রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে  জড়ো হন।

মতামত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে থামানোর কি কেউ নেই

একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিকভাবে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চর্চারও জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি তাই খুব স্বাভাবিক বা পরিচিত বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাই সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চর্চাগুলো হওয়ার কথা অনেক বেশি বুদ্ধিবৃত্তিক। সারা দুনিয়ার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমনটাই হচ্ছে।

আরও অনেক বিষয়ের মতো এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এক ‘ব্যতিক্রম’। বহু বছর ধরে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্ষমতাসীন সরকারের ছাত্রসংগঠনগুলো যে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, সেটাকে ছাত্ররাজনীতি বলা যায় কি না, তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি ও তা বজায় রাখার জন্য শুধু কি ছাত্রসংগঠনগুলো বা ছাত্ররাজনীতিই দায়ী, নাকি এর জন্য অন্যদেরও দায় আছে? সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেই প্রশ্নগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনা করতে হচ্ছে।

ছাত্রলীগের ‘অস্ত্রের মহড়া’ কেন প্রশাসনের নজরে পড়ে না

২০০৯ সাল থেকে টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। সংসদ এবং সংসদের বাইরে দলটির একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রবলভাবে দৃশ্যমান। সারা দেশ কার্যত ‘বিরোধীশূন্য’। একইভাবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগেরও একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অন্য ছাত্রসংগঠনগুলোর তৎপরতা প্রায় নেই বললেই চলে। এ রকম অবস্থায় নিজেদের মধ্যে অন্তঃকোন্দল এবং সংঘাত-সংঘর্ষের কারণে বারবার ছাত্রলীগের নাম উঠে আসছে।

গত শনিবার (১১ মে) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় দফায় দফায় রামদা ও লাঠিসোঁটা হাতে একে অপরকে ধাওয়া দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল গেট ও মাদার বখ্‌শ হলের মধ্যবর্তী স্থানে দুই পক্ষ অবস্থান নিয়ে এ হামলা চালায়।… (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ, প্রথম আলো অনলাইন ১২ মে ২০২৪)

এ ঘটনা সেদিনই শেষ হয়নি। সোমবার রাতেও (১৩ মে) সশস্ত্র মহড়া দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ানোর পর এবার এক নেতাকে ‘হত্যার’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে এক পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। ( প্রথম আলো অনলাইন, ১৪ মে ২০২৪)

এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য শুধু ছাত্রলীগকে দায়ী করলে সংগঠনটির প্রতি অবিচার করা হবে। দেশে গণতন্ত্রের অভাবে ক্ষমতাসীন দলের যে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি হয়েছে, সেটার প্রভাব-প্রতিক্রিয়া তাদের ছাত্রসংগঠনের ওপরও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। সোজা কথায়, ছাত্রলীগ যা করছে, সেটা আসলে জাতীয় রাজনীতিরই একটা প্রতিফলন। এমন অবস্থায় ছাত্রলীগকে থামানোর কেউ নেই—এমনটাই প্রতীয়মান হচ্ছে।

সোমবার রাতের ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। হলের বাইরে এক পক্ষের নেতা-কর্মীদের হাতে রামদা, রড ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের চোখে এখনো এমন দৃশ্য পড়েনি। হলে রাজনীতির বিষয়টা থাকায় আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি।’ (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া, পুলিশের অভিযান, আজকের পত্রিকা, ১৪ মে ২০২৪)

মিছিল-সমাবেশ করা, জমায়েত হওয়া—এগুলো সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার। দেশের অন্য যেকোনো মানুষের মতো ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরও এই অধিকার নিশ্চয়ই রয়েছে। কিন্তু অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়া, সংঘাত বা সংঘর্ষে জড়িত হওয়া ফৌজদারি অপরাধ। লক্ষণীয় হলো, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা একাধিকবার অস্ত্র হাতে মহড়া দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তাঁরা বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হকের বক্তব্য থেকে সেটাই প্রতীয়মান হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় চার নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ( প্রথম আলো অনলাইন, ১৫ মে ২০২৪)। এই বহিষ্কারাদেশ ‘লোকদেখানো’ কি না কিংবা এটা কত দিন কার্যকর থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কারণ, অতীতে এ রকম বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার নজিরও রয়েছে। লক্ষণীয় হলো, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তবু একটা ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সংঘর্ষে জড়ানো এবং অস্ত্র নিয়ে মহড়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না?

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেনের বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘...ছাত্রলীগের আদর্শের পরিপন্থী কিছু নেতা-কর্মী ক্যাম্পাসের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে।…’ ( রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া, পুলিশের অভিযান, আজকের পত্রিকা, ১৪ মে ২০২৪)

প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেনের এই বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনাবলির জন্য ছাত্রলীগকে দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা লক্ষণীয়। ‘ছাত্রলীগের আদর্শের পরিপন্থী’ বলে তিনি আসলে কাদের বুঝিয়েছেন? যেখানে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় চার নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেখানে তিনি কেন এর জন্য অন্য অন্য কাউকে দায়ী করতে চাইছেন?

