মতামত

‘ঢাকায় ৪০ মিনিটে ১টি তালাক’: এত বিবাহবিচ্ছেদের কারণ কী

আমি তখন হাইস্কুলে পড়ি। রোমেলা (ছদ্মনাম) নামে আমার এক সমবয়সী আত্মীয় ছিল। একদিন হঠাৎ তার খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে রোমেলার বিয়ে হয়ে গেল। এক মাস পরে একদিন প্রচুর কোলাহলের শব্দ শুনতে পেয়ে আমরা দৌড়ে রোমেলাদের বাড়িতে যাই। গিয়ে দেখি, রোমেলাকে উঠানের মাঝখানে বসিয়ে চুলের মুঠি ধরে রোমেলার স্বামী বৃত্তের পরিধি তৈরি করার মতো করে ঘুরাচ্ছে। আর রোমেলার মা-বাবা, ভাইবোন ও প্রতিবেশীরা সেই দৃশ্য গভীর মনোযোগে পর্যবেক্ষণ করছে।

উপস্থিত দর্শকদের কেউ প্রতিবাদ করছে না দেখে আমি জানতে চাইলাম, রোমেলার অপরাধ কী এবং জানতে পারলাম, রোমেলা স্বামীর বাড়িতে আর যেতে চায় না। স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চায় না। রোমেলার পরিবার, শ্বশুরবাড়ি ও সমাজের চোখে বিয়ের এক মাসের মধ্যে বিয়ে ভেঙে দেওয়া এক ঘোরতর অপরাধ। বিপরীতক্রমে, রোমেলার স্বামী কাবিননামায় স্বাক্ষর করার সঙ্গে সঙ্গে রোমেলার অভিভাবক হয়ে উঠেছে। অতএব রোমেলাকে সংসার করতে বাধ্য করানো যেন তার নৈতিক অধিকার। আমি সতীদাহ প্রথার গল্প কেবল বইয়েই পড়েছি, কিন্তু এ রকম শত শত রোমেলার স্বপ্নদাহ নিজের চোখে দেখেছি।

গত ১৩ জুন প্রথম আলো অনলাইনে ‘ঢাকায় ৪০ মিনিটে ১টি তালাক’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এ ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীরা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন বেশি করছেন। প্রতি ১০ জন বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনকারীর মধ্যে ৭ জনই নারী (প্রথম আলো অনলাইন, ১৩ জুন, ২০২৩)। এই পরিসংখ্যান কাজী অফিস সূত্রে পাওয়া। প্রতিবেদনটি দেখে আমি স্বস্তি পেয়েছি এটা ভেবে যে ২৫ বছর আগে রোমেলারা যেখানে স্বামীর ইচ্ছার কাছে নিজের ইচ্ছাকে বলি দিয়েছে, আজকের স্বাবলম্বী নারীরা সেখানে নিজের সম্মান ও অধিকার—দুটোই আদায় করতে সক্ষম।

আমার কাছে মনে হয়, বিবাহবিচ্ছেদের অন্যতম কারণ ভুল সঙ্গী নির্বাচন এবং সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর চেয়ে পরিবারের চাহিদাকে অতিরিক্ত অগ্রাধিকার দেওয়া। এক জোড়া নর-নারী যখন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তখন নিজেদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের জীবনে অনুষঙ্গ হিসেবে কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং মানুষ যোগ হয়। এ ক্ষেত্রে পিতৃতান্ত্রিক পরিবার প্রথার কারণে একজন নারীর জীবনে অনুষঙ্গের তালিকা ঢের বেশি।

সন্তান ও সমাজের কথা ভেবে অসুখী ও অসম বিয়ে টিকিয়ে রেখে জীবন পার করলে তাতে সমাজ জেতে ঠিকই, হেরে যায় মানবতা। জীবন খুব ছোট। পূর্ণতা ও তৃপ্তির সঙ্গে মৃত্যুবরণ প্রতিটি মানুষেরই অধিকার। দুজন মানুষ যখন একসঙ্গে যাত্রা শুরু করেন, নৈতিক মানুষমাত্রই প্রত্যাশা করেন, তাঁরা একসঙ্গে একই গন্তব্যে পৌঁছাবেন। কিন্তু যাত্রাপথে যদি দুজনের গন্তব্য আলাদা হয়ে যায়, সভ্য সমাজ তাঁদের সেই সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক মনে করলেও সম্মান করে।

