বিশ্লেষণ

২১ বছর পর যেভাবে ক্ষমতায় ফিরল আওয়ামী লীগ

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ হচ্ছে নির্বাচন। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ক্ষমতাকে বৈধতা দেয়। গ্রহণযোগ্য না হলে সেই ক্ষমতার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাই নির্বাচন শুধু আইনি বা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয় নয়, এর সঙ্গে ক্ষমতার বৈধতা, গণতন্ত্র, রাজনৈতিক বন্দোবস্ত—এ সবকিছুই জড়িত। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে সাতবার সামরিক শাসনসহ দলীয় সরকার ও চারবার নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। এসব নির্বাচনের প্রেক্ষাপট, নির্বাচনের ফলাফল এবং রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে পাঁচ পর্বের লেখার আজ তৃতীয় পর্ব

১৯৯০ সালের মাঝামাঝি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আবারও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে সময় তিনটি রাজনৈতিক জোট এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ছিল। নভেম্বরে তিন জোট যৌথভাবে একটি রূপরেখা ঘোষণা করে। এই রূপরেখায় একটি অস্থায়ী বা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং এর অধীনে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়।

আন্দোলনের মুখে এরশাদ তিন জোটের মনোনীত প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর এরশাদ পদত্যাগ করেন। ৭ ডিসেম্বর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন। উপদেষ্টাদের নিয়ে তিনি একটি সরকার গঠন করেন। লক্ষণীয় হলো, সংবিধানে তখন ‘অস্থায়ী’ বা ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকার বলে কিছু ছিল না। কিন্তু রাজনৈতিক ঐকমত্যের কারণে সব দল ও দেশের মানুষ এর প্রয়োজন অনুভব করেছিল এবং মেনে নিয়েছিল।

১৯৯১: পঞ্চম সংসদ নির্বাচন

জাল ভোট, কারচুপি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের কারণে এরশাদ আমলে নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ এবং তাঁর সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৭৫টি দল এ নির্বাচনে অংশ নেয়। প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৮৭। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রচারণায় বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। অপরদিকে বিএনপির প্রচার-প্রচারণায় গুরুত্ব পেয়েছিল বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। দুটি দলের পক্ষ থেকেই রেডিও-টেলিভিশনের স্বায়ত্তশাসন, গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আইন বাতিলের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

এ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে বিএনপি ১৪০টি, আওয়ামী লীগ ৮৮টি, জাতীয় পার্টি ৩৫টি এবং জামায়াতে ইসলামী ১৮টি আসন পায়। জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে বিএনপি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের মতে, এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। একই সঙ্গে এ নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তবে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক অদৃশ্য শক্তির গোপন আঁতাতের মাধ্যমে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে।’ অপরদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘নির্বাচন অত্যন্ত সুন্দরভাবে হয়েছে।’

বেশির ভাগ জরিপে আওয়ামী লীগের জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হলেও নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বিএনপি বিজয়ী হওয়ায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। নির্বাচনের এমন ‘অপ্রত্যাশিত’ ফলাফল নিয়ে বিএনপি: সময়-অসময় বইয়ে মহিউদ্দিন আহমদ লিখেছেন, ‘এটা ছিল জনমনে আওয়ামী লীগের একটি বিকল্প খোঁজার চেষ্টা। এখানে দুটো বিষয় যুগপৎ কাজ করেছে। প্রথমত, বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা ও প্রচারণা। দ্বিতীয়ত, সজ্ঞানে কিংবা অবচেতন মনে জনগোষ্ঠীর একটা বিরাট অংশের মধ্যে জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি এবং “বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ” সম্পর্কে অস্পষ্ট হলেও একধরনের পক্ষপাত।’ এ ছাড়া এরশাদবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়ার ‘আপসহীন’ ভূমিকা এ নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে অনেকে মনে করেন।

একটি অস্থায়ী বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল বাংলাদেশে এর আগে অনুষ্ঠিত যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। ভোটার উপস্থিতি, প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিংবা নির্বাচনী পরিবেশ—প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য। দীর্ঘ সামরিক শাসনের পর এ নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ ভোটের ওপর তাদের আস্থা ফিরে পেয়েছিল। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠন করা হয়। ২১ মার্চ শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারি): ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন

দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সামরিক-বেসামরিক স্বৈরশাসনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুনভাবে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করার একটি সুযোগ এসেছিল। সরকারি দল ও প্রধান বিরোধী দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার পদ্ধতির বদলে সংসদীয় পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার ঘটনায় অনেকে বেশ আশাবাদীও হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বিরোধী দলগুলো সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। ১৯৯৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সংসদে বিরোধী দল আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানায়। ১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে এক জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করব।’

১৯৯৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিরোধী দলগুলো একযোগে সংসদ বর্জন করে। সংসদ বর্জন চলাকালীন ২০ মার্চ মাগুরা-২ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। সব কটি বিরোধী দল নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, বিএনপির অধীন কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মাগুরা উপনির্বাচনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন জোরদার হয়।

১৯৯৪ সালের ২৪ জুন বিরোধী দলগুলো সংসদ ভবনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করে। কিন্তু ক্ষমতাসীন বিএনপি বিষয়টি আমলে নেয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধী দলগুলো সংসদ বর্জনসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখে। ২৪ নভেম্বর সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশির ভাগ বিরোধী দল বিএনপি সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন বর্জন করে। তবে বিএনপিসহ ৪২টি দল নির্বাচনে অংশ নেয়। প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৫০।

এ নির্বাচনে বিএনপি ২৭৮টি আসন পায়। এর মধ্যে ৪০ জনের বেশি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ফ্রিডম পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০টি আসন পেয়েছিলেন।

‘ভোটারবিহীন’ বিতর্কিত এ নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে ভোট প্রদানের হার ছিল ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর মতে, এটা ১০ শতাংশের বেশি ছিল না।

‘একতরফা’ এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তৎকালীন বিএনপি সরকারের প্রধান যুক্তি ছিল সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ‘রক্ষা’ করা। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুল মান্নান তাঁর ইলেকশনস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ বইয়ে বলেছেন, নির্বাচনটি হয়তো সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে রক্ষা করেছে এবং এর মাধ্যমে বিএনপি সরকার আইনি বৈধতা পেয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ ও প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় তা গণতন্ত্রের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না।

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যে আশঙ্কা ছিল, ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর তা সত্যি বলে প্রমাণিত হয়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলন জোরদার হয়। ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকে বিরোধী দলগুলো হরতাল ও অসহযোগের মতো আন্দোলন চালাতে থাকে। সরকারি কর্মচারীদের একাংশ এতে যুক্ত হয়। এর ফলে প্রশাসনের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আলগা হয়ে যায় এবং বিরোধীদের আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে। ১৯ মার্চ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয় এবং ষষ্ঠ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে। তীব্র আন্দোলনের মুখে ২১ মার্চ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল উত্থাপন করা হয়। ২৬ মার্চ গভীর রাতে সেই বিল পাস হয়।

১৯৯৬ (১২ জুন): সপ্তম সংসদ নির্বাচন

আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলোর দাবি ও আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস হলেও বিষয়টি নিয়ে তখন সব দলের মধ্যেই একটা রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল। তা ছাড়া নাগরিক সমাজের বড় অংশ এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। এ রকম অবস্থায় ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সংসদ ভেঙে দেন এবং তিনি নিজেও পদত্যাগ করেন। এরপর ৩১ মার্চ রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস সদ্য পরিবর্তিত সংবিধান অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করেন। তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি সাদেক পদত্যাগ করেন। মোহাম্মদ আবু হেনাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আরও নতুন দুজন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা হয়।

বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন ‘উৎসবমুখর’ পরিবেশে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৮১টি দল এতে অংশ নেয়। প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৭৪।

এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসন পায়। অপরদিকে বিএনপি ১১৬টি, জাতীয় পার্টি ৩২টি এবং জামায়াতে ইসলামী ৩টি আসন পায়। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৭৪ দশমিক ৮১ শতাংশ, যা আগের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে বেশি।

এ নির্বাচন ছিল যেমন অংশগ্রহণমূলক, তেমনি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো এ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলে স্বীকৃতি দেয়। বিজয়ী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। বিএনপি প্রথম দিকে ফলাফল মেনে না নেওয়ার কথা চিন্তা করলেও পরে তা মেনে নেয়।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ২১ বছর পর ক্ষমতায় ফিরে আসে আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনে দলটির জয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতাই প্রমাণ করেছিল। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে যে জটিলতা ছিল, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার মাধ্যমে তার একটি স্থায়ী সমাধান সম্ভব হয়েছে—সেই সময় অনেকেই এমন ধারণা করেছিলেন।

সূত্র:

১. মহিউদ্দিন আহমদ, বিএনপি: সময়-অসময়, প্রথমা

২. মো. আব্দুল মান্নান, ইলেকশনস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ, একাডেমিক প্রেস অ্যান্ড পাবলিশার্স লাইব্রেরি

৩. নেসার আমিন সম্পাদিত বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা ও ফলাফল, ঐতিহ্য