ছাত্রলীগকে এভাবে ‘ছাড়’ দেওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করার আগে এঁদের বেশির ভাগই সরকার সমর্থক শিক্ষক সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ছাত্ররাজনীতিতে ছাত্রলীগের যে ভূমিকা, শিক্ষকরাজনীতিতেও তাঁরা প্রায় একই ধরনের ভূমিকা পালন করছেন। তাঁদের মধ্যে আদর্শগত মিল রয়েছে, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সরকার সমর্থক শিক্ষকদের পক্ষে সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তাই খুব সহজ কাজ নয়।

ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের মহড়া

ছাত্ররাজনীতি মানে কি হল দখল, সিট দখল

প্রাধ্যক্ষ মহোদয় আদর্শের কথা বললেও বাস্তবতা ভিন্ন। ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের নেপথ্যে আধিপত্য ও সিট ভাগ-বাঁটোয়ারার দ্বন্দ্বই ছিল প্রধান কারণ। শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে সরেজমিন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।’ (রাবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের নেপথ্যে আধিপত্য ও সিট ভাগ-বাঁটোয়ারার দ্বন্দ্ব, কালবেলা, ১৫ মে ২০২৪)

রাজনৈতিক বা আদর্শিক কারণে অনেক সময় একই সংগঠনের মধ্যেও ভিন্নমত কিংবা বিভেদ-বিভাজন তৈরি হতে পারে। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘাত-সংঘর্ষের কারণ রাজনৈতিক বা আদর্শিক নয়। এ রকম কোনো কারণে গত ১৫ বছরেও কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, সংগঠনটির মধ্যে কোনো ‘আদর্শিক দ্বন্দ্ব’ আছে, এমনটাও জানা যায়নি। সংঘর্ষের যত ঘটনা ঘটেছে, তার সব কটিই হয়েছে হল দখল, সিট দখল, টেন্ডারবাজি কিংবা নেতাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার—এ রকম কোনো কারণে।

হল দখল বা সিট দখলের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের শিকার হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটতেই এ রকম দুটি ঘটনার কথা জানা গেছে।

ঘটনা-১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্‌শ হলে মধ্যরাতে এক শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে তুলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আসন থেকে বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়েছেন। …(প্রথম আলো অনলাইন, ১৬ মে ২০২৪)

ঘটনা-২
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে সবুজ বিশ্বাস নামের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হলছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। মারধরের পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ করা হয়েছে। (প্রথম আলো, ১৭ মে ২০২৪)

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি-নির্যাতন করার যে অভিযোগ উঠেছে, সেটা নতুন কিছু নয়। এটা বছরের পর বছর ধরে চলছে। সবকিছু জেনে-শুনেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘নীরব’ থেকেছে। গত বছর এ-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল:

‘একের পর এক শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েই চলেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগ। গত এক বছরে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন, হুমকি প্রদান, ভয়ভীতি প্রদর্শন, সিট-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও আবাসিক শিক্ষার্থীদের জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়া, এমনকি স্বাধীনতা দিবসের খাবার লুট করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

এসব ঘটনার লিখিত অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও জড়িত কাউকে স্থায়ী শাস্তির আওতায় আনেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর শাস্তি না হওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।’ (একের পর এক শিক্ষার্থী নির্যাতন: বেপরোয়া রাবি ছাত্রলীগ, যুগান্তর, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)

‘ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নেই’

ঘোষণাপত্র বা গঠনতন্ত্রে অনেক ভালো বা গঠনমূলক কথা লেখা থাকলেও একটি সংগঠন আসলে চালান নেতা-কর্মীরা। সেই নেতা-কর্মীরা তাঁদের নিজ সংগঠনকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি ছাত্রলীগের এক নেতা তাঁর সংগঠন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর কথা বলেছেন। সেটা নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নেই, কোনো শক্তি নেই, এভাবেই নিজের সংগঠনকে নিয়ে এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারী।’ (ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নেই, ছাত্রলীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল, কালবেলা, ১৪ মে ২০২৪)

ছাত্ররাজনীতি বা ছাত্র আন্দোলন আর দখলদারি-সন্ত্রাস এক বিষয় নয়। সেই কারণে কয়েক বছর ধরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যে ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত হচ্ছেন, সেটাকে ছাত্ররাজনীতি বলা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।

এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য শুধু ছাত্রলীগকে দায়ী করলে সংগঠনটির প্রতি অবিচার করা হবে। দেশে গণতন্ত্রের অভাবে ক্ষমতাসীন দলের যে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি হয়েছে, সেটার প্রভাব-প্রতিক্রিয়া তাদের ছাত্রসংগঠনের ওপরও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। সোজা কথায়, ছাত্রলীগ যা করছে, সেটা আসলে জাতীয় রাজনীতিরই একটা প্রতিফলন। এমন অবস্থায় ছাত্রলীগকে থামানোর কেউ নেই—তেমনটাই প্রতীয়মান হচ্ছে।

  • মনজুরুল ইসলাম প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক