যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রিপাবলিকান পার্টির নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রিপাবলিকান পার্টির নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র কি ‘ভয়ংকর’ একটা নির্বাচনের পথে

২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের একজনকে ‘অতি বৃদ্ধ’, অপরজনকে ‘অতি ভয়ংকর’ বলা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রার্থীকে নিয়ে লিখেছেন শার্লট অল্টার

কদিন আগের কথা। সকালবেলা আমি ডেমোক্রেটিক পার্টিতে আমার সূত্রকে খুদে বার্তা পাঠালাম। বললাম, নির্বাচন নিয়ে একটু আলাপ করা দরকার। উত্তর এল, ‘এর চেয়ে মরণ ভালো।’

কথাটা তিনি ঠাট্টাচ্ছলেই বলেছিলেন অবশ্য। কিন্তু বাতাসে কান পাতলেই এখন এই হতাশা আর আশঙ্কার কথা শোনা যায়। হয়তো নেমন্তন্নে গেছেন কিংবা বাচ্চাকে খেলতে নিয়ে গেছেন কোথাও অথবা মুদিদোকানে, আলোচনার বিষয় সেই একই—‘আসলেই ভোট হচ্ছে? আমরা আবার একই কাজ করতে যাচ্ছি?’

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও সেই ম্যাচ। ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের একজনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ‘অতি বৃদ্ধ’ বলে ধরা হচ্ছে, অপরজনকে বলা হচ্ছে ‘অতি ভয়ংকর’। ভোট দিতে হবে—এই চিন্তায় দেশের মানুষ এখন বিবশ-অবশ, ভয়ে কাতর। তারা এই নির্বাচনকে ‘ভয়ংকর নির্বাচন’ বলে মন্তব্য করছেন।

ইয়াহু এই শরতে নির্বাচন নিয়ে জনমত যাচাই জরিপ করেছিল। নানা বয়স, জেন্ডার ও রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা এই জরিপে অংশ নেন। প্রতি ১০ জনে চারজন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিক বলেছেন, এই নির্বাচন হবে ‘ভয়ংকর’। এর বাইরে আরও যেসব উক্তি এসেছে, সেগুলো হলো ‘ক্লান্তিকর’, ‘হতাশাব্যঞ্জক’, ‘গতানুগতিক’। জরিপে অংশগ্রহণকারী ডেমোক্র্যাট সমর্থক, শ্বেতাঙ্গ নারীদের অর্ধেকই বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা ভেবে তাঁরা আতঙ্কিত বোধ করছেন। রিপাবলিকানরা অবশ্য ডেমোক্র্যাটদের মতো অত ভীত নন। কিন্তু তাঁরাও যে খুব ফুরফুরে মেজাজে আছেন, তা নয়। দুই দলেরই বড়সংখ্যক সমর্থকেরা প্রার্থী সম্বন্ধে তাঁদের অসন্তোষের কথা বলেছেন।

পুরো নির্বাচনী যাত্রাতেই এই অসন্তোষের রেশ থাকবে বলে মনে হয়। ফলে নির্বাচনে দুই প্রার্থীকে নিয়ে সংশয়ও কাটবে না। ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় ডেমোক্রেটিক দল যে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অংশ নিয়েছে, এবার সেই পরিবেশ নেই। এটা বেশ পরিষ্কার। দলের কর্মীরা ক্লান্ত। স্বেচ্ছাসেবীরা পা ঘষছেন। পাঠক-শ্রোতা-দর্শকেরা আর রাজনৈতিক খবরে আগ্রহ পান না। জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলে রাজনৈতিক খবরের চাহিদা পড়ে গেছে। ২০২৩ সালে মাঠপর্যায়ে তহবিল সংগ্রহের কাজেও ভাটা পড়েছে। ফলে ডেমোক্রেটিক সংগঠনগুলো বাজেট কাটছাঁট করেছে এবং কর্মী ছাঁটাই করেছে।

ডেমোক্র্যাটদের জন্য বেশ কিছু জরুরি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে এই পরিস্থিতি। ক্ষমতাসীনরা কি কখনো প্রার্থীর প্রতি উদ্দীপ্ত সমর্থকগোষ্ঠী ছাড়া নির্বাচনে জিতে আসতে পেরেছে? উদ্দীপনা আসলে কতটা জরুরি?

