বিশ্লেষণ

হাসপাতালে নবজাতক চুরি, দায় কার

হাসপাতাল/ক্লিনিকে বেশি নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাসপাতালের কর্মচারীদের যোগসাজশে এসব ঘটনা ঘটে। বছরে গড়ে কত নবজাতক চুরি বা উদ্ধার হয়, সেই তথ্য কোথাও নেই।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে গত ২৬ এপ্রিল মো. সিদ্দিক নামের তিন বছরের এক শিশুকে অপহরণ করা হয়। বিষয়টি ধরা পড়ে সিসিটিভি ফুটেজে। গত বৃহস্পতিবার শিশুটিকে উদ্ধার ও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব
ছবি: র‌্যাবের সৌজন্যে

গণমাধ্যমের ‘বারোমাইস্যা’ খবরের মধ্যে এখন নবজাতক চুরি আর শিশু কেনাবেচার খবর হরহামেশা চোখে পড়ে। অভিযোগ আছে, এখন সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মফস্‌সলের এক দরজার ক্লিনিকেও নবজাতকেরা সব সময় নিরাপদ নয়। অনেকে মনে করেন, সংঘবদ্ধ শিশুচোর চক্র হাসপাতাল/ক্লিনিকের কর্মচারীদের যোগসাজশে নবজাতক চুরি করে। অভিযোগ যা-ই থাক, ‘প্রমাণের অভাবে’ হাসপাতাল/ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না বা অনেক সময় নিতে চায় না।

সারা দেশে নবজাতক বেচাকেনার বাজার

মুক্তবাজার অর্থনীতি উঁচু গলায় বলে বেড়ায়, যেসব পণ্যের চাহিদা আছে, তার বাজার আছে। সেই বেচাকেনা আলোয় নাকি আঁধারে চলছে, সেটা হলো বিষয়। বেচাকেনা যেভাবেই হোক, সেখানেও চাহিদা ও সরবরাহের নীতিমালা কাজ করে। কর/কমিশনের ভাগ-বাঁটোয়ারা চলে। লাইসেন্স/এজেন্সি ইত্যাদিও আছে।

চুরি করে বা চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন এমন ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, ক্রেতার কাছ থেকে রীতিমতো বায়না (অগ্রিম) নিয়ে তাঁরা মাঠে নামেন। বেশ ভালো অঙ্কের বিনিময়ে বিক্রি হয় পছন্দের শিশু। বাজারে ছেলেশিশুর চাহিদা বেশি। লাখ টাকার কমে বেচাকেনা হয় না ‘বংশের বাতিখ্যাত’ ছেলেশিশু। তবে তথাকথিত ‘সুশ্রী’ মেয়েশিশুর বাজারও একেবারে খারাপ নয়। চোরা বাজারে নবজাতক ছেলের সাংকেতিক নাম নাকি ‘জামাই’, আর মেয়েশিশুর সাংকেতিক নাম ‘বউ’।

আইনের খোলা দরজা দিয়ে দত্তকব্যবস্থা আবার চালু করলে এবং দত্তককে উত্তরাধিকারের স্বাভাবিক অধিকার দিলে অন্যের সন্তানকে চুরি করে নিজের সন্তান বলে চালিয়ে দেওয়ার তকলিফ কেউ নিতে চাইবে না। ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়াসহ অনেক মুসলিম দেশ তাদের অভিভাবকত্ব আইনের আওতায় উত্তরাধিকারের বিষয়টি ফয়সালা করেছে। আমাদেরও একটা পথ বের করতে হবে।

বলাবাহুল্য, পুরুষের দাপটে চলা সমাজে ছেলেশিশুর দাম মেয়েশিশুর চেয়ে অনেক বেশি। মুক্তবাজার সেটা মেনেই বেচাকেনার দরদাম ঠিক করে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, খুলনা সদর হাসপাতালে যমজ সন্তানের জন্ম হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ। মা ছেলের নাম রাখেন জুনায়েদ ও মেয়ের নাম রাখেন জোবাইদা। দুই দিন না যেতেই ১৭ মার্চ সকালে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের পোস্ট অপারেটিভ কক্ষ থেকে জুনায়েদ চুরি হয়ে যায়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এক দিন পর জুনায়েদকে উদ্ধার করে।

১৯ মার্চ প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসিমা নামের এক নারী পাঁচ হাজার টাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে নবজাতকটি কিনেছিলেন। এ ঘটনা প্রমাণ করে, চোর বাজারের চাহিদার কথা ভেবে নবজাতকদের মধ্য থেকে ছেলে সন্তানটিকেই বেছে নিয়েছিলেন। দেখা যাচ্ছে, জোবাইদাদের চেয়ে জুনায়েদদের চুরি যাওয়ার ঝুঁকি বেশি। 

ক্রেতা কারা?

সাধারণত নিঃসন্তান দম্পতি বা ছেলেসন্তান নেই এমন পরিবার চোরদের মাধ্যমে শিশু কেনে। নবজাতক চুরি করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনাও ঘটে। সংসার বাঁচাতে সম্পত্তির পূর্ণ দখল নিশ্চিত করতে হিন্দু-মুসলিম দুই ধর্মে ছেলেসন্তানের বিকল্প নেই। তাতেই তাদের বাজারদর চড়া। হিন্দু সমাজে দত্তকব্যবস্থার অস্তিত্ব আছে। তবে এরশাদ ক্ষমতা দখলের পর আইন সংশোধন করে মুসলিম সমাজ থেকে দত্তকপ্রথা হাপিস করে দেন। ফলে চোরা বাজারে ছেলেশিশুর দাম যেমন বাড়ে, তেমনি শিশুদের চুরি হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি ও বিপদ—দুটিই শতগুণ বেড়ে যায়।

মেয়ের সংসার বাঁচাতে, কখনো নিজের সংসার টেকাতেও নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন কেউ কেউ। গত বছরের জানুয়ারিতে দিনাজপুর সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে যাওয়া শিশুটিকে এমন এক ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়, যিনি দাবি করেন, তিনি নিতান্তই তাঁর সংসার বাঁচাতে শিশুটি কিনেছিলেন।

যেমনটা গণমাধ্যমের আরেকটি খবরে দেখা যায়। চিরিরবন্দর উপজেলার কারেন্টহাট এলাকার আবদুল লতিফের স্ত্রী জায়েদা বেগম ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি সকালে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁর একটি সন্তানের জন্ম হয়। দুপুরের দিকে সঙ্গে থাকা স্বজনেরা হাসপাতাল থেকে চলে গেলে বোরকা পরা এক নারীর সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। বেলা তিনটার দিকে ওই নারীর কাছে নবজাতককে রেখে তিনি টয়লেটে যান। ফিরে এসে সন্তান বা ওই নারীকে কোথাও পাননি।

পুলিশ পরদিন ৫ জানুয়ারি চুরি হওয়া শিশুটিকে দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউনিয়নের জয়দেবপুরের বালাপাড়া থেকে উদ্ধার করে। এ সময় এক নারীকেও আটক করা হয়। তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেন, প্রথম স্বামীর সংসার ভেঙে যাওয়ার পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সন্তান না হওয়ায় সংসার ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে তিনি এ কাজ করেন।

১৫ মে ঢাকায় এক গৃহিণীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নওগাঁর চুরি যাওয়া শিশুটিকে। এ সময় আটক গৃহিণী পুলিশের কাছে ঠিক একই বয়ান দেন। তিনি বলেন, ‘আমার পেটের সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই শিশুকে এনে মিথ্যা বলে লালনপালন করেছি। অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’

আরেকটি ঘটনা। স্বামী চাইছিলেন ছেলেশিশু। তাই অন্যের নবজাতককে নিজের ছেলে দেখিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন কথিত শিশু ক্রেতা নারী। তবে ছেলেসন্তানের মুখ দেখতে আগ্রহী স্বামী সব ঘটনা জানাজানির পর স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ‘ঝামেলামুক্ত’ হয়েছেন। সাত মাস লালনপালনের পর শিশুকে প্রকৃত মায়ের কাছে তুলে দেওয়ার সময় ওই নারী কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘যেখানে থাকিস, ভালো থাকিস।’

