামালকে আবারও নির্বাচনে জয়ী করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি ‘মিনতি’ জানান। প্রথম আলো চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘এসপি লীগের দাপট’ শিরোনামে খবর ছেপেছিল। ওই খবরে বলা হয়, ২০১৪ সালে পুলিশ সুপার থাকার সময় তিনি এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়ান।
প্রশাসনের নাকের ডগায়, পুলিশের উপস্থিতিতে (প্রত্যক্ষ সহযোগিতার কথাও বলে থাকেন বহু মানুষ) দিনের ভোট রাতে হয়ে যাওয়ার আলোচনা এখনো সচল। কারও কারও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজার জামিন বারবার নাকচ হওয়া, কিংবা মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর কথা মনে পড়তে পারে। গায়েবি মামলা তো আছেই।
এত এত বিধিনিষেধের পরও পুলিশ, আমলাদের বড় অংশ গা করছেন না। কিন্তু কেন? কাহিনি কী? এর একটা ব্যাখ্যা আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ শাহান ও ফেরদৌস জাহানের ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন অ্যান্ড পলিটিকস-অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিলেশনশিপ-দ্য কেস অব বাংলাদেশ বইতে। রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্কের ধরন বোঝাতে তাঁরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গোল্ডেনের ইভিএলএন মডেল ব্যবহার করেছেন। এই মডেল অনুযায়ী বনিবনা না হলে আমলারা হয় প্রস্থান করবেন (এক্সিট), নয়তো তাঁরা হইচই করবেন (ভয়েস) বা আনুগত্য প্রদর্শন করবেন (লয়ালটি) অথবা পাত্তা দেবেন না (নেগলিজেন্স)। এর মধ্যে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা বিরল। এসব দেশে আমলারা দর-কষাকষি করেন, সন্তুষ্ট হলে স্থিতাবস্থা বজায় রাখেন, কখনো কখনো বিদ্রোহ করেন আবার কখনো কখনো তাঁদের জন্য টিকে থাকাটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়।
ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্কের তিনটি ধাপ আছে বাংলাদেশে। বলতে গেলে বাংলাদেশে ১৯৯০-এ স্বৈরশাসকের পতনের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীরা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধীনে কাজ করেন। তাঁরা প্রথমে যে কাজটি করেন, তা হলো প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে আনা। তাঁরা কোনো কারণ না দেখিয়েই অবসর আইন, ১৯৭৪ ব্যবহার করে ৫১ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। পরের বছর ১৯৯২-তে ৬৫৪ জনকে পদোন্নতি দিয়েও তারা বিতর্ক তৈরি করেছিল। এই প্রেক্ষাপটে প্রশাসনের লোকজন হইচই করতে শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্চের কথা নিশ্চয়ই পাঠকদের মনে আছে।
বিএনপির পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেই জনতার মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত আমলাদের পদোন্নতি দিল। এই আমলে আওয়ামী লীগের অনুগতদের চাকরি দিতে নিয়োগেও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
আবার এল বিএনপি। তারা ৪৯ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল, হরেদরে ওএসডি করতে শুরু করল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের পালা। তারাও ওএসডি কালচার জারি রাখল। পদোন্নতিতে আনুগত্যকে প্রধান শর্ত হিসেবে ধরল। সেই সঙ্গে আরও একটা কৌশল কাজে লাগাল। তারা প্রশাসনকে শায়েস্তা করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাজে লাগাল। এর প্রথম শিকার হলেন পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক এ এফ এম মনজুর কাদির। পাবনার সাংসদ খন্দকার গোলাম ফারুক চতুর্থ শ্রেণির ১২টি শূন্য পদে তাঁর ১০ জন লোককে নিয়োগ দিতে বলেন। মনজুর কাদির বেঁকে বসলে পরীক্ষার দিন সাংসদের লোকজন কেন্দ্রে হামলা চালায় এবং পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন জেলা প্রশাসক। তবে সহযোগিতা পাননি সরকারের।
কথা বলে জানা গেছে, ওই অবস্থারও পরিবর্তন ঘটেছে বহুলাংশে। এখন ছাত্রজীবনে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ততা থাকা না-থাকা নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনিয়ন্ত্রিত দুর্নীতি। ফ্রিডম হাউসের সর্বশেষ ডেমোক্রেসি রিপোর্ট (২০২৩) বলছে, দুর্নীতি, সুশাসনের অভাব, আমলাতন্ত্রের অস্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে বাংলাদেশ সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই। বাংলাদেশে রাজনীতিকরণ হয়েছে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম, বিচার বিভাগেও। পদায়ন, পদোন্নতির জন্য তাদের সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়।
এর মধ্যেও সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকে এখনো সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ মেনে চলছেন। তাঁরা আসলে টিকে থাকার লড়াইয়ে আছেন। যেমন বিচার বিভাগের একাধিক সূত্র নাম না প্রকাশের শর্তে বলেছেন, জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যে বিবৃতি দেবে, সে সম্পর্কে তাঁরা জানতেন না। অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন গত এক যুগে হয়নি। প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, সহকর্মীদের অনেকেই ছাত্রজীবনে তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় কী ছিল, তা প্রচার করে বেড়ান। সব সময় যে সত্য বলেন, তা-ও নয়। পদোন্নতি ও ভালো জায়গায় পদায়নের জন্য তাঁরা এই কৌশল নেন। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সরকার লুকোছাপা না করে বলে দিতে পারে, দলীয় কর্মী না হলে একটি পর্যায়ের পর আর পদোন্নতি হবে না। অপর এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা ধ্বংস করবে না।
শেষ করি একটা রুশ কৌতুক দিয়ে। কোথায় পড়েছিলাম মনে করতে পারছি না। এক ভদ্রলোক গিয়েছিলেন রেস্তোরাঁয়। মেনু দেখে প্রথমে মুরগির মাংসের অর্ডার করলেন। ওয়েটার বললেন, ওটা হবে না। এরপর করলেন গরুর মাংসের। আবারও একই জবাব। পরপর তালিকায় থাকা কোনো খাবারই মিলল না। হতাশ হয়ে তিনি বললেন, ‘আমি তো ভেবেছিলাম এটা মেনু, সংবিধান না।’
শেখ সাবিহা আলম প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক। ই-মেইল sabiha.alam@prothomalo.com