মুড (মেজাজ) বিষয়টা পরিমাপ করা অত সহজ নয়। আমি আট বছর ধরে ডেমোক্র্যাটদের কাভার করছি। নতুন ভোটার, নারী সংগঠকদের ক্ষমতা অথবা রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে অশ্বেতাঙ্গদের দলের প্রতি যাঁদের আগ্রহী করে তুলেছে, তাঁদের কাজকর্ম কাছ থেকে দেখেছি। কিন্তু আট মাস ধরে নির্বাচনকে ঘিরে লোকের মধ্যে সেই উৎসাহ আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি। প্রতিবারই যে সংগঠনগুলো সমবেত হয়ে একটা কিছু করবে বলে আশা করেছি, ততবারই আশাহত হয়েছি।

সমাজের যে অংশটি নির্বাচন নিয়ে উত্তেজিত হবে বলে ভেবেছি, সে অংশই যেন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে যে তারা উত্তেজিত হবে না। এর পরিবর্তে যেকোনো আলাপে একধরনের বিতৃষ্ণা চোখে পড়েছে। তারা কেবল বলেছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনটা হবে নির্মম। এখন আমি বুঝতে পারছি, আমার ধারাবাহিক মোহভঙ্গের কারণে এই নির্বাচন কাভার করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে, বিষয়টা অমনও নয়। আসলে সবারই মোহভঙ্গ ঘটেছে। আর এটাই এই নির্বাচনের থিম।

ডেমোক্র্যাটদের এই উদ্যমহীনতা একটা হতাশার জন্ম দিয়েছে। বিভিন্ন জরিপের তথ্য বলছে, ট্রাম্পের কাছে বাইডেন পরাজিত হবেন। ২০২০ সালে এমনটি হয়নি। ওই সময় ভোটারদের অংশগ্রহণের হার ছিল সবচেয়ে বেশি। তাই বলতে গেলে অল্পের জন্যই রক্ষা পেয়েছিলেন বাইডেন। এবার ট্রাম্প রাউন্ড টু-তে খেলতে নেমেছেন। অনুজ্জ্বল জোট, ভোটের ফ্যাকাশে ফল এবং সমর্থকদের মধ্যে গেঁড়ে বসা ধারণা যে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে বাইডেন অনুপযুক্ত—এসব কিছু নিয়ে বাইডেন এই ম্যাচ এসেছেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।

নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনার জরিপে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প নির্বাচনী দৌড়ে অন্তত পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মাত্র ২৩ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা বাইডেনের ব্যাপারে উৎসাহী। রিপাবলিকানদের মধ্যে এই হার ৫০ শতাংশ।

‘রান ফর সামথিং’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা আমান্ডা লিটম্যান বলেন, ডেমোক্র্যাটরা একটা সর্বনাশা চক্রে আটকা পড়েছে। তিনি বলছিলেন, ‘আমি গেল বছরের পুরোটাই গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করেছি। আর সবচেয়ে বেশি যে কথাটা শুনেছি, তা হলো, আমি ক্লান্ত। আমার আর আগ্রহ নেই।’ আমান্ডার প্রতিষ্ঠানটি মিলেনিয়াল ও জেন-জি ডেমোক্র্যাটদের দলে অন্তর্ভুক্ত করে ও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সমর্থন দিয়ে থাকে।

লরি গোল্ডম্যান ট্রাম্পকে হারাতে আট বছর ধরে কাজ করছেন। ‘ফেমস অ্যান্ড ডেমস’ এর প্রতিষ্ঠাতা গোল্ডম্যান মিশিগানে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে সদস্য সংগ্রহ, প্রার্থীদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া, তহবিল সংগ্রহের কাজ করছেন। তিনি যখন এই কাজে সক্রিয় হন, তখন তাঁর তিন সন্তানের বয়স ৮। গোল্ডম্যান জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যয় করেছেন, ‘সপ্তাহে সাত দিন। এমনকি সন্তানেরা তাদের প্রয়োজনে আমাকে পায়নি।’

গোল্ডম্যান এখন নিজেকে নিজে প্রশ্ন করছেন, ‘এত কিছু কেন করেছি? সপ্তাহান্তে এই যে এত এত মানুষকে ফোন করে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা, স্কুলের পরে তহবিল সংগ্রহ, বৃষ্টি আর বরফ উপেক্ষা করে প্রচার চালানো, সন্তানদের বঞ্চিত করা—কী লাভ হলো?’ কারণ, ট্রাম্প অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে ফিরে এসেছেন, দ্বিতীয় দফায় আরও আগ্রাসী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমি আমার আত্মত্যাগের কথা ভাবি এখন, অন্যদের কথাও ভাবি। ওরাও তো আমারই মতো। এই কি তার ফল? না, বিনিময়ের ফলটা ভালো হলো না।’