মা-বাবাও বিক্রি করেন সন্তান

অনেক সময় অভাব এবং সন্তান লালনপালনের মতো আর্থিক সংগতির অনিশ্চয়তার কারণে স্বয়ং মা-বাবাও নবজাতককে অন্যের হাতে তুলে দেন। গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে বিউটি আক্তারের গর্ভে এক ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। স্বামী আদর আলী খবর দিয়ে আনোয়ার নামে একজনকে হাসপাতালে আনেন। তাঁর কাছে এক লাখ টাকায় সন্তান বিক্রির কথাবার্তা পাকাপাকি করেন।

পরে ওয়ার্ডের ভেতর নবজাতকের মা বিউটির কাছ থেকেও একটি কাগজে স্বাক্ষর আনতে যান। তখন নানি ইয়ারুন বেগম বিষয়টি জানতে পেরে আদর আলীকে বাধা দেন। এতে ওয়ার্ডের ভেতর হট্টগোল শুরু হয়। পরে অভিযোগ অস্বীকার করে আদর আলী বলেন, সংসারে অভাব এবং আরও তিন সন্তান থাকায় তিনি নবজাতকটি এক আত্মীয়কে দত্তক দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছিলেন। আনোয়ার আগে থেকেই সন্তানটি দত্তক চাইছিলেন। তাই তিনি হাসপাতালে এসে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। কোনো লেনদেন হয়নি।

পরে ঝামেলা এড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বামী আদর আলীকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তবে ক্রেতা আনোয়ার ভিড়ে হারিয়ে যান। আনোয়াররা ভিড়ের মধ্যেই গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। ঢাকা মেডিকেলের আশপাশে সেই পাকিস্তান আমল থেকে এমন অনেক আনোয়ার আছে।

ধরা পড়লে বয়ানে কাকতালীয় মিল

‘নবজাতক চুরি করে পালানোর সময় নারী আটক’—গণমাধ্যমে এমন শিরোনাম প্রায়ই দেখা যায়। এটা লিখে গুগলে চাপ দিলে একসঙ্গে বেরিয়ে আসবে অনেক নতুন-পুরোনো খবর। ঘটনার বর্ণনাগুলোও একই রকম, এ যেন ‘প্রেসনোট’। হিন্দি সিনেমার ‘ক্রসফায়ার’-এর বর্ণনা যেমন একটির সঙ্গে অন্যটি হুবহু মিলে যায়, অনেকটা সে রকম।

যেমনটা ধরুন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (১৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩), লক্ষ্মীপুরের প্রাইভেট হাসপাতাল (৬ সেপ্টেম্বর ২০২১), ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল (২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২), খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (২৪ জানুয়ারি, ২০২৩), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল (১৩ জানুয়ারি, ২০২৩)। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নবজাতক চুরির সব কাহিনি একই রকম, ‘হঠাৎ এক বোরকা পরিহিত নারী এসে সখ্য গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে কৌশলে নবজাতকটিকে কোলে করে পালানোর সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের সন্দেহ হলে তাঁরা বাধা দেন। পরে কর্তব্যরত পুলিশ/আনসার সদস্যদের হাতে তাঁকে সোপর্দ করা হয়।’

আচ্ছা, শিশু চুরি কি কোনো এক জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়? কোথাও ‘গডফাদাররা’ এক জায়গায় বসে এসব পরিচালনা করছে? ধরা পড়লে তাই একই ছাপা কথা প্রেসে পাঠানো হয়। সাবেক এক সাংবাদিক বন্ধু (এখন ভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত) বললেন, নবজাতক চোরেরা প্রসূতিদের চোখে চোখে রাখে। তারা যাচাই করে—কার কখন প্রসব হবে, কোনটা জটিল কেস, কোনটা সিজারিয়ান কিন্তু পয়সা নেই,  প্রসূতির দেখাশোনায় কারা কারা আছে, তাদের বয়স কেমন, প্রসূতি কী ধরনের পরিবার থেকে এসেছে, সদ্যোজাত শিশুটির স্বাস্থ্য কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি।