অন্যদিকে, পুরুষের ক্ষেত্রে এই অনুষঙ্গ নেই বললেই চলে। স্ত্রীর দ্বারা স্বামী নির্যাতনের কিছু অভিযোগ শোনা গেলেও সেই নির্যাতন যেহেতু এককেন্দ্রিক, স্ত্রীর পরিবারের অন্য সদস্যরা সেখানে নিষ্ক্রিয়, তাই হয়তো নির্যাতিত পুরুষ সমাজ ও সন্তানের সুখের কাছে নিজের সুখকে বিসর্জন দেন।

অন্যদিকে, স্বামীর পরিবার, তথা স্বামীর পিতা-মাতা, ভাই-বোন যদি সহযোগিতা না করেন এবং স্বামী যদি তাঁর পরিবারের অসহযোগিতাকে প্রশ্রয় দিতে থাকেন, সে ক্ষেত্রে একজন নারীর জন্য সংসার হয়ে ওঠে অসহনীয় ও বিষাক্ত। অনেক ক্ষেত্রেই স্বাবলম্বী নারী সেই বিষাক্ত সম্পর্ক থেকে বের হয়ে এসে স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের চিন্তা করেন। সম্মান ও স্বাধীনতা নিয়ে বেঁচে থাকা ব্যক্তিমাত্রই রাষ্ট্রিক ও নৈতিক অধিকার বৈকি।

দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, খাদ্য, পানীয় ও যৌনতা মানুষের মৌলিক চাহিদা। আর দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর যৌন চাহিদা পরিপূরণের বৈধ সামাজিক লাইসেন্স হলো বিয়ে। বিয়ের ফলে প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারী যেমন একদিকে তাঁদের সহজাত জৈবিক চাহিদা বৈধভাবে পরিপূরণ করতে পারেন, তেমনি নর-নারীর বহুগামিতা প্রতিরোধেও বিয়ের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা আছে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে হলেও এটি সত্যি যে আমাদের সমাজ একজন প্রাপ্তবয়স্ক নর বা নারীর এই স্বাভাবিক চাহিদাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা না করে বরং এই স্বাভাবিক যৌন চাহিদাকে বোতলবন্দী করে রাখেন। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের প্রতি উভয়ের যৌন চাহিদা পূরণের আবশ্যকতাকে উপেক্ষা করতে থাকেন। এ কারণে একটা পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাঁদের সম্পর্ক হয়ে ওঠে কেবল সন্তানকেন্দ্রিক এবং পারস্পরিক আকর্ষণহীন।

আমাদের সমাজে নারী-পুরুষের আচরণ নিয়ে আছে একধরনের দীর্ঘ ট্যাবু। এ সমাজ আদর্শ নারী বলতে বোঝায় রান্নাবান্নায় পারদর্শী এবং সন্তান লালনে দক্ষ নারীকে। অন্যদিকে, আদর্শ পুরুষ মানে হলো জ্ঞানবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যাঁর রয়েছে অবাধ বিচরণ। ফলে, অপরিণত ক্যারিয়ার ও দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রামের প্রথম জীবনে দুজন নর-নারী ভালোবেসে ঘর বাঁধলেও কালক্রমে দুজনের ফোকাস দুদিকে প্রসারিত হতে থাকে। একদিকে স্ত্রীর মনোযোগ থাকে আদর্শ স্ত্রী ও আদর্শ মা হওয়ার প্রতি, অন্যদিকে স্বামী ব্যস্ত নিজের ক্যারিয়ার ও জ্ঞানচর্চায়। এখন অনেক নারী তাঁর ক্যারিয়ারের ব্যাপারে বেশ সচেতন এবং নিজ কাজের ক্ষেত্রে তারা যথেষ্ট সাফল্যও দেখাচ্ছেন। কিন্তু দেখা যায় এরপরও প্রাত্যহিক সাংসারিক যেসব কাজ থাকে সেই  দায়িত্ব থেকে অনেকেই মুক্তি পান না।