গোল্ডম্যান আরও বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি নামক একটা নিষ্ক্রিয় প্রতিষ্ঠানে আটকা পড়েছি। এ পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সুযোগ নেই।’ তাঁর এখন নিজেকে মানসিকভাবে হয়রানির শিকার নারী বলে মনে হয়। এই একই অবস্থা অন্যদেরও। গোল্ডম্যান বলেন, ‘২০১৬ সালে ট্রাম্প নির্বাচনে জয় লাভের পর মানুষ আমাকে রাস্তায় থামিয়ে জিজ্ঞেস করত, ফেমস ফর ডেমসে আমি কীভাবে যোগ দিতে পারি? এখন আর নতুন কেউ আসছে না। স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে।’

স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ বড়সংখ্যক মানুষ রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তথাকথিত প্রতিরোধ যুগের শুরুতে প্রগতিবাদী মানুষের মধ্যে রাজনীতিতে জড়ানোর আকাঙ্ক্ষা ছিল তীব্র। কিছু ডেমোক্র্যাট সমর্থক এই নির্বাচন থেকে পুরোপুরি সরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

তৃণমূলে ট্রাম্পবিরোধী জাতীয় নেটওয়ার্ক ইনডিভাইসিবলের সহপ্রতিষ্ঠাতা লি গ্রিনবার্গ বলেন, ২০২৩ সালের পর বেশির ভাগ সময় রাজনীতি ছিল রহস্যাবৃত। নানা রকম ইঙ্গিত নানা প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। যেমন খবরের ডিজিটাল মাধ্যমের গ্রাহক কমে গেছে। রিপাবলিকান দলের ক্ষেত্রে আইওয়ার প্রাইমারি ছিল সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। অথচ সেই প্রাইমারিও টেলিভিশনে খুব বেশিসংখ্যক মানুষ দেখেনি। ২০১৬ সালের তুলনায় এই সংখ্যা ১৭ শতাংশ কমেছে বলে জানাচ্ছে সেমাফর।

এদিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে যাঁরা টাকাপয়সা দিতেন, তাঁরা এখন আর টাকা খরচ করতে চাইছেন না। রান ফর সামথিং ২০২৩ সালে যে চাঁদা তুলেছে, তা তাদের প্রত্যাশার অর্ধেক। ফলে প্রতিষ্ঠানটি কর্মী ছাঁটাইয়ে বাধ্য হয়। এমিলিজ লিস্টও একই কাজ করেছে। ওয়ার্কিং ফ্যামিলি পার্টির জাতীয় পরিচালক মরিস মিচেল বলেছেন, আগের সেই উদ্দীপনা আর নেই।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বাইডেনের নড়বড়ে জোটকে আরও দুর্বল করেছে। অপেক্ষাকৃত তরুণ ও প্রগতিশীল ভোটারদের মনে বাইডেনকে নিয়ে সন্দেহ আছে। ২০২০ সালে এই ভোটাররাই ট্রাম্পকে পরাজিত করতেই ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন। এখন এই ভোটারদের পরিষ্কার অবস্থান হলো তাঁরা আর ট্রাম্পের ব্যাপারে আগ্রহী নন। তিনি যদি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ না করেন, তাহলে তাঁদের ভোট পাবেন না।

জর্জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক এনসেও উফট ২০২০ সালে বাইডেনকে এবং ২০২১ সালে দুজন সিনেটরকে তাঁর রাজ্য থেকে জিতিয়ে আনতে সাহায্য করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘জর্জিয়ায় সর্বস্তরে আলোচনার কেন্দ্রে গাজা। সবাইকে একসুরে কথা বলতে হবে—ডেমোক্র্যাটদের ধারা এমন নয়। রিপাবলিকানরা হয়তো এভাবে চলতে পারে।

যে ডেমোক্র্যাটরা বাইডেনের কট্টর সমর্থক, এই যুদ্ধের পর সেই সমর্থকদেরও বাইডেনের ব্যাপারে উৎসাহে ভাটা পড়েছে। লিটম্যান বলেন, ‘অনলাইনে জো বাইডেনের ব্যাপারে ইতিবাচক কিছু বলার সুযোগ সামান্যই। এই পরিস্থিতি আমাকে ২০১৬ সালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। ওই সময় অনলাইনে হিলারি ক্লিনটনকে নিয়ে যা-ই বলা হতো, সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণ শুরু হয়ে যেত। জো বাইডেনের অবস্থাও এখন একই।’

