বিশ্লেষণ

পার্বত্য অঞ্চলে তিন কারণে ম্যালেরিয়া কমছে না

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু পার্বত্য তিন জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। তাই ম্যালেরিয়া নির্মূলে সচেতনতা কর্মসূচি ও রোগী ব্যবস্থাপনা আরও দক্ষ করতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুমিয়া ইউনিয়নের অনিল চাকমার চার বছরের ছেলে গভীর চাকমা গত বছরের ১৫ জানুয়ারি মারা যায়। দুমদুমিয়া ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা। অনিলের দাবি, ম্যালেরিয়ায় তাঁর শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। রাঙামাটি জেলার ম্যালেরিয়া–সংক্রান্ত নথিতে অবশ্য এই মৃত্যুর ঘটনা লেখা নেই। চিকিৎসকেরা বলছেন, শিশুটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খিঁচুনি।

শিশু গভীর চাকমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর আট দিন আগে মায়ের সঙ্গে ভারতের এক আত্মীয়বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল সে। বাড়িতে এসে এক সপ্তাহ ভালো থাকলেও পরে হালকা জ্বর দেখা দেয়। প্রথমে কবিরাজি চিকিৎসা করায় তারা। পরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির স্বাস্থ্যকর্মী পরীক্ষা করলে তার ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। শিশুটিকে ওষুধ দেওয়া হয়। পরে খিঁচুনি দেখা দিলে মুহূর্তে মারা যায় সে।

জেলার সার্ভিল্যান্স মেডিকেল অফিসার অ্যান্ড্রু বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশুটির ম্যালেরিয়া ছিল, তবে মারাত্মক নয়। তার মৃত্যুর আসল কারণ আমরা নির্ণয় করেছি খিঁচুনি। তবে এলাকাটি ম্যালেরিয়া উপদ্রুত। সেখানে প্রায়ই মানুষ মালেরিয়ায় আক্রান্ত হন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমছেই না। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে তিন বছর ধরে ম্যালেরিয়ার রোগী বাড়ছে। বান্দরবানে বিদায়ী ২০২৩ সালে রোগীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে কম হলেও এই সংখ্যা ২০২১ সালের তুলনায় অনেক বেশি।

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে চায়। দেশের ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯০ শতাংশ হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে। সেখানে এই রোগ বৃদ্ধির প্রবণতা সরকারের লক্ষ৵ পূরণে বাধা হয়ে উঠতে পারে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির পেছনে তিনটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন মাঠপর্যায়ের চিকিৎসক, কীটতত্ত্ববিদ ও গবেষকেরা। এক, পার্বত্য এলাকায় বিতরণ করা কীটনাশকযুক্ত মশারি মশা প্রতিরোধে কাজ করছে না। দুই, পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় সংক্রমণ বেশি হওয়ার পরও প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে নজরদারির অভাব। তিন, প্রকৃতি, মশা ও মানুষের আচরণে পরিবর্তন।

ম্যালেরিয়া কোন কোন জেলায় হচ্ছে

সরকারের ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৩টি জেলা ম্যালেরিয়াপ্রবণ। এর মধ্যে ‘উচ্চ ঝুঁকি’তে আছে পার্বত্য তিন জেলা। দেশের মোট ম্যালেরিয়া সংক্রমণের ৯০ ভাগের বেশি তিন পার্বত্য জেলায়। বাকি ১০ জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ‘নিম্নঝুঁকি’র এলাকা হিসেবে চিহ্নিত।

গত বছরের (২০২৩) পর্যন্ত পার্বত্য তিন জেলায় যত আক্রান্ত হয়েছে, তা গত বছরের তুলনায় কম হলেও ২০২১ সালের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি। তিন জেলার মধ্যে বান্দরবানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে ২০২২ সালের তুলনায় তুলনায় গত বছর সংক্রমণ প্রায় চার হাজার কম। তারপরও এ জেলায় ২০২৩ সালে দেশের সর্বোচ্চ ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ছিল। অন্য দুই পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ২০২১ সাল থেকে ম্যালেরিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

গত বছর পার্বত্য তিন জেলায় ১৪ হাজারের বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর সারা দেশে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৬ হাজার। এ সময়ে রাঙামাটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৪১৫ জন ও খাগড়াছড়িতে ৩৯০ জন। এর আগের বছর ২০২২ সালে দুই জেলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন যথাক্রমে ৩ হাজার ২১৯ ও ১৫৭ জন। ২০২২ সালে পার্বত্য তিন জেলায় ম্যালেরিয়ায় কারও মৃত্যু হয়নি। গত বছর বান্দরবানে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

তিন কারণে পাহাড়ের ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি

কোনো এলাকায় এক বছরে প্রতিহাজার মানুষের মধ্যে একজনের বেশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, তবে তা উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়। পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে এখন বান্দরবান ও রাঙামাটি বেশি ঝুঁকিতে। খাগড়াছড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও পার্বত্য জেলা হওয়ায় এখানে ঝুঁকি কম নয় বলে জানান ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মনিটরিং অ্যান্ড ইভল্যুশন বিশেষজ্ঞ ডা. নজরুল ইসলাম। তিনি বলছিলেন, ম্যালেরিয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে পার্বত্য তিন জেলা। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা

মাঝেমধ্যে কমলেও কোনো কোনো বছর আবার বেড়ে যাচ্ছে। এই হঠাৎ বৃদ্ধিই শঙ্কা জাগাচ্ছে বেশি।

রাঙামাটির জুরাছড়ির লুলাংছড়িমুখ বাজার

মশারির ঝুঁকি

পাহাড়ে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে সেখানে কীটনাশকযুক্ত মশারি দেওয়া হয়। তবে সেই মশারি এখন মশা প্রতিরোধে কাজে আসছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় আছেন রাঙামাটি সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিনোদ শেখর চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব মশারি দিচ্ছি, সেগুলো মশা প্রতিরোধে কার্যকর হবে কি না, আশংকা করছি। বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। চলতি বছর সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে এটা একটা কারণ।

অ্যানোফিলিস–জাতীয় মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়। দেশে অন্তত ৩৭ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশা রয়েছে। এর মধ্যে সাতটির অধিক প্রজাতি বেশি ম্যালেরিয়া ছড়ায়।

‘ইনক্রিমিনেশন অব ম্যালেরিয়া ভেক্টর মসকিউটোস ইন বাংলাদেশ: সিজনাল প্রিভিলেন্স অব অ্যানোফিলিস মসকিউটোস অ্যান্ড দেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন ম্যাপস’ শীর্ষক পিএইচডি গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘কীটনাশকযুক্ত মশারিতে “ডেলটামেট্রিন কীটনাশক” ব্যবহার করা হয়। আমরা গবেষণা করে দেখেছি, বেশ কয়েক বছর ধরে এটি মশা প্রতিরোধে কার্যকর হচ্ছে না। আমরা পরীক্ষাগারে কীটনাশক পরীক্ষা করলেও মশারি পরীক্ষা করিনি। তবে কীটনাশকই যেখানে কাজ করছে না, সেখানে মশারির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।’

ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিশেষজ্ঞ ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, যেসব মশা বেশি সংক্রমণ ছড়ায়, সেগুলো এখনো কীটনাশকপ্রতিরোধী হয়ে ওঠেনি। তাঁদের সংস্থার পক্ষ থেকে এ বছরই মশারির কার্যকারিতা দেখা হয়েছে। তাঁরা দেখেছেন, সেগুলো এখনো কার্যকর। তবে অপেক্ষাকৃত কম সংক্রামক ‘ভেগাস’ প্রজাতির মশার ক্ষেত্রে মশারি কাজ করছে কম। সন্দেহের তালিকায় থাকা মেকুলেটাস ও উইলমোরি প্রজাতিও কিছুটা মশারি–প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। তবে এই দুই ধরনের মশা ম্যালেরিয়া ছড়াতে বড় ভূমিকা রাখে, এমনটা প্রমাণিত নয়।

সীমান্তে সংক্রমণ

পার্বত্য তিন জেলার যেসব এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি, সেসবের প্রায় প্রতিটি দুর্গম ও সীমান্তবর্তী। রাঙামাটিতে জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি ও বরকল উপজেলায় সংক্রমণের হার বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জুরাছড়ি এলাকায়। এই উপজেলার দুমদুমিয়া ও মৈদং ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এই দুই ইউনিয়ন ভারতের মিজোরাম রাজ্যসংলগ্ন।

জুরাছড়ি উপজেলায় আয়তনে সর্ববৃহৎ দুমদুম্যা ইউনিয়ন ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত–সংলগ্ন।

রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য অফিস সূত্র জানাচ্ছে, ভারতের মিজোরামে সীমানার গুচ্ছগ্রামগুলোতে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি। সেসব গ্রামে দুমাদুমিয়ার অনেক বাসিন্দার আত্মীয়স্বজন রয়েছেন। সেখানে আসা–যাওয়াও চলে হরদম। এতে ম্যালেরিয়া বৃদ্ধি পায়।

জুরাছড়ি ইউনিয়নের কুসুমছড়ির সোহেল চাকমার স্ত্রী রবিনা চাকমার (২১) গত বছরের ডিসেম্বরে গর্ভবতী অবস্থায় ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। তাঁর স্বামী দুমদুমিয়া ইউনিয়নে গরুর ব্যবসা করেন। ভারত থেকে স্বামীর বাড়িতে আসার দুই সপ্তাহের মধ্যে রবিনা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন।

রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, ‘আমাদের দুর্গম অঞ্চলেও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে তৎপরতা আছে। কিন্তু ভারতের মিজোরামে এই তৎপরতা অনেক কম। এর কাছে মিয়ানমারের চিন প্রদেশ। সেখানে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে তেমন তৎপরতাই নেই। মশার তো সীমান্ত নেই। আমাদের দেশের কেউ কেউ নানা কাজে মিজোরামে যান। সেখান থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।’

কীটতত্ত্ববিদেরা বলেন, অ্যানোফিলিসের ওড়ার ক্ষমতা অনেক বেশি। এটি ডেঙ্গুর রোগ বহনকারী এডিস মশার মতো নয়। অ্যানোফিলিস টানা কয়েক কিলোমিটার উড়ে যেতে পারে। প্রতিবেশী দেশে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের তৎপরতা যথাযথভাবে কাজ করে না।

আচরণ পরিবর্তন ও বিরূপ প্রকৃতি

পাহাড়ে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। নতুন নতুন সড়ক হচ্ছে, অবকাঠামো হচ্ছে। গ্রামের চেহারা পাল্টাচ্ছে। দুর্গম গ্রামগুলোতেও এখন দোকনপাট বেড়েছে। সেখানে সান্ধ্য বা নৈশ আড্ডাও আগের চেয়ে বেশি। এসব এলাকার মানুষ অনেকেই সন্ধ্যার পর ঘরে ঢুকে পড়তেন। এখন অনেকেই বাইরে থাকেন। আর বাইরে থাকলে দ্রুতই মশার কামড়ে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে।

পাহাড়ে ম্যালেরিয়া ছড়াতে বাইমাই নামের একটি অ্যানোফিলিস মশার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এটি আগে গভীর রাতে কামড়াত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এটি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে আটটার মধ্যে অনেক সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে জানালেন কীটতত্ত্ববিদ খলিলুর রহমান।

ম্যালেরিয়া ছড়ানোর ক্ষেত্রে মশার আচরণ পরিবর্তনের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের আচরণ পরিবর্তনেরও সম্পর্ক থাকতে পারে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সংক্রামক রোগ বিভাগের বিজ্ঞানী মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি বলেন, আগে পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষ সন্ধ্যার দিকেই ঘরে চলে যেতেন। এখন যোগাযোগ বেড়েছে। গ্রামেও দোকানপাট বা জনপরিসর বেড়েছে। সঙ্গে আছে মুঠোফোন। এসব জনপরিসরে মানুষ বেশি সময় কাটান। তাই মানুষ সহজেই মশার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে।

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার কুকিছড়া গ্রাম

তাপমাত্রা, আদ্র৴তা ও বৃষ্টির গতিপ্রকৃতি মশার বংশবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। কয়েক বছর ধরেই বর্ষার আগে ও পরে অধিক বৃষ্টিপাত এবং অস্বাভাবিক বেশি তাপমাত্রাও পাহাড়ে। ম্যালেরিয়া বিস্তারের সঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্পর্ক তুলে ধরে জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন বলেন, ২০০০ থেকে ২০১০ সালে দেশে গড় তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দশকে তাপমাত্রা দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোগ সৃষ্টিকারী এডিস মশা বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখে।

পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে বর্ষা মৌসুমের আগে ও পরে বৃষ্টি বেড়েছে। প্রকৃতির এই বৈরী আচরণ ম্যালেরিয়া বাড়তে ভূমিকা রাখছে, এমন মত ডা. নজরুল ইসলামের।

এক দশকের বেশি সময় ধরে পাহাড়ে ফলের বাগান বাড়ছে। এসব স্থানে পাহারা দিতে গিয়ে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন, নিজের গবেষণার সূত্র ধরে এ তথ্য জানান অধ্যাপক কবিরুল বাশার।

কী করা দরকার

প্রকৃতির পরিবর্তন রুখে দেওয়া প্রায় অসম্ভব। কিন্তু এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ম্যালেরিয়া নিমূর্ল কর্মসূচিতে পরিবর্তন বা পরিমার্জনের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু বৃষ্টি এখন মূল মৌসুমের আগে আসছে, তাই সেই সময় নজরদারি বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পরিবর্তিত প্রাকৃতিক পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি ঠিক করতে হবে।’

পাহাড়ের ম্যালেরিয়া নির্মূলে কীটনাশকযুক্ত মশারির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশারের কথা, মশারির কার্যকারিতা দেখতে নতুন করে ব্যাপকভিত্তিক পরীক্ষা দরকার। নয়তো পাহাড়ের এই ভয়ানক সমস্যা থেকে সমাধান মিলবে না।

মুশতাক হোসেন বলেন, এসবের পাশাপাশি ম্যালেরিয়া নির্মূলে সচেতনতা কর্মসূচি ও রোগী ব্যবস্থাপনা আরও দক্ষ হওয়া উচিত।