সাধারণভাবে ক্যারিয়ার ও বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে বেশি যুক্ততার কারণে স্বামীর জগৎ যতটা প্রসারিত হয়, স্ত্রীর জগৎ ততটাই সংকুচিত হতে থাকে। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে জ্ঞানের পরিসীমা, চিন্তার গভীরতা, বাক্য, কর্ম, মনন ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয় এক বিস্তর পার্থক্য। তখন তাঁদের জন্য বৈবাহিক জীবন মানেই যেন প্রতিদিনের অপছন্দের রুটিন মেনে চলা। এই রুটিন যিনি ভালোবেসে মানছেন, তাঁর জন্য এটি আশীর্বাদ, কিন্তু যিনি মেনে চলতে চাচ্ছেন না, তাঁর জন্য সেটি হয়ে ওঠে অনুরোধে ঢেঁকি গেলার মতো। এ কারণে একদিকে স্ত্রী যেমন সংসারে তাঁর মর্যাদা হারান, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, অন্যদিকে স্বামীর জন্য সেই সংসার হয়ে ওঠে এক আকর্ষণহীন রুটিন।

তবে সমাজে বিবাহবিচ্ছেদের পর পুরুষের তুলনায় একজন নারী বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হয়ে পড়েন। এ সমাজে একজন অবিবাহিত নারী নিজের চেয়ে দ্বিগুণ বয়সী বিপত্নীক কিংবা তালাকপ্রাপ্ত পুরুষের একাধিক সন্তানের মাতৃত্ব মেনে নিয়ে বিয়ে করতে রাজি হলেও বাঙালি অবিবাহিত পুরুষ বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত নারীকে বিয়ে করতে নারাজ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন পুরুষ নিজের বৈবাহিক অবস্থার সমপর্যায়ের কারও সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও স্ত্রীর প্রথম পক্ষের সন্তানের প্রতি চরম বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করেন।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে যুগে যুগে সৎমায়ের নির্যাতনের গল্প সাহিত্যের পাতায় স্থান পেলেও সৎ বাবার অত্যাচার কিংবা অমানবিক আচরণের গল্প সবার অলক্ষ্যেই রয়ে যায়। নারী লেখকের স্বল্পতার কারণে হয়তো বিষয়গুলোর গভীরতা আমাদের সামনে কম আসে। একজন পুরুষের লেখনীতে যে চিত্রনাট্য ছোট কিংবা বড় পর্দায় দর্শকপ্রিয়তা পায়, সেখানেও অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সংসারবিমুখ ক্যারিয়ারিস্ট নারীমাত্রই ছলনাময়ী ও মায়াবিনী। আদর্শ নারী মানে হলো নিজের সন্তানকে এতিমখানায় পাঠিয়ে দিয়ে স্বামীর সন্তানের মা হতে পারা।

সমাজের এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া জরুরি। নারীর বিচ্ছেদ মানেই তাঁর সব নারীত্ব শেষ হয়ে যাওয়া নয়।

বিবাহপূর্ববর্তী সম্পর্কের ভাঙন যেমন সমাজ এখন ইতিবাচক হিসেবে দেখছে, তেমনি বিবাহপরবর্তী সম্পর্কের ভাঙনকেও সম্মানের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। তাই বিবাহবিচ্ছেদ কিংবা বিধবাও যেন একজন অবিবাহিত পুরুষের সঙ্গে আবার গাঁটছড়া বাঁধতে পারেন, নতুন করে জীবন শুরু করতে পারেন, সে বিষয়ে পুরুষকে এগিয়ে আসতে হবে। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ যদি অবশ্যম্ভাবী হয়, তবে তাঁকে সুন্দর ভবিষ্যতের সম্ভাবনা হিসেবে দেখতে হবে।

কিন্তু আমাদের দেশে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে যে পরিমাণ উদ্বেগ দেখা যায় বা সমাজে যেভাবে বিবাহবিচ্ছেদকে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়, সেটা সভ্য সমাজের জন্য খুবই অনভিপ্রেত। আমরা ভুলে যাই যে বিয়ে একটা চুক্তি। আর এই চুক্তি ভঙ্গ করা ব্যক্তিমাত্রেরই অধিকার। দুজন মানুষ পাশাপাশি পথ চলতে গিয়ে যদি কখনো তাঁদের মাঝে দূরত্ব বাড়তে থাকে, তবে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে একটি অসুখী জীবনের বোঝা বহন করার চেয়ে সম্মান ও স্বস্তি নিয়ে আলাদা থাকা অনেক শ্রেয়।