ওই বন্ধু বললেন, এই চোরদের দলে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের লোক থাকে। কেউ প্রসূতির ওপর চোখ রাখে, কেউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওপর চোখ রাখে, কেউ তথ্য দেয়, কেউ নবজাতককে চুরি করে, কেউ নবজাতককে হাসপাতালের বাইরে পাচার করে দেয়, আর কেউ ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেয়। প্রত্যেকের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া থাকে। বড় বড় সরকারি হাসপাতালে অনেক মানুষের আনাগোনা থাকে। সেখানে জবাবদিহি ততটা শক্ত নয়, নিরাপত্তাব্যবস্থাও বেশ দুর্বল। এই সুযোগটাই কাজে লাগায় নবজাতক চোরেরা।

সবাই ধরা পড়ে না

যেসব ঘটনা জানাজানি হয়, মামলা হয় বা গণমাধ্যমে আসে, আমরা শুধু সেগুলো জানতে পারি। মৃত সন্তান হয়েছে বলে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কথায় বিশ্বাস করে অনেক মা-বাবা হাসপাতাল-ক্লিনিক ছেড়ে চলে যান। তাঁরা ঘুণাক্ষরেও জানেন না, তাঁদের মিথ্যা বলা হয়েছে। তাঁদের সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

এ ধরনের ঘটনা নিয়ে নিজের গরজে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে একজন সাবেক র‍্যাব কর্মকর্তা জেনেছিলেন, দরিদ্র দম্পতিকে ক্লিনিকে এনে বাচ্চা প্রসবের পর অপরাধী চক্রের কোনো একজন সদস্য তাঁদের জানায়, তাঁদের বাচ্চা মৃত হয়েছে। পরে তারা সেই সুন্দর, স্বাস্থ্যবান বাচ্চাটিকে নিঃসন্তান মা-বাবার কাছে বিক্রি করে দেয়। কত নবজাতক হারায় আর কত উদ্ধার হয়, সেই তথ্য কোথাও নেই। একটি বিদেশি টেলিভিশন ২০১৪ সালে এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে গিয়ে দেখে, সেই বছর শুধু ঢাকাতেই ১৬ নবজাতক চুরি হয়েছিল। এদের মধ্যে উদ্ধার হয়েছিল মাত্র ৫ শিশু।

নবজাতক রক্ষার উপায় কী

বাজার অর্থনীতি চাহিদা পূরণে উন্মুখ থাকে; মুক্তবাজার অর্থনীতি এ ক্ষেত্রে আরও মারমুখী হয়। তাই আমাদের নবজাতকের চাহিদা কমানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে। যে দেশে সম্পত্তিতে মেয়েদের ন্যায্য অধিকার নেই, সে দেশে ছেলেসন্তান ছলে-বলে-কৌশলে হাসিলের তৎপরতা চলবেই। শত শত সিসি ক্যামেরা লাগিয়েও চুরি ঠেকানো যাবে না।

আইনের খোলা দরজা দিয়ে দত্তকব্যবস্থা আবার চালু করলে এবং দত্তককে উত্তরাধিকারের স্বাভাবিক অধিকার দিলে অন্যের সন্তানকে চুরি করে নিজের সন্তান বলে চালিয়ে দেওয়ার তকলিফ কেউ নিতে চাইবে না। ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়াসহ অনেক মুসলিম দেশ তাদের অভিভাবকত্ব আইনের আওতায় উত্তরাধিকারের বিষয়টি ফয়সালা করেছে। আমাদেরও একটা পথ বের করতে হবে।

কাজটি যত দিন হবে না, তত দিন নবজাতক চুরি রোধে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে শিশু চুরি বেশি হয়ে থাকে বলে অনেক সরকারি হাসপাতালে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

যেমন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং ওয়ার্ড ইনচার্জ ও অন্য স্টাফদের জবাবদিহি বাড়িয়ে এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ধরনের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। হাসপাতাল বা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ যখন কাউকে পূর্ণকালীন বা খণ্ডকালীন—যেভাবেই চাকরি দিক না কেন, যথাযথভাবে খোঁজখবর নিয়ে দিতে হবে। যা-ই কিছু হোক, প্রসূতি ও তাঁর সঙ্গে থাকা মানুষদের সচেতন ও সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই।

গওহার নঈম ওয়ারা: লেখক ও গবেষক

  • nayeem5508@gmail.com