কেবল আশাই এই ভয় থেকে ভোটারদের রক্ষা করতে পারে। ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রাইমারিতে ঝড় তুললেও কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনগুলোয় ট্রাম্পকে সবাই এগিয়ে রাখলেও হতাশ ডেমোক্র্যাটদের এখন আশা করার সুযোগ আছে।

অনেকে বলতে চান, ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এলে কী ঘটতে পারে, সেটি যত স্পষ্ট হবে, ডেমোক্র্যাটরা ততই উদ্দীপ্ত হয়ে উঠবে। রাজনৈতিক দলের প্রচারকর্মীরা মনে করছেন, এখন বাইডেন-ট্রাম্পের এই দ্বৈরথ নিয়ে অনেকেই কোনো প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন না। গ্রীষ্মকালীন সমাবেশগুলোর আগে তাঁরা জেগে উঠবেন।

সে সময় বাইডেনের সমর্থকদের মধ্যে নারাজি ভাবটাও কেটে যাবে, কেবল ট্রাম্পকে আটকে দেওয়াই হবে তাঁদের উদ্দেশ্য। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে সাবেক প্রেসিডেন্ট এককভাবে সবচেয়ে সক্রিয় সংগঠক। তিনিই ‘নীল’ ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে পারবেন। ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের আমলের সব নির্বাচনে জিতেছে। এমনকি যেসব নির্বাচনে ভোটারসংখ্যা কম ছিল, অথবা ‘লাল’ (রিপাবলিকান)-অধ্যুষিত এলাকায় গর্ভপাতবিষয়ক ভোটে ডেমোক্র্যাটরা জিতেছেন।

নভেম্বরে ডেমোক্র্যাটরা আরেকটা সুযোগ পেতে পারেন। তহবিল সংগ্রহে বাইডেন এগিয়ে আছেন। রিপাবলিকানদের কোর্টকাচারির ঝামেলা এখনো শেষ হয়নি। যদিও প্রাইমারিতে ট্রাম্প জিতে গেছেন, রিপাবলিকান দলের অনেকেই ট্রাম্পের মতো গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ভোট দিতে চাইছেন না। গর্ভপাত অনেক ভোটারদের জন্যই একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সংগঠকদের অনেকেই মনে করছেন, বাইডেনের চরম বিরোধী গোষ্ঠীও শেষমেশ বেরিয়ে এসে তাঁকেই ভোট দেবেন।

ইউফট বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাররা কখনই বাইডেনের ব্যাপারে অতি আগ্রহী ছিলেন না। ভাষ্যটা হলো বাইডেন জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন, যা কিছু ঘটছে সবই ভয়াবহ। কিন্তু ভোটের ক্ষেত্রে মানুষের আচরণ হয় ভিন্ন।’ বাইডেন কখনোই উদ্বেলিত হওয়ার মতো প্রার্থী ছিলেন না। জনগণকে উজ্জীবিত করতেও তাঁর তেমন কোনো ভূমিকা নেই। তাঁর কাজ ছিল ট্রাম্পকে হারানো এবং দীর্ঘ মেয়াদে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখা।

ওয়ার্কিং ফ্যামিলিস পার্টির মিশেল বলেন, ‘ওবামা ছিলেন আন্দোলনের প্রতীক, জো বাইডেন তা নন। জো বাইডেনকে নিয়ে সেই উন্মাদনা কখনই ছিল না। তাই নির্বাচনের ফলাফল ও গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝাতে হবে ভোটারদের।

অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় নির্বাচনের গুরুত্ব এখন বেশি। গ্রিনবার্গ বলেন, তৃণমূলের সংগঠনগুলো গত তিন বছর সব কটি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জিতিয়ে এনেছে। সংগঠনের কর্মীরা আগের চেয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ। লরি গোল্ডম্যান যেমনটি বলছিলেন, ‘আমরা ক্লান্ত। তবে এত ক্লান্ত না যে ট্রাম্পকে জিততে দেব।’

টাইম ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া।

  • শার্লট অল্টার টাইম ম্যাগাজিনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। তিনি রাজনীতি, সামাজিক আন্দোলন বিষয়ে লেখেন। এ ছাড়া টাইমের পারসন অব দ্য উইকের সঞ্চালক।

  • অনুবাদ: শেখ সাবিহা আলম