একটি সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য দুজনের বিয়ে নামক চুক্তির প্রতিটি শর্ত পালন করা জরুরি। যতক্ষণ উভয়েই নিজে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ না করছেন, ততক্ষণ তাঁদের সম্পর্ক অটুট থাকবে। মূল কথা হলো সংসার টিকে থাকে উভয়ের যৌথ প্রচেষ্টায়, আর সংসার ভেঙে ফেলার জন্য একজনের আচরণ বা ইচ্ছাই যথেষ্ট।
অর্থাৎ, বিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্য দুজনের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ, একে অপরের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে হস্তক্ষেপ না করা খুব জরুরি। তার চেয়ে বেশি জরুরি নিজেদের পারস্পরিক বোঝাপড়ায় পরিবারের অন্য সদস্যদের অযাচিত প্রবেশাধিকারকে প্রতিহত করা। একটি সুখী দম্পতি মানে এই নয় যে একজন চা পছন্দ করে বলে অপরজনকে চা-ই পছন্দ করতে হবে। সুখী দম্পতি মানে হলো একসঙ্গে একই টেবিলে বসে একজন গরম পানীয় এবং অপরজন ঠান্ডা পানীয় সেবনের অধিকার সংরক্ষণ করা।

একজন নারী বা পুরুষ যখন সুশিক্ষায় শিক্ষিত হন, তখন তিনি সমাজের অন্যদের মতো নিজেকে সম্মান করতে শেখেন। অন্যের প্রতি অন্যায় যেমন কাম্য নয়, তেমনি নিজের প্রতি অন্যায়কেও প্রতিহত করাও মানুষের কর্তব্য। জীবন একটাই। এক জীবনে প্রতিটি মানুষের সুখী হওয়ার অধিকার আছে। যে সম্পর্কে সুখ নেই, যে সম্পর্ক প্রতি মুহূর্তে কেবল সমঝোতা করতে বাধ্য করে, যে সম্পর্ক নিজেকে বিসর্জন দিতে বাধ্য করে, সেই সম্পর্কের জালে আবদ্ধ থাকা অন্যায়। মানুষ পশু নয় যে তাঁর নিজের সুখকে কোরবানি করতে হবে। মানুষ গাধা নয়, যে তাঁকে অসুখী জীবনের বোঝা টানতে বাধ্য হতে হবে। মানুষ সৃষ্টিজগতের শ্রেষ্ঠতম প্রাণী। তাই একটি সম্পর্কে আবদ্ধ থাকা যেমন তাঁর অধিকার, তেমনি সেই সম্পর্ক থেকে বের হওয়াও তাঁর অধিকার।

আমি মনে করি, যে সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ নেই, নেই পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বা কোনো সম্মোহনী টান, সেই সম্পর্কের রুটিন থেকে বেরিয়ে আসা প্রত্যেক মানুষের অধিকার। সমাজে এর কিছু ইতিবাচক ফলও আছে। এতে প্রত্যেক বাঙালি নারী স্বামীর পাশাপাশি নিজের ক্যারিয়ারে ফোকাস করবেন, সংসার রক্ষার পাশাপাশি জ্ঞানচর্চায় আত্মনিয়োগ করবেন, সেই সঙ্গে স্বামীর কাছ থেকে স্বমহিমায় মর্যাদা লাভ করবেন। স্বামীর আনুকূল্য পাওয়ার চেয়ে নিজগুণে স্বামীর শ্রদ্ধা ও সম্মান পাওয়াটা অনেক বেশি মর্যাদাকর বৈকি।

পরিশেষে বলি, সন্তান ও সমাজের কথা ভেবে অসুখী ও অসম বিয়ে টিকিয়ে রেখে জীবন পার করলে তাতে সমাজ জেতে ঠিকই, হেরে যায় মানবতা। জীবন খুব ছোট। পূর্ণতা ও তৃপ্তির সঙ্গে মৃত্যুবরণ প্রতিটি মানুষেরই অধিকার। দুজন মানুষ যখন একসঙ্গে যাত্রা শুরু করেন, নৈতিক মানুষমাত্রই প্রত্যাশা করেন, তাঁরা একসঙ্গে একই গন্তব্যে পৌঁছাবেন। কিন্তু যাত্রাপথে যদি দুজনের গন্তব্য আলাদা হয়ে যায়, সভ্য সমাজ তাঁদের সেই সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক মনে করলেও সম্মান করে। সত্যিটা এখানেই—মানুষ যত সভ্য হবে, মানুষ তত স্বাধীনচেতা ও অধিকারসচেতন হবে, মানুষে মানুষে বিচ্ছেদও তত বাড়তে থাকবে।

  • নাসরীন সুলতানা সহযোগী অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং পিএইচডি শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও, কানাডা।
    ই-মেইল: nsultana79ju@gmail.com